বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন সংক্রান্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশের সংশ্লিষ্ট ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। রিটে ‘বিয়ের প্রলোভনের মাধ্যমে যৌন করিবার দণ্ড’ সম্পর্কিত ওই ধারা কেন বাতিল ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, সংশোধিত এই ধারাটি সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। 

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.

রাশিদুল হাসান এবং মানবাধিকার সংগঠন ‘এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন’ পক্ষে হাইকোর্টে এ রিটটি দায়ের করা হয়। পরে রিটকারীদের আইনজীবী ইশরাত হাসান সাংবাদিকদের বলেন, বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালেদী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সপ্তাহে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে। কার্যতালিকা অনুসারে শিগগিরই এ রিটের শুনানি হতে পারে। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব এবং নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

গত মাসে মাগুরায় আট বছরের এক শিশু ধর্ষণের পর হাসপাতালে মারা যায়। এর প্রতিবাদে সরব হন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মানবাধিকার কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। তখন ধর্ষণসহ নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় করা মামলার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তিরও দাবি ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে ২০ মার্চ উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এতে বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে পরে প্রতারণা করলে সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ২৫ মার্চ আইনের সংশোধনী অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(২) ধারায় সংশোধন এনে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি দৈহিক বলপ্রয়োগ ব্যতীত বিবাহের প্রলোভন দেখাইয়া ষোল বৎসরের অধিক বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে যৌনকর্ম করেন এবং যদি উক্ত ঘটনার সময় উক্ত ব্যক্তির সহিত উক্ত নারীর আস্থাভাজন সম্পর্ক থাকে তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক সাত বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।’ এরই ধারাবাহিকতায় আজ আইনের ওই ধারা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়েছে। 

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের সম্মতিতে সংঘটিত শারীরিক সম্পর্ক যদি শুধুমাত্র ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি’ না রাখার কারণে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়, তবে তা ব্যক্তি স্বাধীনতা ও নারীর সম্মতির অধিকার লঙ্ঘন করে। 

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, প্রতিশ্রুতি না রাখার কারণে শুধু পুরুষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দেওয়া সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ধরনের অভিযোগে নারীকে নির্বোধ বা লোভী হিসেবে চিত্রায়ন করা হয়, যা নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ও সম্মানের পরিপন্থি। এটি নাগরিক অধিকার ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি আইন। তাই এই আইন বাতিল করার জন্য রিট দায়ের করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ য় র কর আইন র

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামীপন্থী ৬১ আইনজীবী কারাগারে, ১৯ জনের জামিন

হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় আওয়ামীপন্থী ৬৪ আইনজীবীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। তাদের মধ্যে ৩ জন জামিন নামঞ্জুরের আদেশ শুনে পালিয়ে যান। পরে ৬১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়। ১৯ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

জামিন নামঞ্জুর হওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন-ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান মানিক, গাজী শাহ আলম, মাহবুবুর রহমান, আসাদুর রহমান খান রচি, ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম।

আরো পড়ুন:

নাটোরে ৩ পরিবহনকে জরিমানা

ডাবল মার্ডারে গ্রেপ্তার, তাহসিন হত্যাকাণ্ডে রিমান্ডে ছোট সাজ্জাদ

জামিন পাওয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আবু সাঈদ সাগর, শারমিন সুলতানা হ্যাপি, সালেহা আক্তার শিল্পী, জেসমিন আক্তার, তাসলিমা ইয়াসমিন নদী, শিখা ইসলাম, মিতা, শায়লা পারভীন পিয়া ও সালমা হাই টুনি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, এ মামলার এজাহারনামীয় ১১৫ আইনজীবী হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন পান। অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ সোমবার (৭ এপ্রিল) শেষ হবে। এজন্য হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া ৮৩ জন আইনজীবী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত দুপুরে জামিন শুনানির সময় নির্ধারণ করেন। তাদের পক্ষে আইনজীবীরা জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে আদালত ৯ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।

এছাড়া ৬৪ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে ৩ জন আদেশ শুনে আদালত থেকে পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী জহুরুল ফয়েজ এসব তথ্য জানান।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরে আসামিরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সামনে থেকে বেআইনিভাবে অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। তারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ বলে স্লোগান দেন। 

ঢাকা/মামুন/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক এমপি সুমনের জামিন নামঞ্জুর
  • সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আহ্বায়ক বদরুদ্দোজা বাদল, সদস্যসচিব গাজী তৌহিদুল
  • চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা, জরুরি ভিত্তিতে শুনতে অস্বীকার
  • ভারতে ওয়াক্‌ফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই থানায় ডাকছে পুলিশ
  • মৌলভীবাজারে অতর্কিত ছুরিকাঘাতে আইনজীবী নিহত
  • মৌলভীবাজারে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আইনজীবী নিহত
  • মৌলভীবাজারে আইনজীবীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
  • জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের নেতৃত্বে বাদল-তৌহিদ
  • আওয়ামীপন্থী ৬১ আইনজীবী কারাগারে, ১৯ জনের জামিন