লক্ষ্মীপুরে একটি বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না করায় দুই শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। গত সোমবার বেলা একটার দিকে সদর উপজেলার কামানখোলা অলিউল্যাহ মুসলিম পলিটেকনিক একাডেমিতে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম সাঈদ সারোয়ার ওরফে শুভ। তিনি সদর উপজেলার কামানখোলা বাজার এলাকার আবদুল আজিজের ছেলে ও স্থানীয় দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদায় অনুষ্ঠান চলাকালে লুঙ্গি পরা অবস্থায় হাতে একটি এসএস পাইপ নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন সাঈদ সারোয়ার। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে থাকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকদের কাছে জানতে চান তাঁকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। একপর্যায়ে পাইপ নিয়ে দুই শিক্ষকের দিকে তেড়ে যান তিনি। কিছুক্ষণ পর সাঈদ সারোয়ারের বাবা আবদুল আজিজও ঘটনাস্থলে আসেন। তিনিও এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেন।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি এসেই জানতে চান তাঁকে কেন দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এ সময় তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি আমাদের মারধর করতে আসেন। আমিসহ কয়েকজন শিক্ষক একটি কক্ষে ঢুকে কোনো রকম নিজেদের রক্ষা করি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘তিনি কেন এমন অশালীন আচরণ করেছেন জানি না। আমাকে মারতে তেড়ে এসেছেন, তাঁর বাবাও আমাকে মারধরের চেষ্টা করেন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাঈদ সারোয়ার বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই বিদ্যালয় গড়ে তুলেছেন। এরপরও বিদ্যালয়ের কোনো অনুষ্ঠানে আমাদের জানানো হয় না। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেছি, কাউকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ সত্য নয়।’ তিনি বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি বিগত দিনে বিদ্যালয়ের আয়–ব্যয়ের কোনো হিসাব দেননি। এখনো লুটপাট করে যাচ্ছেন।’

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মাকসুদুর রহমান বলেন, সাঈদ সারোয়ারের পূর্বপুরুষেরা বিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করেছেন। তাই বলে বিদ্যালয়ে ঢুকে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো খুবই নিন্দনীয়। তাঁদের পরিবারের একাধিক সদস্য বিদ্যালয়ে চাকরি করছেন।

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা (পশ্চিম) ছাত্রদলের সদস্যসচিব মিজানুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রদলে সাঈদের এখন কোনো পদপদবি নেই। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়াও সম্ভব নয়।’ লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আবদুল মোন্নাফ বলেন, ‘ঘটনাটি কেউ আমাকে জানায়নি। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঈদ স র য় র য় অন ষ ঠ ন ছ ত রদল

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়ার কুরস্কে সেনা মোতায়েনের কথা নিশ্চিত করল উত্তর কোরিয়া

রাশিয়ায় সেনা মোতায়েনের কথা প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ আজ সোমবার জানিয়েছে, পিয়ংইয়ংয়ের সেনারা ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন কুরস্ক সীমান্ত অঞ্চল পুনর্দখলে রাশিয়াকে সাহায্য করেছে।

এর কয়েক দিন আগেই উত্তর কোরিয়ার সেনাদের যুদ্ধে অংশ নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করে রাশিয়া। যদিও দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনেক আগে থেকেই জানাচ্ছিল, পিয়ংইয়ং গত বছর কুরস্কে ১০ হাজারেরও বেশি সেনা পাঠিয়েছিল।

উত্তর কোরিয়ার কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর উপদলটি রাষ্ট্রপ্রধানের নির্দেশ অনুযায়ী কুরস্ক এলাকা মুক্ত করতে অভিযানে অংশগ্রহণ করেছে।’

কেসিএনএ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনের সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ছিল পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির অধীনে।

কিম বলেন, ‘ন্যায়বিচারের জন্য যারা লড়ছে, তারা সবাই মাতৃভূমির গর্ব এবং সম্মানের প্রতিনিধিত্বকারী।’

আরও পড়ুন কুরস্ক ‘পুনর্দখলে’ রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সেনারা, প্রশংসায় মাতল মস্কো১৭ ঘণ্টা আগে

কিম আরও বলেছেন, যুদ্ধের বীরত্বগাথার স্মরণে রাজধানীতে শিগগিরই একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হবে। তিনি ‘শহীদ সেনাদের সমাধিফলক’ স্থাপনের কথাও উল্লেখ করেছেন। এতে প্রকাশ্যে নিশ্চিত করা হলো, যুদ্ধে উত্তর কোরীয় সেনারা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেনাদের পরিবারের প্রতি বিশেষ সম্মান দেখানো হবে এবং তাদের দেখভালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

আরও পড়ুনপুতিন একটা মহাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন?২৬ এপ্রিল ২০২৫

কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের মতে, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের দুঃসাহসী আক্রমণ প্রতিহত করে কুরস্ক অঞ্চল মুক্ত করার অভিযানে বিজয় হয়েছে।’

রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ গত শনিবার উত্তর কোরীয় সেনাদের ‘বীরত্বের’ প্রশংসা করে বলেছিলেন, তাঁরা ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর একটি দলকে পরাজিত করতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করেছে।

আরও পড়ুনইউক্রেনে রুশ যুদ্ধশিবির থেকে দুর্বিষহ জীবনের গল্প বললেন এই বাংলাদেশি তরুণ২৬ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