মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি, প্রাণ গেল যুবকের
Published: 7th, April 2025 GMT
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের মানিকদী-লাখপুর সড়কের মানিকদী দড়িপাড়া মসজিদের সামনে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। নিহত মো. সাকিব মিয়া (১৮) উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের লাখপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মুসা মিয়ার ছেলে। তিনি লাখপুর শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
দুর্ঘটনায় দুই জন আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন, লাখপুর পূর্বপাড়া গ্রামের রেনু লস্করের ছেলে মাসুম লস্কর (২০) ও মানিকদী দড়িপাড়া গ্রামের শওকত আলীর ছেলে সাব্বির হোসেন (২৪)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহতের চাচাত ভাই বাদল মিয়া।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, রবিবার (৬ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে মাসুম লস্কর ও সাকিব মিয়া মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে যায়। তারা বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি মানিকদী দড়িপাড়া মসজিদের সামনে পথচারী সাব্বিরকে ধাক্কা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা দুইজন ছিটকে পড়ে যায় এবং গুরুতর আহত হয়।
আরো পড়ুন:
কর্মস্থলে ফিরছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ
মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ভিড়
স্থানীয়রা তিনজনকে উদ্ধার করে শিবপুর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সাকিবকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুইজনের অবস্থা গুরুতর দেখে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/হৃদয়/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন সড়ক দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
৩০ বছর পর পদ্মাপাড়ে মিলনমেলায় হাজারো বন্ধু
৩০ বছর আগে ১৯৯৫ সালে যাঁরা এসএসসি পাস করেছেন, তাঁদের অনেকের সঙ্গেই দীর্ঘদিন দেখা-সাক্ষাৎ নেই। কে কেমন আছেন, কোথায় কাজ করছেন, তা–ও জানেন না অনেক বন্ধু। একসময়কার অতিপ্রিয় এই সহপাঠী, সহযাত্রীদের খোঁজ নিতে ৩০ বছর পর বন্ধুরা মিলিত হয়েছেন পদ্মা নদীর তীরে।
আজ শনিবার শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবায় পদ্মা সেতুর পাশে বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলার বন্ধুদের পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছে। ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসএসসি ১৯৯৫ ব্যাচের বন্ধুরা এতে যোগ দেন।
সকালে পদ্মার ইলিশ ও নানা পদের ভর্তা দিয়ে বন্ধুদের আপ্যায়ন করা হয়। এরপর চলে পরিচিতি পর্ব ও আনন্দ আড্ডা। দীর্ঘ বছর পর বন্ধুদের কাছে পেয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্মৃতিচারণা করেন বন্ধুদের সঙ্গে। ফাঁকে ফাঁকে গ্রামীণ নানা ধরনের খাবারের আয়োজন রাখা হয়। মঞ্চে নাচ, গান ও কবিতা পরিবেশন করেন বন্ধুরা। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
জাজিরা মোহর আলী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি ১৯৯৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান ও ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। ৩০ বছর পর ওই দুই বন্ধুর দেখা হয়েছে। তাঁরা একে অপরকে আপ্লুত হয়ে জড়িয়ে ধরেন।
মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছর এলাকার প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছি, খেলাধুলা করেছি। জীবনের মধুময় শৈশব ও কৈশোর একসঙ্গে পার করেছি। উন্নত জীবন গড়তে গিয়ে ও কর্মজীবনে প্রবেশ করে বাল্যবন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। এভাবে কখনো প্রাণের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে তা ভাবতে পারিনি।’
ঢাকার সাভারে ব্যবসা করেন আনোয়ার হোসেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে সেখানে বসবাস করেন। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বন্ধুদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাল্য বন্ধুদের যে স্মৃতি, তা আমাদের সব সময় উজ্জীবিত করে রাখে। দীর্ঘ বছর ধরে সেই বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম, যা অনেক কষ্টের ও বেদনার। আজ প্রাণের বন্ধুদের পেয়ে সব দুঃখ–কষ্ট দূর হয়ে গেছে।’
বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী উপপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন শাহিন সরদার ও শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসনের কর্মরত আছেন পলাশ দাস। তাঁরা দুজনেই ১৯৯৫ সালে নড়িয়ার বিঝারী উপসী তারাপ্রসন্ন উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। পরীক্ষার পর আর দুই বন্ধুর দেখা হয়নি। ৩০ বছর পর দুই বন্ধু মিলিত হয়েছেন জাজিরার নাওডোবায় পদ্মার পাড়ে বন্ধুদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে।
শাহিন সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘৩০ বছর পর বন্ধুকে বুকে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসা বিনিময় করেছি। বন্ধুকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত হয়েছি। দীর্ঘ বছর পর এমন একটি মুহূর্ত আমাদের আজীবন মনে থাকবে।’
পলাশ দাস বলেন, ‘আমাদের জীবনটি যান্ত্রিকতায় স্থবির হয়ে গিয়েছে। এমন একটি মুহূর্তে শৈশব ও কৈশোরের বন্ধুদের কাছে পেয়ে আত্মহারা হয়ে পড়েছি। ফেলে আসা নানা সুখ-দুঃখের ঘটনার স্মৃতিচারণা করতে পেরেছি। জীবনের এমন একটি পর্যায়ে এসে এমন অনুষ্ঠান স্মৃতিতে অম্লান হয়ে থাকবে।’
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৯৯৫ এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দেশের নানা সেক্টরে কর্মরত। স্কুলজীবনের পরে অনেকের সঙ্গেই আমাদের দেখা-সাক্ষাৎ হয়ে উঠছিল না। সবাইকে একত্র করার জন্য বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলার সব স্কুলের বন্ধুদের একত্র করার জন্যই এই আয়োজন করা হয়েছে। পদ্মা সেতু আমাদের যোগাযোগের বন্ধন সৃষ্টি করেছে। সে কারণে বন্ধুত্বের বন্ধনের মিলনমেলাটি সেতুর কাছে পদ্মার পাড়ে করেছি। আনন্দ-আড্ডা, স্মৃতিচারণা, খাবারদাবার ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি উৎসবে রূপ নিয়েছে।’