গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের হাইকমিশনারকে তলব করাসহ  জবাবদিহি চাওয়াসহ ছয় দফা দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম আজাদ ফিলিস্তিন।

একইসঙ্গে নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা দাহ করাসহ মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে মার্চ করার ঘোষণা দিয়েছে প্লাটফর্মটি। 

সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টায় এক বিবৃতিতে প্লাটফর্মটির সংগঠক ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচি অনুযায়ী আগামীকাল মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এই পদযাত্রা শুরু হবে। 

আরো পড়ুন:

ঢাবি শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, প্রশাসনের স্থগিত

স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে কাল ঢাবিতে সংহতি সমাবেশ

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি, মার্কিন সহায়তায় চলমান গণহত্যার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এখন পর্যন্ত ইজরাইল এবং তার দোসর, বিশেষ করে আমেরিকার বিরুদ্ধে কোনো বিবৃতি দেয়নি। গণহত্যা বন্ধে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এছাড়াও আরও বেশ কিছু বিষয়ে আমরা রাষ্ট্রের ভয়াবহ গড়িমসি লক্ষ্য করছি।

এজন্য আগামীকাল ছয় দফা দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও, গাজায় চলমান গণহত্যার কুশীলব মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে মার্চ এবং নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা দাহ করবো। 

বিবৃতিতে আরো বলো হয়েছে, দাবিগুলো আদায় করা ব্যতিত শুধু আমেরিকান দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনের খুব বেশি কার্যকরিতা নেই। তাই আমরা প্রথমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমাদের দাবিগুলো নিয়ে যাব। এরপর সেখান থেকে মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে মার্চ করব।

প্লাটফর্মটির ছয় দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, অনতিবিলম্বে মার্কিন মদদে গাজায় চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানাতে হবে এবং বৈশ্বিক পরিমন্ডলে ফিলিস্তিনের পক্ষে জনমত গঠন ও কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে; আমেরিকান হাইকমিশনারকে তলব করে গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা করার জবাবদিহি চাইতে হবে; কালবিলম্ব না করে পাসপোর্টে পুনরায় ‘এক্সেপ্ট ইজরাইল’ কথাটি ফিরিয়ে আনতে হবে।

অন্য দাবিগুলো হলো, ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার অর্থের যোগানদাতা সকল পণ্য ও সেবাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কট করতে হবে এবং তাদের দোসরদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে; ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ইজরাইল থেকে আড়িপাতার যন্ত্রসহ কেনা অন্য যেসব গোপন চুক্তি করেছে, তা শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করতে হবে; ইজরাইলের মতো একই বর্বর কায়দায় গণহত্যা চালানোর দায়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলম ন গণহত য র প ল টফর ম

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সোমবার রাজধানীসহ সারা দেশে সাধারণ ধর্মঘট কর্মসূচি চলছে।

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে সোমবার তাদের কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না।

সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। তারা ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’, ‘ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’ স্লোগান দিচ্ছেন। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট থেকে তারা নিজ ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নেন। বিক্ষোভে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। 

সায়েন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোডেও বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

শাহবাগে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মিছিল নিয়ে আসে। কয়েকটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে দেখা যায়।

বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে, রাজু ভাস্কর্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন।

এদিকে এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জাদুঘর ও শাহবাগ এলাকায় পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের জলকামানের গাড়ি ও প্রিজন ভ্যানও দেখা গেছে।

বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে গুলশানে মার্কিন দূতাবাস এলাকায় মিছিল বের করে একদল তরুণ। মার্কিন দূতাবাসের সামনে মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বৈশ্বিক সংহতি জানিয়ে কালীগঞ্জে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। 

স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে ও গণহত্যার প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। উপাচার্য দীলিপ কুমার বড়ুয়ার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীগণ ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে মিছিলে অংশ নেন। সোমবার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিলটি বের হয়। এতে ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফ্রি ফ্রি গাজা, নো মোর ইসরায়েল’ ইত্যাদি শ্লোগান দেওয়া হয়।

এদিকে কাঁঠালিয়ায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি) 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে শিবির ও ছাত্রদলে পৃথক কর্মসূচি
  • গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
  • ফিলিস্তিনেও একদিন ‘জুলাই’ আসবে
  • গাজায় নৃশংস হত্যার প্রতিবাদ বাসদের
  • গাজায় গণহত্যা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবাদের ঝড় 
  • নোয়াখালীতে শিক্ষার্থী-জনতার বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
  • গাজার জন্য ঢাকার শোবিজ তারকাদের মন কাঁদছে 
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারা দেশে বিক্ষোভ