ঈদের ছুটিতে বরিশাল শের-ই-বাংলা হাসপাতালে ১৮৫ রোগীর মৃত্যু
Published: 7th, April 2025 GMT
ঈদের ছুটির আট দিনে বরিশাল শের-ই-বংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে মৃত্যুসহ বিভিন্ন কারণে ১৮৫ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ১ হাজার ৮৫০ জন রোগী ভর্তি আছে। ঈদের ছুটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স সংকটে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাননি বলে কয়েকজন রোগীর স্বজন অভিযোগ করেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগের দিন অর্থাৎ ৩০ মার্চ এ হাসপাতলে ২১ জন রোগীর মৃত্যু হয়। এ দিন এ হাসপাতালে ১ হাজার ৭৯৯ জন রোগী ভর্তি ছিল। ওই দিন নতুন করে ৪০৫ জন রোগী ভর্তি হয়। তবে ছাড়পত্র নিয়ে চলে যায় ৩৬৪ জন।
একইভাবে ঈদের দিন ৩১ মার্চ এখানে মৃত্যু হয় ১৯ জন রোগীর। এ দিন এ হাসপাতালে ভর্তি হয় ৪৪৬ জন। ঈদের পরের দিন ১ এপ্রিল মৃত্যু হয় ১৮ জনের। নতুন করে ভর্তি হয় ৫৯৪ জন রোগী।
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ
গোপালগঞ্জে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ১২ জনের হেলথ কার্ড প্রদান
২ এপ্রিল মৃত্যু হয় সর্বাধিক ২৮ জন রোগীর। এ দিন এ হাসপাতালে ভর্তি হয় সর্বাধিক ৭০০ রোগী। ৩ এপ্রিল এ হাসপাতালে মৃত্যু হয় ২৩ জনের। এ দিন এখানে নতুন করে ভর্তি হয় ৫৮৯ জন।
৪ এপ্রিল এ হাসপাতালে মৃত্যু হয় ২৮ জন রোগীর। নতুন করে ভর্তি হয় ৫১১ জন। ৫ এপ্রিল মৃত্যু হয় ২৫ জন রোগীর। নতুন করে ভর্তি হয় ৬৭৪ জন। এ দিন এ হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগী ছিল ১ হাজার ৭৯৯ জন। একইভাবে ৬ এপ্রিল মারা গেছে ২৩ জন রোগী।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ঈদের সময় হাসপাতালে ভর্তি থাকা প্রায় ২ হাজার রোগীর চিকিৎসার জন্য ৩০ থেকে ৩৫ জন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে ঈদের ছুটির সময় মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হলেও চিকিৎসা সেবায় ত্রুটি হয়নি বলে দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখানে স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন গড়ে ২০ জন রোগীর মুত্যু হয় বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে বরিশাল শের ই-বাঙলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মাহামুদ হাসান জানান, এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী ভর্তি হয়ে থাকে। কোনো কোনো সময় ভর্তি রোগীর সংখ্যা আরো বেশি হয়।
তিনি আরো জানান, ঈদের সময় যারা একেবারে মুমূর্ষু অবস্থায় থাকে, তাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়। কম অসুস্থরা ভর্তি হয় না। ছুটির দিনগুলোতে যে মৃত্যু হয়েছে, এটি স্বাভাবিক বলে জানান তিনি।
ঢাকা/পলাশ/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ র ছ ট জন র গ র
এছাড়াও পড়ুন:
নাফিজকে হত্যার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর ফার্মগেটে গোলাম নাফিজকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। একইভাবে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সেই সময়কার নৃশংস ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আরও দুই মাস বাড়ানো হয়েছে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ রোববার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর ফার্মগেটের পদচারী-সেতুর নিচে গুলিবিদ্ধ হন গোলাম নাফিজ। রিকশার পাদানিতে তাঁর মাথা এক পাশে ঝুলে ছিল, আরেক পাশে নিস্তেজ পা দুটি ঝুলছিল। ট্রাইব্যুনালে সেই ঘটনায় হওয়া মামলার সব আসামি পুলিশ সদস্য।
আজকের শুনানিতে প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন বলেন, আসামিদের কেউ গ্রেপ্তার হননি। অভ্যুত্থানের পর তাঁরা কর্মস্থলে যোগ দেননি। আজ এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিন মাস সময় চাইলে ট্রাইব্যুনাল তা অনুমোদন করেন।
পরে সাংবাদিকদের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার তদন্ত চলমান আছে। তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও আগে থেকেই পলাতক থাকার কারণে তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন, গোলাম নাফিজ গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও জীবিত ছিলেন। রিকশায় করে তাঁকে তিনটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। কোনো হাসপাতাল তাঁকে চিকিৎসা দেয়নি। তাঁকে একবার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলার, আরেকবার ম্যানহোলে তাঁর লাশ ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন‘শেষ দিন মনে কইরা তখনই “ইন্না লিল্লাহ...” পইড়া ফালছি’০৭ নভেম্বর ২০২৪এ ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের সময় সাভারে শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনকে পুলিশের একটি সাঁজোয়া যানের (এপিসি) ওপর থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ সদস্য সোহেল মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন ট্রাইব্যুনাল। চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৩ এপ্রিল সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একইভাবে গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলের ঘটনায় পুলিশ সদস্য নাসিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ১০ এপ্রিল সময় মঞ্জুর করা হয়েছে।
আজকের শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান, প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ, প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান, প্রসিকিউটর এস এম মইনুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।