স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিকেরা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের জন্য যেতে শুরু করেন।

তখন থেকে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো আরম্ভ করেন। এই প্রবাসী আয় অর্থনীতির একটি প্রধান খাত হিসেবে জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে প্রবাসী আয়ের অবদান ৬ থেকে ৭ শতাংশ।

যদিও বৈদেশিক মুদ্রার এই বিরাট উৎস তথা বাংলাদেশি প্রবাসীদের সঠিক সংখ্যা এখন পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি।

ফলে প্রবাসীদের কল‍্যাণে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে সেটা কখনোবা অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত তৎকালীন আওয়ামী লীগের সরকারের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ জাতীয় সংসদের একটি বক্তব্যে জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৬০।

আরও পড়ুনকথিত ৭৩০ কোটি টাকা রেমিট্যান্সে কী কী ‘অনিয়ম’ থাকতে পারে২১ মার্চ ২০২৫

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) যদিও বলেছিল, সংখ্যাটি আসলে ১ কোটি ৪৮ লাখের বেশি।

উভয় তথ্যের কিছুটা হেরফের থাকলেও বিশালসংখ্যক বাংলাদেশি প্রবাসী যে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

বাংলাদেশি প্রবাসীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি যেসব দেশে, তার মধ্যে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা অন্যতম। এসব দেশে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ প্রবাসী বাস করেন।

শুধু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় বাস করেন প্রায় ২৮ লাখ প্রবাসী, যাঁদের মধ্যে সৌদি আরবেই বাস করেন ২১ লাখের বেশি প্রবাসী।

সে হিসাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে বিদেশি শ্রমবাজারের দিক থেকে ভারত ও পাকিস্তানের পরই বাংলাদেশের অবস্থান।

বাংলাদেশি প্রবাসীদের অধিকাংশই সাধারণত টেকনিশিয়ান, গৃহস্থালি, নির্মাণশিল্প ও কৃষিকর্মে নিয়োজিত।

পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট, সুপারশপ, ড্রাইভিং ও সেল্ফ এমপ্লয়েড হিসেবেও অনেকে কাজ করে যাচ্ছেন।

এ ছাড়া প্রবাসীদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি প্রকৌশলী ও চিকিৎসক রয়েছেন, যাঁরা দেশে বিপুল অঙ্কের প্রবাসী আয় পাঠান।

আরও পড়ুনরেমিট্যান্স-যোদ্ধাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়া সময়ের দাবি১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

২০২২-২৩ অর্থবছরে অর্থাৎ ৪৮ বছরের ইতিহাসে বিএমইটি রেকর্ডসংখ্যক প্রায় ১১ লাখ ২৫ হাজার ৮৩৩ জন কর্মী বিদেশে পাঠিয়ে ব্যাপক আশার সঞ্চার করেছিল।

কিন্তু সম্প্রতি ডিজিটাল অভিবাসন প্ল্যাটফর্ম ‘আমি প্রবাসী’–এর একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে জনশক্তি রপ্তানিতে বাংলাদেশের অর্জন আরও ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে, যেটি রীতিমতো একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি রিসার্চ মুভমেন্টস (রামরু) তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ২০২৪ সালে মোট ১০ লাখ ১১ হাজার ৯৫৯ জন বাংলাদেশি কর্মী বিদেশে গেছেন।

এর মধ্যে দক্ষ কর্মীর সংখ্যা মাত্র ২ লাখ ১৪ হাজার ৪৪, যা মোট শ্রমবাজারের প্রায় ২৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। একই সময়ে স্বল্প দক্ষ কর্মী (অদক্ষ) হিসেবে বিদেশে গেছেন ৪ লাখ ৯১ হাজার ৪৮০ জন বা ৫৪ দশমিক ২৩ শতাংশ।

স্বল্প দক্ষ বা অদক্ষতার মতো প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেও ২০২৪ সালে বাংলাদেশের প্রবাসীরা প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যার ফলে রেমিট্যান্স আয়কারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম স্থান লাভ করে।

