Samakal:
2025-04-28@08:32:48 GMT

৮৮২ কোটি টাকার সড়ক মৃত্যুফাঁদ

Published: 7th, April 2025 GMT

৮৮২ কোটি টাকার সড়ক মৃত্যুফাঁদ

বছর চারেক আগে ৮৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৬ কিলোমিটার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। দুই বছর না যেতেই বিভিন্ন স্থানে উঁচু-নিচু ঢেউ, গর্ত ও খানাখন্দ তৈরি হয়। দিনাজপুর জেলা সদর থেকে ফুলবাড়ী, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট হয়ে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের প্রায় ৬৬ কিলোমিটারে এই দশা। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে গাড়ি। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
সরেজমিন দেখা গেছে, ফুলবাড়ী ঢাকা মোড় থেকে দক্ষিণে আম্রবাটি মাদ্রাসা মোড়, লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে জয়নগর বাজার, চণ্ডিপুর বাজার থেকে দুর্গাপুর ঢিবি, বিরামপুর পৌর শহরের ঢাকা মোড়, মির্জাপুরের ব্র্যাক চিলিং সেন্টার থেকে ঘোড়াঘাট রেলঘুমটি পর্যন্ত কোথাও কোথাও সড়ক উঁচু-নিচু হয়ে আছে। পিচঢালাই উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে অনেক জায়গায়।
মহাসড়কটিতে নিয়মিত যাতায়াতকারী ব্যাংক কর্মকর্তা শামিম হোসেন ও ট্রাকচালক হৃদয় খান বলেন, সড়কের অনেক স্থান দেবে আলপথের মতো হয়ে গেছে। এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। নিচু স্থানে চাকা পড়লে নালা থেকে যানবাহন সাইড দেওয়া-নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
একই অবস্থা ফুলবাড়ী ঢাকা মোড় থেকে পশ্চিম দিকে রাঙামাটি হয়ে বারাইহাটের কিছু অংশ এবং আমবাড়ী যাওয়ার আগে দিনাজপুর পর্যন্ত। মহাসড়কের এসব স্থান দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী পরিবহন, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার পর মহাসড়কের এসব এলাকা দিয়ে চলাচল আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, যত্রতত্র উঁচু হয়ে থাকায় এসব অংশ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে মোটরসাইকেল উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে। 
কোতোয়ালিসহ ফুলবাড়ী, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট থানার সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে এই মহাসড়কে ১১৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৭ জন নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে ঘটনাস্থলে মারা গেছেন ৪৫ জন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু ফুলবাড়ীতে ২২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৪ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছে শতাধিক। এ ছাড়া গত জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছয়টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছে।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে গোবিন্দগঞ্জ থেকে দিনাজপুর ১০৬ কিলোমিটার ৪২ ফুট প্রশস্তকরণে ৮৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। রাস্তাটি ৯টি গুচ্ছের মাধ্যমে আট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে নির্মাণকাজ শুরু করে সংস্কারসহ প্রশস্তকরণ কাজ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ করে। প্রশস্ত ও সংস্কারের কাজ শেষ করার দুই বছরের মাথায় আবারও রাস্তাটি দেবে গিয়ে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলেছে, সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার পরবর্তী তিন বছর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জন্য ওই সড়কের সংস্কার করে দেওয়ার চুক্তি থাকে। এর মধ্যে মহাসড়কে যেখানে সমস্যা হয়েছিল, তারা সেসব জায়গা সংস্কার করেছেন। এখন চুক্তির সময় ২০২৪ সাল পার হয়েছে। তাই তাদের আর কাজ করার সুযোগ নেই। 
তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ বিদুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ২০১৭-১৮ সালে সেই সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী ও চেয়ারম্যানরা ঠিকাদারের কাছে কমিশন বাণিজ্য করেছেন। সড়কের শতকরা ৬০ ভাগ টাকা লুটপাট করে তাদের পকেট ভরেছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশ করে নিম্নমানের উপকরণ দ্বারা সংস্কার ও প্রশস্তকরণ করে বরাদ্দের অধিকাংশ 
টাকা লুটপাট করায় এখন রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 
এ বিষয়ে দিনাজপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

