ওয়াক্ফ আইন নিয়ে কথা বলায় তাঁকে ‘গৃহবন্দী’ করা হয়েছে: অভিযোগ উত্তর প্রদেশ এসপির মুখপাত্রের
Published: 7th, April 2025 GMT
ভারতে ওয়াক্ফ (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে কথা বলায় উত্তর প্রদেশের রাজনৈতিক দল সমাজবাদী পার্টির (এসপি) জাতীয় মুখপাত্র সুমাইয়া রানাকে গৃহবন্দী করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। তিনি নিজেই এই অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে লক্ষ্ণৌ পুলিশ থেকে পাঠানো এক নোটিশে ‘শান্তি বজায়’ রাখার স্বার্থে তাঁকে বিভিন্ন উপদেশ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
প্রয়াত বিশিষ্ট কবি মুনাওয়ার রানার মেয়ে সুমাইয়া রানা অভিযোগ করেন, তাঁকে ১০ লাখ রুপির একটি ব্যক্তিগত বন্ড এবং একই অর্থমূল্যের দুটি সিকিউরিটিজ সাময়িকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে জমা দিতে বলা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ৪৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘ওয়াক্ফ (সংশোধনী) বিলের (ইতিমধ্য আইনে পরিণত হয়েছে) বিরোধিতা করার কারণে নোটিশ দিয়ে পুলিশ আমাকে চুপ করে দিতে চেষ্টা করছে। আমি এই পুলিশি নোটিশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করব।’
সমাজবাদী পার্টির নারী শাখার এই ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এর আগে পুলিশ আমাকে একটি নোটিশ দিয়েছিল, যা আমি গ্রহণ করিনি। পরে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তা আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুনভারতে ওয়াক্ফ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই থানায় ডাকছে পুলিশ৪ ঘণ্টা আগেপুলিশি নোটিশে বলা হয়, সুমাইয়া রানার কার্যক্রম ‘শান্তিভঙ্গ ও জনগণের মধ্যে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে’। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, ‘জনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁর কাছ থেকে ১০ লাখ রুপির একটি ব্যক্তিগত বন্ড এবং একই সমমূল্যের দুটি সিকিউরিটিজ এক বছরের জন্য কেন নেওয়া হবে না, তা ব্যাখ্যা করতে হবে।’
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সামনে আজ সোমবারের মধ্যে তাঁকে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। সুমাইয়া কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে চলবেন বলেও জানিয়েছেন। আজ সোমবার তাঁর কর্তৃপক্ষের সামনে উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুনভারতজুড়ে ওয়াক্ফর বিপুল সম্পদ নিয়ন্ত্রণে নিতেই কি সংশোধনী আনল বিজেপি সরকার০৫ এপ্রিল ২০২৫নোটিশ জারির বিষয়টি এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বুধবার গভীর রাতে সরকার ও বিরোধী পক্ষের দীর্ঘ বিতর্কের পর ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ৫৬ ভোটের ব্যবধানে পাস হয় ওয়াক্ফ (সংশোধনী) বিল। বিলটির পক্ষে ছিল ২৮৮টি ভোট, আর বিপক্ষে ২৩২টি। পরদিন বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ১২৮-৯৫ ভোটে রাজ্যসভায় বিলটি পাস হয়। গত শনিবার প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতির (স্বাক্ষরের) পর বিলটি আইনে পরিণত হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রক্তি নদীর নৌজটে আটকা শতাধিক বাল্কহেড-ট্রলার
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রক্তি নদীতে আবারও দেখা দিয়েছে নৌজট। দুবলারচর ও জামালগঞ্জের দুর্লভপুর এলাকায় এই জট দেখা দিয়েছে।
নদীর নাব্য সংকটের কারণে সেখানে নৌযান চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে নৌজট সৃষ্টি হচ্ছে বারবার। সোমবার বিকেল থেকে কয়েকশ বালু-পাথরবাহী বাল্কহেড ও ট্রলার এই জটে আটকা পড়ে। যার ফলে সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় বালু-পাথরমহাল যাদুকাটা থেকে বালু-পাথরবাহী বাল্কহেড ও ট্রলারগুলোর মতো বড় আকারের নৌকাগুলোও সেখান থেকে বের হতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে মালপত্র পরিবহন ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেগুলো গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে উদ্বিগ্ন নৌযানের সঙ্গে থাকা লোকজন।
এদিকে বড় নৌকাগুলোও এই জটে আটকা পড়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহন বিঘ্নিত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, নদীর এই সরু অংশে নাব্য সংকট দীর্ঘদিনের। শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় পানির স্তর আরও নেমে গেছে। এতে করে বড় বড় নৌযান চলাচল করতে পারছে না। এমন নাব্য সংকটের কারণে নৌপথে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর এলাকার বালু-পাথর ব্যবসায়ী রঞ্জন দাস জানান, সোমবার থেকে আবারও এই এলাকায় নৌজটের সৃষ্টি হয়েছে। বিকেল থেকে কয়েকশ স্টিল বডি আটকে রয়েছে। এই নদী দিয়ে যাদুকাটা থেকে বালু-পাথর নিয়ে সুরমা নদী হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছায়। ক’দিন পরপর এমন জট তৈরি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েছেন।
তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ার গ্রামের
বাসিন্দা রুকন উদ্দিন বলেন, দুপুর ১২টায় যাদুকাটা নদী থেকে দুই হাজার ফুট বালু নিয়ে রওনা হয়েছেন। তাদের গন্তব্য জামালগঞ্জ। বিকেল ৪টায় রক্তি নদীর দুর্লভপুর এলাকায় এসে দেখি শতাধিক নৌকা আটকে আছে। এখনও নৌজটে আটকে রয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে না তাদের। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যবসী ও নৌকার শ্রমিকরা।
একই উপজেলার দক্ষিণকোলের বাসিন্দা মো. নাসিম উদ্দিন বললেন, সোমবার ভোর ৬টা থেকে ২৬ ফুট বালু নিয়ে নদীতে আটকে আছি। কখন জট ছুটবে, জানি না। এরকম ক’দিন পরপরই দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের।