ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ডহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি অফার প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী জাকির হোসেন।

তিনি ইবির ইনফরমেশন অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী।

সোমবার (৭ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

গাজায় হামলা: বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে সাড়া ইবি শিক্ষার্থীদের

নিরাপত্তা শঙ্কায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

তিনি জানান, ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটির গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস থেকে সাইবার সিকিউরিটি প্রোগ্রামে এমএস-এ ভর্তির অফার পেয়েছিলেন। তবে ইসরায়েল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “সম্ভবত আমার একাডেমিক যাত্রার সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তগুলোর একটি নিয়েছি। আমি সম্মানিত বোধ করেছি ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটির সাইবার সিকিউরিটি প্রোগ্রামে এমএস এর জন্য ভর্তি অফার পেয়ে। কিন্তু গভীর চিন্তাভাবনার পর এবং গাজায় চলমান মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপটে, আমি সেই অফারটি বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছি ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশের জন্য।”

তিনি আরো লেখেন, “আমি বিশ্বাস করি, এমন সময়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তগুলো বিবেক ও ন্যায়ের শক্তিশালী বার্তা বহন করতে পারে। আমার হৃদয় গাজার সঙ্গে।”

সাইবার সিকিউরিটির ক্ষেত্রে জাকিরের একাধিক অর্জন রয়েছে। তিনি একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাইবার সিকিউরিটি প্রতিযোগিতায় পঞ্চম স্থান অর্জন করেন। এছাড়া তিনি এবং তার দল ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সাইবার ড্রিল ২০২২-এ দ্বিতীয় রানার্স আপ হন।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গাজার জন্য ঢাকার শোবিজ তারকাদের মন কাঁদছে 

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সোমবার রাজধানীসহ সারা দেশে সাধারণ ধর্মঘট কর্মসূচি চলছে। সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের শোবিজ তারকারাও। গাঁজাবাসীর জন্য মন কাঁদছে জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন শাকিব খান, সিয়াম আহমেদ, আফরান নিশো ও আরিফিন শুভর মত তারকারা। 

দেশের শীর্ঘ নায়ক শাকিব  খান নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে  লিখেছেন, ‘গাজা শুধু একটি ভৌগোলিক নাম নয়, এটি যেন আজ নির্যাতিত মানুষের প্রতীক! দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা হচ্ছে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করতে না পারা! তাদের পাশে আছি - ভালোবাসা, সংহতি, আর শান্তির প্রত্যাশায়।’

চিত্রনায়িকা সিয়াম আহমেদ দীর্ঘ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমি যখন এই পোস্ট লিখছি, ততক্ষণে গাজার অস্তিত্ব কি মুছে গেছে? আমরা কি পারলাম না এই শহরটাকে, এই দেশটাকে বাঁচাতে? ফিলিস্তিনের এই ধ্বংসাবশেষের দায় কি আমরা কেউ এড়াতে পারব? ফিলিস্তিনের জন্য আমার মনের কান্না কখনো থামাতে পারিনি।’

এ হত্যাকাণ্ডের দায় কেউ এড়াতে পারে না বলে মনে করেন সিয়াম। এই চিত্রনায়ক লিখেছেন, ‘এই যে ঈদের পরপরই তাদের ওপর নরক নেমে এল, তার দায় কি এই পৃথিবী নেবে না?’

সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা জানিয়ে সিয়াম লিখেছেন, ‘আল্লাহ, তুমি জান্নাতের দরজা খুলে দাও। এই পৃথিবী আর গাজাবাসীর জন্য নয়। আমরা পারিনি, আমরা পারলাম না।’

আক্ষেপ ও অসহায়ত্বের কথা উল্লেখ করে ঢালিউডের আরেক চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ লিখেছেন, ‘গাজার আকাশের যে ধোঁয়া আর অশ্রুর বৃষ্টি সেই নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে আমরা শুধু প্রার্থনা করতে পারি, কাঁদতে পারি, আর চিৎকার করতে পারি। এই মানুষগুলোর অপরাধ কি শুধু এই যে, তারা নিজেদের মাটিতে বাঁচতে চায়?’

অভিনেত্রী জয়া আহসান একাধিক পোস্টে সমর্থন জানিয়েছেন গাজাবাসীর প্রতি। এক ফেসবুকে অভিনেত্রী প্রশ্ন রেখেছেন বিশ্বের বড় বড় নেতাদের প্রতি। জয়া লিখেছেন, ‘দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি সেনারা ১৫ জন জরুরি চিকিৎসাকর্মীকে হত্যা করেছে। গাজায় যে নিষ্ঠুর আর হৃদয়হীন গণহত্যা ইসরায়েল চালিয়ে আসছে, এটা তারই অংশ। পৃথিবীকে তারা ফিলিস্তিনিশূন্য করার নিয়ত নিয়ে নেমেছে।বিশ্ববাসীর প্রতিবাদে ইসরায়েল ভ্রূক্ষেপ করবে না, সেটা জানি। কিন্তু বাকি বিশ্ব? বিশ্বের বড় বড় নেতারা? এভাবে বেশুমার শিশুহত্যা, নারীহত্যা, গণহত্যা সবার চোখের সামনে চলতে থাকবে? মানুষের হৃদয়ের ওপর থেকে পর্দা সরুক। ফিলিস্তিনিরা মানুষের মতো বাঁচার সুযোগ পাক।’

পরিচালক আশফাক নিপুণও ফেসবুকে গাজার জন্য লিখেছেন, ‘দুইটা ভিডিও। একটায় গাজায় শিশু ভাইয়ের চিৎকার করে কান্নায় প্রবোধ দিচ্ছে আরেক শিশু।আরেকটায় গাজায় ধ্বংসস্তুপে বসে চোখে পানি নিয়ে কিছু একটা খেতে খেতে আবার কাঁদছে আরেক শিশু। এই দুই শিশুর কষ্টের অভিশাপে পাপীরা যেন শেষ হয়ে যায়! জুলুমের শেষ পরিণতি যেন দেখে যেতে পারে এই দুই শিশু সহ ফিলিস্তিনের লাখ লাখ মজলুম।’

গায়ক আসিফ আকবর গাজাবাসীদের নিয়ে লিখেছেন, ‘বিদায় রাফাহ্-গাজার জান্নাতি শহীদেরা। শ্রেষ্ঠ ধর্মের অনুসারী আর তাদের নিকৃষ্ট শাসকরা আনন্দে থাকুক জ্বলন্ত জমিনের দোজখে।’

নব্বইয়ের দশকের একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনও এক ভিডিও বার্তায় গাজার প্রতি নিজের সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়াও ঢাকার শোবিজের গাজার সমর্থনে সরব হয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং এর মধ্যেই এক দিনে আরও অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এতে করে ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ জনে পৌঁছে গেছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে শিবির ও ছাত্রদলে পৃথক কর্মসূচি
  • গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
  • ফিলিস্তিনেও একদিন ‘জুলাই’ আসবে
  • গাজায় নৃশংস হত্যার প্রতিবাদ বাসদের
  • ৬ দাবিসহ মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে মার্চ করবে আজাদ ফিলিস্তিন
  • গাজায় গণহত্যা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবাদের ঝড় 
  • নোয়াখালীতে শিক্ষার্থী-জনতার বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
  • গাজার জন্য ঢাকার শোবিজ তারকাদের মন কাঁদছে