বদরগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ২
Published: 7th, April 2025 GMT
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে নিহত বিএনপি কর্মী লাভলু সরকারের ছেলে রায়হান কবীর বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক ওরফে মানিক (৫০), তাঁর ছেলে তানভীর আহম্মেদ ওরফে তমাল (৩২), বদরগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান ওরফে মানিকসহ (৫৫) ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।
এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের রাজারামপুর পাইটকাপাড়া গ্রামের মো.
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বদরগঞ্জ শহীদ মিনারের পাশে ইসতিয়াক হোসেনের একটি দোকানঘর রয়েছে। জাহিদুল হক নামের এক ব্যক্তি দোকানটি ভাড়া নিয়ে সেখানে ঢেউটিনের ব্যবসা করে আসছিলেন। এই দোকানকে কেন্দ্র করে ইসতিয়াক হোসেনের সঙ্গে ভাড়াটে জাহিদুল হকের লোকজনের মধ্যে ৪ এপ্রিল পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এরপর দোকানটি তালাবদ্ধ ছিল। গত শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপির সক্রিয় কর্মী লাভলু সরকারকে সঙ্গে নিয়ে ইসতিয়াক বাবু শহীদ মিনারের পাশে যান। তখন আসামিরা ছোরা, রামদা, হাসুয়া, চাপাতি ও লোহার রড নিয়ে অতর্কিত তাঁদের ওপর হামলা করেন। এতে মাথায় ছুরিকাঘাতে লাভলু সরকার মারা যান।
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ওই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মোরসালিন এজাহারনামীয় আসামি এবং হাবিবুর রহমান মন্ডলকে ভিডিও ফুটেজ দেখে ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের রংপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কাজ করছে।
আরও পড়ুনবদরগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার পর ৮ নেতা বহিষ্কার৬ ঘণ্টা আগেবদরগঞ্জ পৌর শহরে গত শনিবার দুপুরে বদরগঞ্জ শহীদ মিনারের পাশে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন স্থানীয় বিএনপি কর্মী উপজেলার মধুপুর কালজানি গ্রামের লাভলু সরকার (৫০)। ওই ঘটনার পর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের আট নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বদরগঞ জ ঘটন য় সরক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে লাভলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
মোহাম্মদ আলী সরকারের পক্ষের বিএনপি নেতা লাভলু মিয়া বদরগঞ্জের রাজরামপুর গ্রামের মৃত মহসিন আলীর ছেলে। পেশায় তিনি ইটভাটা ব্যবসায়ী ছিলেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের সর্দার রুমের ইনচার্জ সেলিম মিয়া।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বদরগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন একটি দোকানঘর নিয়ে ব্যবসায়ী জাহিদুল হক জোয়ারদার এবং দোকান মালিক ইশতিয়াক বাবুর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। ইশতিয়াক বাবু দোকানঘর ছাড়ার জন্য চাপ দিলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। বিষয়টি রাজনৈতিক রূপ নেয় যখন জাহিদুল হক আশ্রয় নেন কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শহিদুল হক মানিকের কাছে এবং দোকান মালিক ইশতিয়াক বাবু আশ্রয় নেন সাবেক এমপি ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকারের কাছে।
শনিবার দুপুরে দোকান খুলে দেওয়ার দাবিতে শহীদ মিনার এলাকায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বিএনপি নেতা শহিদুল হক মানিকের নেতৃত্বে জাহিদুল হকের অনুসারীরা। কিন্তু মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থকরা তা পণ্ড করে দেন। যার ফলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়, শুরু হয় দুই পক্ষেরই নেতাকর্মীদের দেশীয় অস্ত্রসহ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এসময় পৌরশহরের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করে। একপর্যায়ে সৃষ্ট সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন দু’জন পথচারীসহ অন্তত ১০ জন। এর মধ্যে বিএনপি কর্মী লাভলু মিয়া (৫০), মোক্তারুল ইসলাম (৪৫), মুন্নাফ আলী (৫০), শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও ময়নাল হোসেনকে (২৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় লাভলু মিয়া মারা যান। তারা সবাই উপজেলা বিএনপির নেতা ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের কর্মী-সমর্থক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুর দুইটার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ শহরে টহল শুরু করে।
বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান জানান, লাভলু মিয়ার মারা যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি, কিন্তু এখনও কাগজ হাতে পাইনি। এলাকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং দোষীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।