রাজধানীতে পাহাড়িদের ‘বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, চাংক্রান, বিষু’ মেলা শুরু ৯ এপ্রিল থেকে
Published: 7th, April 2025 GMT
চৈত্র মাস শেষের পথে। দেশের পার্বত্য এলাকায় চলছে বর্ষবিদায় ও বরণের উৎসবের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে এই উৎসবকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা আয়োজন। এবার পাহাড়িদের এই উৎসব উপলক্ষে রাজধানীতে ‘বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, চাংক্রান, বিষু’ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ উৎসব শুরু হবে আগামী বুধবার (৯ এপ্রিল), চলবে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত। রাজধানীর মিরপুর ১৩–এর শাক্যমুনি বৌদ্ধবিহারে তিন দিনের এ মেলা চলবে।
বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দুই দিন এবং বৈশাখের প্রথম দিন পাহাড়ে শুরু হয় বর্ষবিদায় ও বরণের বর্ণিল আয়োজন। একেক জাতিগোষ্ঠী একেক নামে এ উৎসবকে অভিহিত করে। এবার উৎসব শুরু হবে ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল। সেই উৎসব উপলক্ষেই রাজধানীতে মেলার এ আয়োজন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ১১টি পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। এর মধ্যে বর্ষবিদায় ও বরণের এ উৎসবকে চাকমাদের বিজু বা বিঝু, মারমারা সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরারা বৈসু বলেন। জনসংখ্যার বিচারে পাহাড়ের এই তিন জাতিগোষ্ঠী প্রধান। তিন জাতিগোষ্ঠী ছাড়াও অন্য জাতিগোষ্ঠীদেরও এ উৎসবের আছে ভিন্ন নামে। এই তিন জাতিগোষ্ঠী ছাড়াও তঞ্চঙ্গ্যাদের কাছে এ উৎসব বিষু এবং ম্রো এবং চাকরা একে চাংক্রান উৎসব বলেন।
পাহাড়ের উৎসব ঘিরে মেলার আয়োজন এবারই প্রথম বলে জানান উদ্যোক্তাদের একজন বিপলী চাকমা। তিনি বলছিলেন, ‘পাহাড়ের মানুষের উৎসব নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ আছে। পাহাড়িদের বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, পোশাক, নানা ধরনের খাদ্য, ব্যবহার্য দ্রব্য, তৈজস ইত্যাদি নানা জিনিসের কদর আছে। এবারের মেলায় সেসবই তুলে ধরা হবে। পাহাড়ের মানুষের প্রাণের উৎসবের আগে এ এক নতুন উৎসব নগরবাসীর জন্য। যেখানে পাহাড়ি এবং বাঙালি সবাই অংশ নিতে পারবেন।’
প্রতিদিন মেলা শুরু হবে সকাল ১০টায়, চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। এর আয়োজন করছে ঢাকাস্থ পার্বত্য উদ্যোক্তা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড। আর সহযোগিতায় আছে জুবতা ও সিএইচটি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।
৯ এপ্রিল সকালে মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। মেলার উদ্বোধন করবেন শাক্যমুনি বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞানন্দ মহাথের।
দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
আর মেলার শেষ দিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে পাহাড়ি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। মেলার স্টলগুলোতে পাহাড়িদের পোশাক, খাদ্য, সবজি, তৈজসপত্র বিক্রি হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরীতে অষ্টমী স্নানোৎসব
মুন্সীগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নানোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) ভোর ৫টা থেকে বিকেল পর্যন্ত সদর উপজেলার হাট লক্ষীগঞ্জ সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর তীরে এ উৎসব চলে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তিথি অনুযায়ী পাপমোচন ও পুণ্যলাভের আশায় প্রতিবছর এ উৎসব পালন করেন।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাত ২টা থেকে শুরু হয়ে শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত ১২টা ৫১ মিনিট পর্যন্ত দুই দিনব্যাপী এই উৎসব চলবে।
আরো পড়ুন:
কর্মস্থলে ফিরছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ
মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ভিড়
শনিবার ভোর থেকে স্নানোৎসবে অংশ নিতে ধলেশ্বরীর তীরে উপস্থিত হন হাজারও পুণ্যার্থী। হিন্দু ধর্মের তিথি অনুসারে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে বিভিন্ন বয়সী হিন্দু নারী-পুরুষ স্নান করতে যান। স্নানের পর পুরুহিতের কাছে মন্ত্রপাঠ করে নদীতে ফুল ও ফল ভাসিয়ে দিতে দেখা যায় পুণ্যার্থীদের।
জেলা হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট অজয় কুমার চক্রবর্তী বলেন, “প্রতিবছর চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে লাঙ্গলবন্ধ ব্রহ্মপুত্র নদে পুণ্যস্নানার্থে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আগমন ঘটে। ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের। এ স্নানে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভ করে পাপমোচন হয়। নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ সবচেয়ে বড় মহাষ্টমী স্নানোৎসব পালিত হয়। বহু বছর ধরে মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীর তীরে একইভাবে এই স্নানোৎসব পালন করা হয়।”
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম. সাইফুল আলম বলেন, “ধলেশ্বরী নদীর তীরে শান্তিপূর্ণভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নানোৎসব পালিত হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখায় ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উৎসব মুখর পরিবেশেই স্নানোৎসবটি পালন করেছেন হিন্দুরা।”
ঢাকা/রতন/মাসুদ