ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলা দরকার প্রধান উপদেষ্টার
Published: 7th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে নতুন করে বাড়তি শুল্কের বিষয়টি নিয়ে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ বিব্রত এবং চিন্তিত। এ কারণে প্রাথমিকভাবে রপ্তানিতে এক ধরনের ধাক্কা আসতে পারে। তবে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে সরকার সঠিক পথেই হাঁটছে। ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠানোই যথেষ্ট নয়। এর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা ড.
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) পক্ষ থেকে এসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। রাজধানীর বনানীর হোটেল টিউলিপ গার্ডেনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গত বুধবার ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত ‘রিসিপ্রোকাল’ বা ‘পাল্টা’ শুল্ক আরোপের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে আইসিসিবির পর্যালোচনা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির সভাপতি এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সাবেক সভাপতি আবদুল হাই সরকার, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ঢাকার সভাপতি কামরান টি রহমান, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি নাসের এজাজ বিজয়, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সিমিন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইসিসিবির পক্ষ থেকে আরও বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে জাতীয়ভাবে করণীয় নির্ধারণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর কষাকষির বিষয়টি যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে একটি টাস্কফোর্স গঠন। সংগঠনটির প্রস্তাবনায় বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, আমদানি-রপ্তানিকারকদের নিয়ে এ টাস্কফোর্স গঠন হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি পণ্যের শুল্ক বাবদ প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে সরকার। এসব পণ্যে শুল্ক হার কমানোর ঘোষণা দেওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্য হিসেবে ঢালাও শুল্ক ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। সে জন্য দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার ভিত্তিতে শুল্ক হার নির্ধারণ করা দরকার। এ ছাড়া শুল্ক আরোপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য দেশের সঙ্গে যৌথভাবে কোনো উদ্যোগে যেতে পারে।
আইসিসিবির সভাপতি বলেন, ১৯৩০ সালের পর থেকে এ ধরনের পাল্টা শুল্ক আরোপের নজির নেই। ট্রাম্প প্রশাসন ডব্লিউটিওর আইনবিধি লঙ্ঘন করে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে এ শুল্ক আরোপ করেছে। এটি তারা করতে পারে না। এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ব্যবস্থায় অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। আমেরিকা বিশ্ব অর্থনৈতিক মোড়ল হওয়ায় অনেক দেশ ট্যারিফ প্ল্যানের হাত থেকে বাঁচতে উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শূন্য শুল্কের ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশকেও বর্ধিত এই শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় চিঠি চালাচালির পরিবর্তে দৃশ্যমান কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে।
ফজলুল হক বলেন, যেসব পণ্য রপ্তানির উদ্দেশ্যে বন্দরে পড়ে আছে বা জাহাজে আছে, সেগুলোতে বর্ধিত শুল্ক হার কার্যকর হবে না। তবে দেশের কারখানাগুলোতে আগামী ৩-৪ মাসের জন্য যেসব রপ্তানি আদেশের কাজ চলছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
আবদুল হাই সরকার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর যে কোনো দেশ থেকে বাংলাদেশে তুলা আমদানিতে শুল্ক নেই। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি বাড়ানো যায়। ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় কমিয়ে আনার মাধ্যমে বাড়তি ব্যয় সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।
নাসের এজাজ বিজয় বলেন, পাল্টা শুল্ক আরোপ দুই ধাপে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে। প্রথম ধাপে রপ্তানিকারকদের মুনাফা কমতে পারে। প্রথমত, বিদেশি ক্রেতারা একা বর্ধিত শুল্কের ভার বহন করবে না। দ্বিতীয়ত, শুল্ক আরোপের কারণে আমেরিকার বাজারে পণ্যের চাহিদা কমে যেতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাজার সুবিধাজনক মনে না হলে অন্যান্য রপ্তানিকারক দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প আইস স ব র আমদ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও
দুপুরবেলা বিদ্যালয়ে উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এরপর শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপে মেতে ওঠেন তিনি। শিক্ষার্থীদের শিক্ষামূলক নানা প্রশ্নোত্তরে জমে ওঠে সেই আলাপ। গতকাল রোববার কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলার দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় দেখা যায় এমন চিত্র।
গতকাল দুপুরে প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যান টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন। তাঁর সঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হাবীবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁদের অভ্যর্থনা জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজেশ কান্তি কানু, সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ জুনায়েদ, সৈয়দ নুর, আমানুল্লাহ, রবিউল আলম প্রমুখ।
পরিদর্শনকালে বিদ্যালয়ের মাঠ, বিদ্যমান ভবন, নির্মাণাধীন একটি ভবন ঘুরে দেখেন শেখ এহসান উদ্দিন। এ সময় শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার সরঞ্জাম এবং বিদ্যালয়ের জন্য অনুদানের আশ্বাস দেন তিনি।
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নে নাফ নদীর তীর–সংলগ্ন দমদমিয়ার গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য ২০২০ সাল থেকে আলোর পাঠশালাটি পরিচালনা করে আসছে প্রথম আলো ট্রাস্ট। বিদ্যালয়টিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৫০ জনের মতো।
বিদ্যালয়টি পরিদর্শনের সময় ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে দমদমিয়া আলোর পাঠশালা। প্রথম আলো ট্রাস্টের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।