বিশ্বে প্রবাসী আয়ে শীর্ষ ছিল ভারত। তারা ২০২৪ সালে আনুমানিক ১২ হাজার ৯১০ কোটি ডলার প্রবাসী আয় পেয়েছে, যা যেকোনো দেশের এক বছরে পাওয়া সর্বোচ্চ।

এ ছাড়া গত বছর বৈশ্বিক প্রবাসী আয়ের মধ্যে ভারত একাই নিয়ে গেছে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ।

আরও পড়ুনরেমিট্যান্স না গার্মেন্টস, অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কোনটি১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

একই বছরে এশিয়ার মধ্যে প্রবাসী আয়কারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম, ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার আয় করে পাকিস্তানের অবস্থান চতুর্থ, ৪ হাজার কোটি ডলার আয় করে ফিলিপাইনের অবস্থান তৃতীয় এবং ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার আয় করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন।

তবে ২০২৫ সালে বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের সব রেকর্ড ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিক প্রবাহ বিবেচনা করলে এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, মার্চ মাসেই সৃষ্টি হয়েছে নতুন রেকর্ড।

কারণ, ঈদ সামনে রেখে এ মাসে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ৩২৯ কোটি ডলার।

সেখানে ফেব্রুয়ারি মাসে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫২ কোটি ডলার, যেটাও একটি সিঙ্গেল মাসে আগের তুলনায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছিল।

পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ বছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৭ হাজার ৭৫৯ কোটি ডলার।

যার মধ্যে ২০২৪ সালে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

উল্লেখ্য, গত বছর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনকালের সমাপ্তি ঘটে।

এর পর থেকে আকস্মিকভাবে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত একের পর এক রেকর্ড ভেঙে চলেছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসী আয় কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও সাম্প্রতিক সময়ে আবারও আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।

যেটি ধরে রাখতে নীতিনির্ধারকদের কার্যকর ভূমিকা রাখা জরুরি। কারণ এখন পর্যন্ত প্রবাসীদের অনেক দাবিদাওয়া কাগজে–কলমেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে।

প্রকৃতপক্ষে প্রবাসীদের পাশে না দাঁড়ালে বা প্রবাসী আয় বৃদ্ধির অন্তরায়গুলো দূর করতে না পারলে দৃশ্যমান রেকর্ড ভঙ্গের প্রেরণাগুলো হালে পানি পাবে না, যা প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে একটি দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে।

স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রবাসীদের জন্য অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এটা স্বীকার না করলে সত্যের অপলাপ হবে।

তবে এখন পর্যন্ত প্রবাসীদের জন্য বেশ কিছু অমীমাংসিত বিষয় রয়ে গেছে, যা মীমাংসা করার এখনই উপযুক্ত সময়, সেগুলোর মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত জরুরি—

প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে হুন্ডির দৌরাত্ম্য দূর করতে হবে। অনেক প্রবাসী ব্যাংকিং চ্যানেলের পরিবর্তে অবৈধ উপায়ে (হুন্ডির মাধ্যমে) টাকা পাঠান, যা বৈধ প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এটি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাংকিং পদ্ধতিকে আরও গ্রহণযোগ্য, দ্রুততর, সহজসাধ্য ও আকর্ষণীয় করতে হবে।

সরকারি উদ্যোগে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বৈদেশিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

কিন্তু প্রয়োজনীয় দক্ষতার ঘাটতির ফলে তাঁরা কম বেতনে কাজ করেন। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের প্রযুক্তি ও ভাষাজ্ঞান উন্নত করা প্রয়োজন।

দেশে বিদেশগামীদের দক্ষ করতে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) থাকলেও সেখানে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি নেই।

প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের সংকটগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে। এ ছাড়া শ্রমিক নির্যাতনসংক্রান্ত ঘটনাগুলোয় সংশ্লিষ্ট দূতাবাস বা কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

