সাবেক প্রতিমন্ত্রী কেরামত আলীকে কারাগারে পাঠালেন আদালত
Published: 7th, April 2025 GMT
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী কেরামত আলীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাঁকে রাজবাড়ী সদর আমলি আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গতকাল রোববার রাতে ঢাকা মহানগরের গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাঁকে মহাখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে রাজবাড়ী থেকে পুলিশের একটি দল তাঁকে আনতে ঢাকায় যায়। কাজী কেরামত আলীর বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা আছে।
আজ সোমবার সকাল নয়টার দিকে কাজী কেরামত আলীকে রাজবাড়ী কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো.
কাজী কেরামতের জামিনের বিরোধিতা করেন আইনজীবী নেকবার হোসেন। তিনি বলেন, কাজী কেরামত এবং তাঁর ভাই কাজী ইরাদতসহ কাজী পরিবার জেলার রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। ১৫ বছর ৭ মাসের ক্ষমতায় তাঁরা সব ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতেন। চাকরি, টেন্ডার বাণিজ্য, বালু মহাল দখলসহ সব ক্ষেত্রে তাঁরা নিয়ন্ত্রণ করতেন।
আরও পড়ুনঢাকায় গ্রেপ্তারের পর সাবেক এমপি কেরামত আলী রাজবাড়ীর আদালতে৪ ঘণ্টা আগেরাজবাড়ী আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, রাজবাড়ী সদর থানায় ৩০ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী রাজীব মোল্লার দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি ছিলেন কাজী কেরামত আলী। মামলায় ১৭০ জনকে চিহ্নিত এবং অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। ১৮ জুলাই বেলা ৩টার দিকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের রাজবাড়ী শহরের বড়পুল এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে ছাত্র-জনতা, শিক্ষক, অভিভাবক সমবেত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর মামলার আসামিরা দেশি অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকার সুরক্ষায় কাজ করবে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’
ক্যাম্পাসে মানবাধিকার সুরক্ষা ও সচেতনতা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’। রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রার কথা জানানো হয়।
‘রাইজ ফর রাইটস (অধিকারের জন্য জাগো)’ স্লোগানকে সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার সংগঠনটির ২৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। রোববার সংবাদ সম্মেলনে ওই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নতুন এই সংগঠনের আহ্বায়ক হয়েছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তাহমিদ সাকিব। সদস্যসচিব করা হয়েছে ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার বিভাগের শিক্ষার্থী পত্র নন্দিতাকে। এ ছাড়া ইসমাঈল নাহিদ যুগ্ম আহ্বায়ক আর রুকাইয়া রচনা যুগ্ম সদস্যসচিব হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে গণরুম, গেস্টরুম সংস্কৃতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে আর কখনো এই সংস্কৃতি যেন ফেরত না আসে, সেই লক্ষ্যে কাজ করবে সংগঠনটি।
সংগঠনের আহ্বায়ক তাহমিদ সাকিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, সংখ্যালঘু অধিকারও জাতিগত সম্প্রীতি রক্ষা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহায়তা ও প্রয়োজনে আইনি পরামর্শ প্রদানসহ ক্যাম্পাসে মানবাধিকার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করবে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটলে সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
তাহমিদ সাকিব বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনাগুলো আমরা দেখেছি। বিভিন্ন সময় যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেগুলোর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা আমরা দেখিনি। নারী শিক্ষার্থীরা এখনো ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। অসংখ্য নারী নিপীড়নের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের ঘটনা আমরা দেখি না। এই সংগঠনটি এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্যসচিব পত্র নন্দিতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা কম নয়, বরং অহরহ ঘটে। বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিসরে। এর বাইরে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতেও এটা বিদ্যমান। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি, ডকুমেন্টেশন এবং অধিকার আদায়ে কাজ করবে তাঁদের এই সংগঠন।
আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে আরও আছেন তাপসী রাবেয়া, হুরে জান্নাত, তাজফিহা উখরোজ, সামিয়া মাসুদ, সুরমি চাকমা, নাফিসা নুজহাত, ইসরাত জাহান, আবদুল্লাহ আজিমসহ আরও অনেকে।