রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক পাচ্ছেন সেই পুলিশ কনস্টেবল
Published: 7th, April 2025 GMT
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পুলিশ কনস্টেবলের দায়িত্ব পালন করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে কাউকে আঘাত না করে লাঠিপেটার অভিনয় করেন তিনি। এরপরই প্রশংসা পান সেই পুলিশ কনস্টেবল। পরে জানা যায়, তাঁর নাম মো. রিয়াদ হোসেন। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত।
এবার পুলিশে ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক-পিপিএম’ পদক পাচ্ছেন পুলিশ কনস্টেবল রিয়াদ হোসেন। আন্দোলন দমনে বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশিং কৌশল প্রয়োগ করায় রিয়াদকে এই পদক দেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপতির আদেশে গত ২৭ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তৌছিফ আহমেদ এতে স্বাক্ষর করেন। গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন আকারে বিষয়টি প্রকাশ করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে নাগরিকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে জনশৃঙ্খলা রক্ষায় অভিনব বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশিং কৌশলের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ সদস্য রিয়াদ হোসেনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপি এম-সেবা)’ প্রদান করা হলো। প্রজ্ঞাপনের তারিখ থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ষ ট রপত
এছাড়াও পড়ুন:
শিশুর আনন্দে স্মৃতির ঝাঁপি খোলে প্রবীণের
মা-বাবার সঙ্গে মেলায় এসে পছন্দের পুতুল কিনেছে চার বছরের রোজা। এ জন্য খুশি ধরছিল না তার। আট বছর বয়সী বড় বোন জান্নাতুল তিশার বায়না পুতির মালার জন্য। এ নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে মান-অভিমান চলছিল শিশুটির। সোমবার তাদের পাওয়া যায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাঘা দরগা শরিফে আয়োজিত ঈদমেলায়। এই পরিবারটি এসেছিল আটঘড়ি গ্রাম থেকে। তাদের মতো হাজারো মানুষের মধ্যে মেলার আনন্দ দেখে প্রবীণ ব্যক্তিরা তাদের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতিচারণে মেতে ওঠেন।
নাটোরের লালপুর থেকে এই মেলায় এসেছিলেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুর রশিদ। তিনি নাতি-নাতনিদের জন্য খেলনা কিনে বাড়ি ফিরছেন। মেলার প্রাণচাঞ্চল্যে মুগ্ধতা প্রকাশ করে বলেন, এই মেলায় এত মানুষের সমাগম হয়, ধারণাই ছিল না। বাঘার বাজুবাঘা গ্রামে শ্বশুরবাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার বাসিন্দা রাব্বি হোসেন। তিনি সুখ্যাতি শুনেই মেলায় এসেছেন। স্ত্রী-ছেলের পাশাপাশি শ্বশুরবাড়ির ছোট শিশুদের নিয়ে এসেছেন। সবাই সুইং চেয়ারে দুলবে। রাব্বি হোসেন বলেন, শিশুদের আনন্দ দেখে নিজের শৈশবের কথাই মনে হচ্ছে বারবার।
মিলিক বাঘার গ্রামের সেকেন্দার আলী (৬৮) এই মেলায় তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। ছোট বেলায় দলবেঁধে মেলায় এসে পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ দেখতেন। ফেরার সময় হাতে থাকত তালপাতা বা বাঁশের তৈরি বাঁশি। সেকেন্দার আলী বলেন, এখন মেলা থেকে তালপাতার বাঁশি কেনা হয় না। শোলার খেলনা, বেতের সরঞ্জাম, মাটির পশু-পাখি মেলায় দেখাই যায় না।
এই মেলার মিষ্টান্নের সুখ্যাতি আছে। তাই ঈদে বেড়াতে আসা আত্মীয়-স্বজনেরও চাহিদা থাকে। তাদের জন্য ছানার তৈরি জিলাপি, চমচম নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হালিম।
সোমবার দুপুরে মেলায় পসরা সাজিয়ে বসেন বগুড়ার ওসমান আলী (৭৫)। তিনি বিক্রি করেন পোড়ামাটি ও বাঁশের কাঠি দিয়ে তৈরি ব্যাঙগাড়ি। ষাটের দশকে এই গাড়ি বিক্রি করতেন এক টাকার কমে। ৩৫ বছর ধরে বাঘার এই মেলায় আসেন। এখন তিনি প্রতিটি গাড়ি বিক্রি করেন ১২-১৫ টাকায়। এবার ব্যাঙগাড়ি বিক্রি হয়েছে অনেক কম।
৪০ বছর ধরে এই মেলায় আসছেন কুষ্টিয়ার বৃত্তিপাড়ার বাসিন্দা নগেশ্বর। তিনি বলেন, ১৫ বছর বয়স থেকে বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে মেলায় আসছেন। এবার দিনে গড়ে বিক্রি হয়েছে তিন-চার হাজার টাকার পণ্য। খুলনার কসমেটিকস ব্যবসায়ী মেরাজ গাজী ঈদের তিন দিন আগে মেলায় এসেছেন। সোমবার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার বেচাকেনা হয়েছে তাঁর। পাইকারি-খুচরা মিলিয়ে সাড়ে চার লাখ টাকার খেলনা বিক্রি করেছেন সহিদুল ইসলাম। আড়াই লাখ টাকার মতো মিষ্টি-জিলাপি বিক্রি করেছেন সাইফুল।