প্রবাসীদের সঙ্গে নির্ধারিত চুক্তি বা বেতন নিয়ে সব ধরনের প্রতারণার বিপক্ষে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করার বিকল্প নেই।

বাংলাদেশে দেশের জাতীয় বাজেটে প্রবাসী আয়ের নির্ভরতা কমিয়ে আনতে হবে। সে জন্য দেশের সামগ্রিক রপ্তানি ও স্থানীয় উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে, যাতে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

পাশাপাশি আমাদের দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি প্রবাসীদের কল্যাণে যথাযথ ও দ্রুততর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

অধিকাংশ প্রবাসীর অভিযোগ, বিমানবন্দরে তাঁদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। অনেক সময় তাঁদের মূলবান জিনিসপত্র খোয়া যায়, এমনকি অহেতুক হয়রানির শিকার হতে হয়। এসব কারণে অনেক প্রবাসীর স্বস্তির বিদেশযাত্রা বা দেশে আশা বিষাদে পরিণত হয়। বর্তমান সরকার প্রবাসীদের কিছু জিনিস আমলে নিয়ে এয়ারপোর্টের ভেতরে একটি ভিআইপি লাউঞ্জ তৈরি করে দিয়েছে, যেটি ব‍্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। তবে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের সত্যিকার অর্থে ভিআইপি হিসেবে বা তাঁদের দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি হিসেবে মূল্যায়ন করা অত্যন্ত জরুরি।

রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ইনস্যুরেন্সের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ব‍্যাংকিং চ‍্যানেলে প্রবাসী আয় পাঠানোর জন্য বাস্তবায়িত ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনাকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ করা যেতে পারে।

সেখান থেকে একটি নির্দিষ্ট অংশ প্রবাসীর পরিবারের লাইফ ইনস্যুরেন্স ও হেলথ ইনস্যুরেন্স কভারেজ হিসেবে ব্যবসা করা যেতে পারে।

এ ক্ষেত্রে প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন ইনস্যুরেন্স–ব্যবস্থা চালু করা ব‍্যাংকগুলোর সহায়তা ও পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট ইস্যু ও নবায়ন আরও সহজতর করা যেতে পারে। পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে ডিজিটালি তাদের তথ‍্য ও ছবি হালনাগাদ করা যেতে পারে।

এ ছাড়া প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধন ও অন্য সনদপত্রও ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেরিফিকেশন ও ইস্যু করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

প্রবাসীদের আগমন ও প্রস্থানের জন্য বিমানবন্দরকে স্বস্তির জায়গায় উন্নীত করতে হবে।

অধিকাংশ প্রবাসীর অভিযোগ, বিমানবন্দরে তাঁদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। অনেক সময় তাঁদের মূলবান জিনিসপত্র খোয়া যায়, এমনকি অহেতুক হয়রানির শিকার হতে হয়।

এসব কারণে অনেক প্রবাসীর স্বস্তির বিদেশযাত্রা বা দেশে আশা বিষাদে পরিণত হয়।

বর্তমান সরকার প্রবাসীদের কিছু জিনিস আমলে নিয়ে এয়ারপোর্টের ভেতরে একটি ভিআইপি লাউঞ্জ তৈরি করে দিয়েছে, যেটি ব‍্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

তবে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের সত্যিকার অর্থে ভিআইপি হিসেবে বা তাঁদের দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি হিসেবে মূল্যায়ন করা অত্যন্ত জরুরি।

এ ছাড়া প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শুধু মধ্যপ্রাচ্যের গুটিকয় দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না; পাশাপাশি ইউরোপ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে জনশক্তি রপ্তানির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

এই দেশগুলোর শ্রমবাজারে প্রবেশের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আরও বাড়ানো সম্ভব।

