দ্রুত ৯ দাবি পূরণের আহ্বান সচিবালয় সংযুক্ত পরিষদের
Published: 7th, April 2025 GMT
রেশনিং ব্যবস্থা চালু ও মহার্ঘ ভাতা দেওয়াসহ ৯ দাবি দ্রুত পূরণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ।
সোমবার (৭ মার্চ) সচিবালয়ের বাদামতলায় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সংগঠনটির নেতারা এসব দাবি জানান।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো.
এ সময় তারা বলেন, কয়েক মাস ধরে বঞ্চিত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধা দেওয়া, নতুন পে-কমিশন গঠনের আগে পর্যন্ত ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড চালু, রেশনিং প্রথা চালু, অবসরের বয়স বাড়ানো, পদনাম পরিবর্তন ও পদোন্নতি, সচিবালয় ভাতাসহ আমরা ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সংগ্রাম করছি। দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখনো আমাদের দাবি পূরণ করা হয়নি। বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ন্যায্য ৯ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানচ্ছি।
অনুষ্ঠানে আরা বক্তব্য রাখেন পরিষদ নেতা মো. তৌহিদুর রহমান, মো. বেলাল হোসেন, মানজার হোসেন, মো. নুরুজ্জামাল, তোফাজ্জল হোসেন, মো. নজরুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী শাহিন, সুমন, জিয়াউর রহমান প্রমুখ।
এ সময় সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের নেতাকর্মী ছাড়াও সচিবালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শিশুর আনন্দে স্মৃতির ঝাঁপি খোলে প্রবীণের
মা-বাবার সঙ্গে মেলায় এসে পছন্দের পুতুল কিনেছে চার বছরের রোজা। এ জন্য খুশি ধরছিল না তার। আট বছর বয়সী বড় বোন জান্নাতুল তিশার বায়না পুতির মালার জন্য। এ নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে মান-অভিমান চলছিল শিশুটির। সোমবার তাদের পাওয়া যায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাঘা দরগা শরিফে আয়োজিত ঈদমেলায়। এই পরিবারটি এসেছিল আটঘড়ি গ্রাম থেকে। তাদের মতো হাজারো মানুষের মধ্যে মেলার আনন্দ দেখে প্রবীণ ব্যক্তিরা তাদের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিচারণে মেতে ওঠেন।
নাটোরের লালপুর থেকে এই মেলায় এসেছিলেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুর রশিদ। তিনি নাতি-নাতনিদের জন্য খেলনা কিনে বাড়ি ফিরছেন। মেলার প্রাণচাঞ্চল্যে মুগ্ধতা প্রকাশ করে বলেন, এই মেলায় এত মানুষের সমাগম হয়, ধারণাই ছিল না। বাঘার বাজুবাঘা গ্রামে শ্বশুরবাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার বাসিন্দা রাব্বি হোসেন। তিনি সুখ্যাতি শুনেই মেলায় এসেছেন। স্ত্রী-ছেলের পাশাপাশি শ্বশুরবাড়ির ছোট শিশুদের নিয়ে এসেছেন। সবাই সুইং চেয়ারে দুলবে। রাব্বি হোসেন বলেন, শিশুদের আনন্দ দেখে নিজের শৈশবের কথাই মনে হচ্ছে বারবার।
মিলিক বাঘার গ্রামের সেকেন্দার আলী (৬৮) এই মেলায় তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। ছোট বেলায় দলবেঁধে মেলায় এসে পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ দেখতেন। ফেরার সময় হাতে থাকত তালপাতা বা বাঁশের তৈরি বাঁশি। সেকেন্দার আলী বলেন, এখন মেলা থেকে তালপাতার বাঁশি কেনা হয় না। শোলার খেলনা, বেতের সরঞ্জাম, মাটির পশু-পাখি মেলায় দেখাই যায় না।
এই মেলার মিষ্টান্নের সুখ্যাতি আছে। তাই ঈদে বেড়াতে আসা আত্মীয়-স্বজনেরও চাহিদা থাকে। তাদের জন্য ছানার তৈরি জিলাপি, চমচম নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হালিম।
সোমবার দুপুরে মেলায় পসরা সাজিয়ে বসেন বগুড়ার ওসমান আলী (৭৫)। তিনি বিক্রি করেন পোড়ামাটি ও বাঁশের কাঠি দিয়ে তৈরি ব্যাঙগাড়ি। ষাটের দশকে এই গাড়ি বিক্রি করতেন এক টাকার কমে। ৩৫ বছর ধরে বাঘার এই মেলায় আসেন। এখন তিনি প্রতিটি গাড়ি বিক্রি করেন ১২-১৫ টাকায়। এবার ব্যাঙগাড়ি বিক্রি হয়েছে অনেক কম।
৪০ বছর ধরে এই মেলায় আসছেন কুষ্টিয়ার বৃত্তিপাড়ার বাসিন্দা নগেশ্বর। তিনি বলেন, ১৫ বছর বয়স থেকে বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে মেলায় আসছেন। এবার দিনে গড়ে বিক্রি হয়েছে তিন-চার হাজার টাকার পণ্য। খুলনার কসমেটিকস ব্যবসায়ী মেরাজ গাজী ঈদের তিন দিন আগে মেলায় এসেছেন। সোমবার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার বেচাকেনা হয়েছে তাঁর। পাইকারি-খুচরা মিলিয়ে সাড়ে চার লাখ টাকার খেলনা বিক্রি করেছেন সহিদুল ইসলাম। আড়াই লাখ টাকার মতো মিষ্টি-জিলাপি বিক্রি করেছেন সাইফুল।