নির্বাচনী ব্যয় যথাসম্ভব ন্যূনতম রাখাসহ সব প্রার্থী যেন সমানভাবে প্রচার চালাতে পারেন, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিমালা তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আচরণ বিধিমালার খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন তা অনুমোদনের জন্য নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন করা হবে।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ-সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার মো.

আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

বর্তমানে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা আছে। তবে নতুন নির্বাচন কমিশন এটি সংশোধন করে নতুন আচরণবিধিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এই বিধিমালা চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

দলগুলোর মতামত ছাড়াই আচরণবিধিমালার খসড়া চূড়ান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আমরা পরবর্তী সময়ে সব স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) সঙ্গে বসব। তখনকার অবস্থাই বলবে কী করতে হবে।’

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের অধিকাংশ সুপারিশ প্রস্তাবিত আচরণবিধিমালায় যুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, একটি চমৎকার আচরণবিধিমালা হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।

খসড়া চূড়ান্ত না হওয়ায় আচরণবিধিমালা নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাননি আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড—সব প্রার্থী সমানভাবে প্রচার-প্রচারণা করতে পারবে, সে ধরনের অ্যাটিটিউড (মনোভাব) নিয়ে আমরা আচরণবিধিমালা করতে চাচ্ছি।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের বিষয়টিও যাতে ‘নিয়ন্ত্রণের’ মধ্যে থাকে, সে বিষয়টিও প্রস্তাবিত খসড়ায় রাখা হয়েছে বলে জানান আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। আচরণবিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ কঠোরতা যেন নিশ্চিত করা যায়, সে জন্য এ-সংক্রান্ত শাস্তির বিধান খসড়ায় থাকছে।

আগামী ডিসেম্বরে ভোটের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত সংশোধন প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি। সরকারের তরফ থেকে আইন সংশোধন হয়ে এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা না হলে বিদ্যমান সীমানায় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে কমিশন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আচরণব ধ ম ল প রস ত

এছাড়াও পড়ুন:

অটিস্টিক শিশুদের ভাষা সমস্যায় মা–বাবার করণীয়

অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বা অটিজম হচ্ছে শিশুদের মস্তিষ্কের বর্ধনমূলক বা বিকাশমূলক বৈকল্যের একটি সমষ্টিগত অবস্থা, যা প্রধানত মাতৃগর্ভকালীন সৃষ্টি হয় ও জন্মের পর প্রাথমিক কিছু উপসর্গ দিয়ে এই রোগের লক্ষণের প্রকাশ ঘটে। লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘ভাষার সমস্যা’। ভাষা হচ্ছে যোগাযোগের অর্থাৎ মনের আবেগ ও চিন্তা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। ভাষার মাধ্যমে আমরা আমাদের মৌলিক আবেগ–আকাঙ্ক্ষা অর্থাৎ মনোগত অবস্থা, যেমন চিন্তা, অভিপ্রায়, কামনা, অভিলাষ, স্বপ্ন, কল্পনা ও ছলনা ইত্যাদি অন্যের কাছে প্রকাশ করি এবং অন্যের মনেও যে এগুলোর অস্তিত্ব আছে, তা বুঝতে পারি। যোগাযোগ ও সামাজিকতা তখনই একটি মানুষের স্বয়ংসম্পূর্ণ ও অর্থবোধক হয়, যখন ভাষার বাচনিকতার সঙ্গে অবাচনিকতার বিভিন্ন উপাদান যুক্ত হয়ে অন্যের কাছে অর্থবহ রূপে প্রতিবেশ ও পরিবেশ অনুযায়ী প্রকাশ হয়।

চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসার মাধ্যমে ‘অর্থবহ জীবন’ প্রদান করা।

প্রকৃতির সহজাত নিয়মে যখন কোনো শিশু চিন্তা ও আবেগ অন্যের কাছে প্রকাশ করতে না পারবে, তখন তার আচরণগত সমস্যা তৈরি হবে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের ভাষা বিকাশ ও প্রকাশে লক্ষণীয় ত্রুটি দেখা যায়। ফলে এই শিশুদের মধ্যে কিছু অকার্যকর বা অনুপোযোগী আচরণ, যেমন বারবার পুনরাবৃত্তি, অন্তর্ঘাতমূলক, আগ্রাসনমূলক আচরণ পরিলক্ষিত হয়, যা তার দৈনন্দিন জীবনপ্রবাহে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।

এ ধরনের সমস্যা একটি শিশুর নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতা থেকে শুরু করে তার সামাজিক দক্ষতা ও বুদ্ধিদীপ্ততার সার্বিক বিচ্যুতি বা বিকারের পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে। আর এর মাত্রা হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন, যা নির্ভর করে একটি শিশুর ভাষা আয়ত্তকরণের উপায়গুলো অর্থাৎ ধ্বনি, শব্দ, বাক্য ও অর্থের ওপর।

মা–বাবার করণীয়

কোনো শিশুর মধ্যে ‘ভাষা সমস্যা’ পরিলক্ষিত হলে তার চিকিৎসা শুরুর আগে উচিত রোগ নির্ণয় করা। শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত কি না, নির্ণয় করতে হবে এবং স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি নেওয়ার উপযোগী কি না, সেটাও নির্ণয় করতে হবে। এটি নির্ণয় করবেন একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং প্রয়োজনে ওষুধও প্রদান করবেন অকার্যকর বা অনুপযোগী আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য।

একজন চিকিৎসা ভাষাবিদ একটি শিশুর মধ্যে ভাষার উপাত্তগুলোর কোনটি, কতটুকু আক্রান্ত হয়েছে, তা খুঁজে বের করেন এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসাব্যবস্থা ‘স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি’ দিয়ে থাকেন। যত তাড়াতাড়ি একটি শিশুর এ উপাত্তগুলো খুঁজে বের করে চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে, তত তাড়াতাড়ি শিশুর আচরণগত অবস্থার উন্নতি হবে। কারণ, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে উপাত্তগুলোর কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য অটিজমে আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসার মাধ্যমে ‘অর্থবহ জীবন’ প্রদান করা, যাতে সে পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বোঝা না হয়ে যায়।

ডা. ফাহমিদা ফেরদৌস, চিকিৎসা ভাষাবিদ ও মানসিক রোগবিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক (মানসিক রোগ বিভাগ), জেড এইচ সিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনের প্রচারণায় থাকছে না পোস্টার: ইসি আনোয়ারুল ইসলাম 
  • আগামী নির্বাচনি প্রচারনায় থাকছে না পোস্টার: ইসি আনোয়ারুল ইসলাম 
  • নির্বাচনি প্রচারে পোস্টার না রাখার কথা ভাবছে ইসি
  • শিকলবন্দি বাবুল বৈষ্ণব
  • সপ্তাহের প্রথম দিনেই এশিয়ার শেয়ার বাজারে বড় ধস, কমেছে তেলের দাম
  • দল নিবন্ধন ও আচরণবিধি নিয়ে আজ বৈঠক করবে ইসি
  • ভারতের ‘বিতর্কিত’ ওয়াক্ফ বিল মুসলমানদের প্রতি আইনি সহিংসতা: বিবৃতিতে ইয়াং মুসলিম ইন্টেলেজেনশিয়া
  • অটিস্টিক শিশুদের ভাষা সমস্যায় মা–বাবার করণীয়
  • এমবাপ্পে-রুদিগার-সেবালোসকে জরিমানা, রিয়ালের স্বস্তি