‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে ক্লাস বর্জন করলে শিক্ষার্থীদের ডাবল অ্যাবসেন্ট দেওয়ার হুমকি দেওয়া সেই শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ)। 

আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র এবং এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাহমিনা রহমানকে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় নিয়ম মেনে তাকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হবে।

তাহমিনা রহমান বিশ্ববিদ্যালয়টির জার্নালিজম, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রভাষক ছিলেন।

জানা যায়, ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরায়েলের চলমান নৃশংস গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এবং মজলুম ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচি পালন করতে সোমবার ক্লাস না করার সিদ্ধান্ত নেন ড্যাফোডিলের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানার পর প্রভাষক তাহমিনা শিক্ষার্থীদের গ্রুপে জানান, ক্লাসে না আসলে ডাবল অ্যাবসেন্ট দেওয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি কথপোকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে তীব্র সমালোচনার মুখে কর্তৃপক্ষ তাকে বরখাস্ত করল।

যদিও এ ঘটনায় শিক্ষিকা তাহমিনা রহমান দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমার কথার ভুল বোঝাবুঝির কারণে যে গভীর কষ্ট ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য আমি গভীরভাবে দুঃখিত। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন। আমি কখনোই ফিলিস্তিন ও গাজার মজলুম মুসলিমদের ওপর নিকৃষ্ট ইসরাইলের ঘৃণিত হত্যাযজ্ঞ সমর্থন করিনি, এখনও করি না, কখনোই করব না।’

তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে স্ক্রিনশটগুলো ছড়িয়ে পড়েছে, তা তার প্রকৃত মনোভাবের প্রতিফলন নয়। তার কথাগুলো ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

তাহমিনা বলেন, ‘আমি নিঃসন্দেহে গাজা ও তার জনগণের পাশে আছি। তাদের ন্যায্য অধিকার, স্বাধীনতা এবং জীবনের নিরাপত্তার পক্ষে আমি সবসময়ই দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছি ও ভবিষ্যতেও নেব।’

তিনি তার ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থীর সিদ্ধান্তকে শুরুতে একটি ছোট পরিসরের বিষয় বলে ভেবেছিলেন, যা পরবর্তীতে একটি বৈশ্বিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেখা দেয়। তিনি স্বীকার করেন, বিষয়টি পুরোপুরি না বোঝার কারণে তার প্রতিক্রিয়া যথাযথ ছিল না এবং সে জন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

তার এই ব্যাখ্যা ও দুঃখ প্রকাশের মাধ্যমে তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমার শিক্ষার্থী, সহকর্মী, বন্ধু এবং যারা এই ঘটনায় কষ্ট পেয়েছেন, তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনারা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল বরখ স ত রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড

গাজীপুরে রাতের আঁধারে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রির দায়ে ১০ জন মাটি খেকোকে এক মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গাজীপুর মহানগরের কারখানা বাজার, কড্ডা ব্রিজ, বাইমাইল, কোনাবাড়ি ও ইসলামপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে এ দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

গাজীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মামুনুর রশিদের ভ্রাম্যমাণ আদালত এ আদেশ প্রদান করেন। সোমবার সকালে দণ্ডপ্রাপ্তদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে চারটি ট্রাক জব্দ করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ইউএনও শেখ মামুনুর রশিদ জানান, রাতের আঁধারে ওই সকল এলাকায় ফসলি জমি থেকে অপরিকল্পিতভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছিল। রোববার মধ্য রাতের পর এমন খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় ১০ জনকে হাতেনাতে ধরা হয়। পরে ওই ১০ জনকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

অভিযানে এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মঈন খান এলিস, টঙ্গী (রাজস্ব) সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইদুজ্জামান হিমু ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