কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পার হয়েছে গত ২০ মার্চ। এই ৯ বছরে মামলার তদন্ত সংস্থার পরিবর্তন হয়েছে চারবার আর তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন হয়েছে ছয়বার। সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে মামলাটির ষষ্ঠ তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন পিবিআইয়ের এক পরিদর্শক।

দায়িত্ব গ্রহণের সাত মাস পর নতুন তদন্ত কর্মকর্তা মো.

তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল আজ সোমবার কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসে।

মো. তরিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাত মাস আগে মামলাটির দায়িত্ব গ্রহণ করা হলেও বিভিন্ন কারণে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা হয়নি। আজ ঢাকা থেকে পিবিআইয়ের একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছি। এটা মামলার তদন্তের নিয়মিত কার্যক্রমের একটি অংশ। এরপর আমরা ঢাকায় ফিরে যাব। আমাদের সঙ্গে তনুর পরিবারের সদস্যদের কথা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। আমরা চেষ্টা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের শনাক্ত করার জন্য।’

আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তনুর ভাই আনোয়ার হোসেন (রুবেল) প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা ঢাকা থেকে আসবেন, সেটা আমাদেরকে আগে জানাননি। আজ দুপুরে ঘটনাস্থলে আসার পর আমাদের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিষয়টি জানিয়েছেন।’
বিকেল চারটার দিকে তদন্ত কর্মকর্তা তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেনের সঙ্গে তাঁর অফিসে গিয়ে কথা বলেন।

‘মামলার অগ্রগতি বলতে শুধুই তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন’

তনুর পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, গত ৯ বছরে এই হত্যা মামলার তদন্তে অগ্রগতি বলতে ‘তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন’ ছাড়া আর কিছুই হয়নি।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৯ বছরে মামলার অগ্রগতি বলতে শুধুই তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন। আমরা এসব নাটক আর দেখতে চাই না। খুনিদের বিচার চাই। আমার মেয়ে কবরে, আর খুনিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে—এ কথা ভাবতেই কষ্টে বুকটা ফেটে যায়।’

তনুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হত্যার ঘটনায় মামলা হওয়ার পর শুরুতে থানা–পুলিশ, পরে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দীর্ঘ সময় ধরে মামলাটি তদন্ত করেও কোনো কূলকিনারা পায়নি। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর তনু হত্যা মামলার নথি পিবিআইয়ের ঢাকা সদর দপ্তরে হস্তান্তর করে সিআইডি। প্রায় চার বছর মামলাটি তদন্ত করেছেন পিবিআই সদর দপ্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান। সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে মামলাটির ষষ্ঠ তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন মো. তরিকুল ইসলাম।

২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় টিউশনি করাতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি তনু। পরে খোঁজাখুঁজি করে সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরে ঝোপের মধ্যে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। তাঁকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়। পরদিন তাঁর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল ও ১২ জুন দুই দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তনুর মৃত্যুর কারণ খুঁজে না পাওয়ার তথ্য জানায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ।

২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর পোশাক থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। এ ছাড়া তনুর মায়ের সন্দেহ করা তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে ওই সময়ে তাঁদের নাম গণমাধ্যমকে জানায়নি সিআইডি।

আরও পড়ুনতনু হত্যার ৯ বছর: বিচার না পাওয়ার শঙ্কা মা–বাবার ২০ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনতনু হত্যাকাণ্ড নিয়ে আড়াই বছর পর তৎপর পিবিআই, মামলার এক সাক্ষীকে তলব২৪ জুলাই ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পর ব স আইড ৯ বছর

এছাড়াও পড়ুন:

মজিদের সেঞ্চুরিতে রূপগঞ্জের জয় 

আব্দুল মজিদের সেঞ্চুরিতে ভর করে শাইন পুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে জয় পেয়েছে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব। 

বিকেএসপিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে মজিদের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৬ উইকেটে ২৫০ রান করে রূপগঞ্জ। তাড়া করতে নেমে ২২২ রানে অলআউট হয় শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। 

শাইনপুকুরের তিন ব্যাটার ফিফটি করলেও কেউ লম্বা ইনিংস খেলতে না পারায় জয়ের দেখা পায়নি দলটি। মঈনুল ইসলাম তন্ময় ৫০, রাহিম আহমেদ ৫৩ ও শাহরিয়ার সাকিব ৫০ রান করেন।

আরো পড়ুন:

সাকিব-হামজাকে ঘিরে ‘অহেতুক’ বিভাজন রেখা

পিএসএল খেলতে নাহিদের আবেদন, বিসিবি সিদ্ধান্তহীনতায়

২১ রান আসে মিনহাজুল আবেদীনের ব্যাট থেকে। আর কেউ বিশের বেশি রান করতে পারেননি। রূপগঞ্জের হয়ে মাহমুদুল হাসান সর্বোচ্চ ৪ উইকেট ও আওলাদ হোসেন ৩ উইকেট নেন। 

এর আগে মজিদের শতকে ভর ২৫১ রানের লক্ষ্য দেয় রূপগঞ্জ। ১৩৯ বলে ১০২ রান করেন মজিদ। ৬টি চার ও ২টি ছয়ে সাজানো ছিল ইনিংসটি। ৫৬ রান করেন মাহমুদুল হাসান। 

নাসির হোসেন ২৩ ও আল আমিন ২২ রান করেন। শাইন পুকুরের হয়ে ২ উইকেট করে নেন শারিফুল ইসলাম ও আলী মোহাম্মদ ওয়ালিদ। 

ঢাকা/রিয়াদ/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