৮ মাসের শিশুকে অপহরণের পর বিক্রি, ৮ দিন পর যশোর থেকে উদ্ধার
Published: 7th, April 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় ভাড়া বাসা থেকে ৮ মাসের শিশুকে অপহরণের পর বিক্রি করা হয়। এ ঘটনার ৮ দিন পর যশোর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে অপহরণ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে রায়গঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
উদ্ধার হওয়া শিশু দিঘী মনি সিরাজগঞ্জ শহরের গয়লা মহল্লার বাপ্পী মণ্ডলের মেয়ে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বগুড়ার ধুনট উপজেলার চরখাদুলী গ্রামের মৃত গোলজার সেখের ছেলে কালাম সেখ (৪০) ও একই উপজেলার কুড়িগাঁতি গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে হারুন অর রশিদ (৪৪)।
রায়গঞ্জ থানার ওসি জানান, বাপ্পী মণ্ডল তার স্ত্রী মরিয়ম খাতুন ও মেয়ে শিশু দিঘি মনিকে নিয়ে রায়গঞ্জ উপজেলার রনতিথা গ্রামের বাদশা মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকতেন। ৩০ মার্চ দুপুরে শিশুটির মাকে ঘোল (মাঠা) খাইয়ে অচেতন করে অপহরণ চক্রটি। পরে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে পর দিন থানায় মামলা করেন। এর পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত শুক্রবার রংপুর থেকে কালাম সেখকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রায়গঞ্জ থেকে এ চক্রের অপর সদস্য হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার দুপুরে যশোরের কোতোয়ালি উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের সামিউল ইসলামের হেফাজত থেকে অপহৃত শিশু দিঘি মনিকে উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরও বলেন, ৪২ বছর বয়সী সামিউল ইসলাম নিঃসন্তান। ভুয়া বাবা-মা সেজে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তি করে ৮০ হাজার টাকায় তার কাছে শিশু বিক্রি করা হয়েছিল। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ যশ র র য়গঞ জ উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পাংশা থানার ওসি, এসআইসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজবাড়ীতে এক গৃহবধূকে (২৫) আটক করে অপহরণ, ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও একই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হিমাদ্রি হাওলাদারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি করেন। বিচারক শেখ মফিজুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুর কার্যালয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আরেক আসামি হলেন পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামের এতেম শেখের ছেলে আরিফ হোসেন।
তবে পাংশা থানার ওসির দাবি, মামলার বাদী গৃহবধূ ও তাঁর স্বামী একটি অপহরণ মামলার নিয়মিত আসামি। ওই গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করায় তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।
গৃহবধূর করা মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, ২ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নির্দেশে এসআই হিমাদ্রি হাওলাদার ও সহযোগী আরিফ হোসেন ওই গৃহবধূর বাড়িতে প্রবেশ করেন। এ সময় এসআই হিমাদ্রি ও সহযোগী আরিফ হোসেন ওই গৃহবধূর বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে তাঁর স্বামীকে খোঁজার অজুহাতে তল্লাশি চালান। একপর্যায়ে গৃহবধূর স্বামীকে না পেয়ে তাঁরা গৃহবধূকে জাপটে ধরে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তাঁরা ওই গৃহবধূকে টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করার সময় তিনি ওয়ারেন্ট দেখতে চান। এ সময় তাঁরা জানান, ওসির নির্দেশে ওয়ারেন্ট ছাড়াই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পরে তাঁকে থানায় এনে শারীরিক, মানসিক ও দৈহিক নির্যাতন চালানো হয়।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, স্বজনসহ সাক্ষীরা ওই গৃহবধূকে ছাড়িয়ে আনার জন্য থানায় গেলে ওসি, এসআই ও সহযোগী আরিফ তাঁদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে এসআই হিমাদ্রি ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে মুচলেকার মাধ্যমে গৃহবধূকে ছেড়ে দেন। তবে দাবি করা মোটা অঙ্কের টাকা না দিলে গৃহবধূর স্বামীকে গ্রেপ্তার করে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জাহিদ উদ্দিন মোল্লা বলেন, ট্রাইব্যুনালের বিচারক গৃহবধূর করা মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুর কার্যালয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, উপজেলার মাছপাড়ার এক কিশোরী (১৭) অপহরণের ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলার ৩ নম্বর আসামি ওই নারীর স্বামী এবং ৫ নম্বর আসামি ওই নারী। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন এসআই হিমাদ্রি হাওলাদার। ওসি বলেন, তদন্তে জানতে পারেন অপহৃত কিশোরী ওই নারীর কাছে আছে। ৩ এপ্রিল রাতে অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে আটক করে থানায় আনার পর ছাড়িয়ে নিতে নানা স্থান থেকে ফোন করা হয়। তাঁদের কথামতো পরদিন ৪ এপ্রিল কিশোরীকে এলাকায় দিয়ে তাঁদের জিম্মায় ওই গৃহবধূকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি থানা থেকে ছাড়া পেয়েই মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশকে হয়রানি করছেন। বিষয়টি আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন বলে জানান ওসি।