কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারি থামাতে গিয়ে ‘কিল-ঘুষিতে’ মিজান মিয়া (৪০) নামের আরেক ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের চরেরকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মিজান একই এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মিজানসহ চার ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তাঁদের মধ্যে রোমান মিয়া পৈতৃক জমিতে শৌচাগার তৈরি করতে চান। এতে বাধা দেন আরেক ভাই রিপন মিয়া। বিষয়টি নিয়ে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রোমান ও রিপনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যসহ দুই ভাই মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। আরেক ভাই মিজান বাড়িতে ফিরে এ দৃশ্য দেখে মারামারি থামানোর চেষ্টা করেন। ভাইদের মধ্যে হাতাহাতির একপর্যায়ে কিল-ঘুষিতে আহত হন মিজান। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

মিজানের স্ত্রী তাসলিমা বেগম বলেন, ভাইদের সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিরোধ ছিল না। দুই ভাই ঝগড়া করছেন দেখে তিনি থামাতে এগিয়ে যান। এতে তিনি কিল-ঘুষিসহ মারধরের শিকার হন।

তবে মিজানের বাবা মতি মিয়ার দাবি, ঝগড়া থামাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন মিজান।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পটুয়াখালীতে শহীদ বাবার কবরের পাশে শা‌য়িত কলেজছাত্রী, কান্না থামছে না মায়ের

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় জুলাই আন্দোলনের শহীদ বাবার কবরের পাশেই দাফন করা হয়েছে কলেজছাত্রী মেয়েকে। আজ রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে নিজ গ্রামের বসতঘরের সামনের আঙিনায় তাকে দাফন করা হয়। এর আগে সন্ধ্যা সাতটার দিকে মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান স্বজনেরা।

গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার বাসা থেকে ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গত ১৮ মার্চ তাকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দুমকি থানায় মামলা রয়েছে। আজ রোববার রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর উদ্দেশে রওনা হন স্বজনেরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাতটার দিকে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। একই অ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন কলেজছাত্রীর মা। তিনি অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নার একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ সময় স্বজনেরা তাঁকে ধরে বাড়িতে নিয়ে যান। নিজ ঘরে পৌঁছানোর একপর্যায়ে জ্ঞান ফিরলে তিনি আবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। এমন অবস্থা থেকে কলেজছাত্রীর বৃদ্ধ দাদাও সেখানে কান্নাকাটি শুরু করেন।

আরও পড়ুনশহীদ বাবার পাশেই কলেজছাত্রীকে দাফনের প্রস্তুতি, কবর খুঁড়ছেন বৃদ্ধ দাদা৬ ঘণ্টা আগে

পরে বাড়ির পাশে একটি স্কুলমাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওই জানাজায় বিএনপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, এনসিপির মুখ্য সংগঠক সার্জিস আলমসহ নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।

এর আগে কলেজছাত্রীর মা জানিয়েছিলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে তাঁর স্বামী গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তাঁর শহীদ স্বামীকে দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

ওই নারী আরও বলেন, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় তাঁর মেয়ে। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তার অশালীন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলে। এরপর তাঁরা গত ২০ মার্চ থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে উপজেলার একটি ইউনিয়নের দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। সেই দুজন কিশোর। তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুনজুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়েটির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর, হাসপাতালে ক্ষোভ৮ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনপটুয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার২১ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পটুয়াখালীতে শহীদ বাবার কবরের পাশে শা‌য়িত কলেজছাত্রী, কান্না থামছে না মায়ের
  • স্ত্রীকে হত্যার পর সেপটিক ট্যাংকে লাশ ফেলে ইমামতি করতে যান মোমিন