একটি বিষয় খুবই পরিষ্কার, প্রবাসী আয় শুধু ব্যক্তিপর্যায়ে পরিবারের জীবনমান উন্নত করে না, বরং জাতীয় অর্থনীতির ভিত্তিকেও ক্রমাগত মজবুত করে। প্রবাসী আয়ের একটি বড় অংশ যদি উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করা হয়, তবে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের অর্থনীতিতে তার বিশাল ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এ ছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে সহজ শর্তে ঋণ ও অন্য ব্যাংকিং সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দরকার।

সেগুলো করতে হলে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে প্রবাসীদের কল‍্যাণে আরও কার্যকর ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে।

এম এম মাহবুব হাসান ব‍্যাংকার ও উন্নয়ন গবেষক

ই-মেইল: [email protected]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব স দ র ক প রব স দ র জ প রব স দ র স ইনস য র ন স শ রমব জ র র অবস থ ন ২০২৪ স ল র জন য ব র প রব স ক প রব স আয় ব দ ধ প রব স র শ প রব স পদক ষ প র কর ড ক ষ কর উল ল খ দশম ক ন আরও র একট সরক র ব যবস ভ আইপ গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

নাসিরনগর বিএনপিতে গৃহদাহ

৩৭ নেতাকর্মীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারকে কেন্দ্র করে গৃহদাহ শুরু হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা বিএনপিতে। এ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক। 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সৈয়দ একে একরামুজ্জামান দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে অংশ নেন। ওই নির্বাচনে তাঁর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন নাসিরনগর উপজেলাসহ ইউনিয়ন পর্যায়ের অর্ধশতাধিক পদধারী নেতাকর্মী। পরে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ৩৭  নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। 

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে অনেকটা গোপনে ওই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পাশাপাশি তাদের স্বপদে বহাল করায় দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলেও গত ৩ এপ্রিল তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এর পরই এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপিতে তোলপাড় শুরু হয়। 

উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমএ হান্নান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আজম চৌধুরীর স্বাক্ষর করা বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের চিঠিতে বলা হয়, জেলা ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার কাছে লিখিতভাবে ভুল স্বীকার করায় আলোচিত নেতাকর্মীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ দলীয় পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

তবে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কেএম বশির উদ্দিন তুহিন বলেন, বহিষ্কৃতদের কেউই ভুল স্বীকার করে তাঁর কাছে চিঠি পাঠাননি। এ ছাড়া কেন্দ্র ও বিভাগ পর্যায় থেকেও তাঁকে এই বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। 

এ প্রসঙ্গে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারপত্রে স্বাক্ষর করা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আজম চৌধুরী বলেন, বিভাগীয় ও জেলা নেতাদের মৌখিক নির্দেশে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই নির্দেশ যদি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক না মানেন তাহলে কি দলের কার্যক্রম থেমে থাকবে?

তবে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে পূর্বভাগ ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আইয়ুব খান বলেন, বহিষ্কৃতদের দলে ফিরিয়ে আনার কোনো যুক্তি নেই। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দুলাল মিয়া বলেন, ‘যারা টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে শেখ মুজিবের মাজারে ফুল দিয়ে এসেছে, তাদের দলে ফিরিয়ে আনা মানেই হলো দলের আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করা। চাতলপাড় ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরুল হাসান বাবু বলেন, দলকে বিপদে ফেলে যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তারা বিএনপির কেউ নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চুয়েটে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু ৯ এপ্রিল 
  • মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভা ২০ এপ্রিল
  • মার্চে রপ্তানি হয়েছে ৪২৪ কোটি ডলারের পণ্য
  • রংপুরে শহীদ আবু সাঈদ হত্যার ঘটনাস্থল ঘুরে দেখলেন প্রধান বিচারপতি
  • মার্চে দেশে এসেছে ৩২৯ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স  
  • অ্যারামিট সিমেন্টের অর্ধবার্ষিকে লোকসান কমেছে
  • সামিট পাওয়ারের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
  • নোমাডের সূচকে সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট আয়ারল্যান্ডের, বাংলাদেশ কত নম্বরে
  • নাসিরনগর বিএনপিতে গৃহদাহ