আসাদুজ্জামান বলেন, অনেক সময় ওভারলোড গাড়ি চলাচলের কারণে যেসব জায়গা উঁচু-নিচু হয়েছে, তা আমরা কেটে ফেলব। সড়কে ৮টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পৃথকভাবে কাজ করেছে। অনেকেরই চুক্তি শেষে হয়েছে এবং কিছু জায়গায় চুক্তির সময় আছে। সরেজমিন দেখে ঠিকাদারের মাধ্যমে সেই জায়গাগুলো সংস্কার করা হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন প রশস ত দ র ঘটন সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

সেফগার্ডিং নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন

উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে সেফগার্ডিং কার্যক্রমের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদানের লক্ষ্যে উন্নয়ন খাতের পেশাজীবী ও নীতিনির্ধারকদের নিয়ে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছিল ব্রিটিশ কাউন্সিল। সবার জন্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে উদ্যোগী দাতা সংস্থাগুলোর বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘ফান্ডার সেফগার্ডিং কোলাবোরেটিভের (এফএসসি)’ অংশীদারত্বে ব্রিটিশ কাউন্সিল অডিটরিয়ামে গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

গুরুত্বপূর্ণ এ আয়োজন নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেছেন, ‘আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে ক্রমেই সেফগার্ডিং–সংক্রান্ত প্রতিকূলতা ও ঝুঁকি বাড়ছে। তাই আমাদের প্রয়োজন, সেফগার্ডিং নিয়ে বোঝাপড়া ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি। সেই সঙ্গে জরুরি ও সম্মিলিতভাবে সেফগার্ডিং–সংক্রান্ত কার্যকরী পদক্ষেপ প্রতিষ্ঠা করা। সে লক্ষ্যেই ব্রিটিশ কাউন্সিল ফান্ডার সেফগার্ডিং কোলাবোরেটিভের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে, যেন সেফগার্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে কর্মরত অংশীদারদের একত্র করা যায়। আমি আশা করি, এই আয়োজন সেফগার্ডিং নিয়ে চলমান উদ্যোগকে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং আমরা এই আয়োজন ভবিষ্যতেও চলমান রাখতে সচেষ্ট থাকব।’

এই গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো, বহুপক্ষীয় সংস্থা, বেসরকারি খাত, দাতা সংস্থা, আয়োজক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার ২৫ প্রতিনিধি।

অনুষ্ঠানে ফান্ডার সেফগার্ডিং কোলাবোরেটিভের সিনিয়র রিজিওনাল অ্যাডভাইজর (দক্ষিণ এশিয়া) অনুরাধা মুখার্জি বলেন, ‘ফান্ডার সেফগার্ডিং কোলাবোরেটিভ এমন একটি পৃথিবী নির্মাণে বদ্ধপরিকর, যেখানে প্রতিটি সংগঠনের কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে নিরাপত্তা ও কল্যাণ। নিরাপদ সাংগঠনিক পরিবেশ ও তা টিকিয়ে রাখতে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে আমরা বিভিন্ন দাতাদের সঙ্গে কাজ করে থাকি। বাংলাদেশের উন্নয়ন ক্ষেত্রে সেফগার্ডিংয়ের চলমান ধারা ও ভবিষ্যতের কর্মপন্থা বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে এই যৌথ আয়োজন করতে পেরে আমরা খুব আনন্দিত।’

সবার জন্য সুরক্ষিত ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে ব্রিটিশ কাউন্সিল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেন শিশু কিংবা প্রাপ্তবয়স্ক কেউই তাঁদের বয়স, শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা, আর্থসামাজিক পটভূমি, জাতিগত পরিচয়, লিঙ্গ, ধর্ম বা বিশ্বাসের কারণে কোনো ঝুঁকি কিংবা হয়রানির শিকার না হন। মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে সচেষ্ট ব্রিটিশ কাউন্সিল সেফগার্ডিং–সম্পর্কিত চর্চা নিশ্চিতকরণে অঙ্গীকারবদ্ধ, যেন ঝুঁকিতে থাকা শিশু ও প্রাপ্তবয়স্করা নিরাপদ বোধ করার পাশাপাশি ব্রিটিশ কাউন্সিলের সংস্কৃতিবিষয়ক কার্যক্রমের মাধ্যমে উপকৃত হন।

সেফগার্ডিং সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে ভিজিট করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেফগার্ডিং নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন