কোরিয়া, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬০ জন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা বা কেইপিজেড ঘুরে দেখেন।

সরেজমিন এই পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বিনিয়োগ সম্মেলনের অনানুষ্ঠানিক যাত্রা। আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করা হবে আগামী বুধবার। রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ওই দিন সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’ শীর্ষক এ বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এ সম্মেলন আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে।

সম্মেলনের অনানুষ্ঠানিক যাত্রার প্রথম দিনে আজ দেশি-বিদেশি আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের চট্টগ্রামের দুটি বিশেষ শিল্প এলাকা পরিদর্শন করানো হয়। এদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এসব বিনিয়োগকারীরা কেইপিজেডে অবস্থিত ইয়াংওয়ান করপোরেশনের বিভিন্ন কারখানা ঘুরে দেখেন। কারখানা পরিদর্শন শেষে ইয়াংওয়ান করপোরেশনের পক্ষ থেকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে কেইপিজেডে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়।

প্রসঙ্গত, বেসরকারি বিদেশি বিনিয়োগকারীর উদ্যোগে গড়ে তোলা কেইপিজেড পরিচালনা করে কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত শিল্পগ্রুপ ইয়াংওয়ান করপোরেশন।

পরিদর্শনকালে আগ্রহী বিনিয়োগকারীরা ইয়াংওয়ান গ্রুপের বিনিয়োগ, উৎপাদিত পণ্য, রপ্তানির পরিমাণ, কর্মসংস্থান, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কী কী বাধা ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চান।

ইয়াংওয়ান কর্তৃপক্ষ ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৭০ লাখ বর্গফুটের বেশি আয়তনের কেইপিজেডে ৪৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সব কটি প্রতিষ্ঠানই সবুজ শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই তৈরি পোশাক খাত–সংশ্লিষ্ট। এর বাইরে জুতা ও ব্যাগের একাধিক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় সব মিলিয়ে প্রায় ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

শুধু কারখানা গড়ে তোলার মধ্যে নিজেদের কর্মকাণ্ড সীমিত রাখেনি ইয়াংওয়ান গ্রুপ। কেইপিজেড এলাকায় শ্রমিকদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ১০০ শয্যার হাসপাতাল। রয়েছে কর্মকর্তাদের আবাসন, বিনোদন সুবিধা ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র। নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে ৬০০ শয্যার হাসপাতাল ও টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট।

বিদেশি বিনিয়োগে গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীরাও কর্মক্ষেত্র নিয়ে তাঁদের ব্যাপক সন্তুষ্টির কথা তুলে ধরেন পরিদর্শনকারী দেশি–বিদেশি আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের কাছে।

বিনিয়োগ বাধা কী? কিহাক সাংয়ের উত্তর

চার ঘণ্টার বেশি কেইপিজেড এলাকা পরিদর্শন শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইয়াংওয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান কিহাক সাং।

এ সময় চীনের একজন বিনিয়োগকারী প্রতিনিধি তাঁর কাছে জানতে চান, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি অন্যতম প্রধান বাধা কী মনে করেন? জবাবে কিহাক সাং বলেন, প্রশাসনিক জটিলতা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। তবে এই বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ লাভজনক বিনিয়োগের জন্য উত্তম গন্তব্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ কারণে তিনি এ দেশে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সম্প্রসারণ করছেন বলে জানান।

কেইপিজেড পরিদর্শন শেষে এদিন অর্ধশতাধিক দেশি–বিদেশি বিনিয়োগকারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনে যাওয়ার কথা আছে।

এদিকে বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজক প্রতিষ্ঠান বিডা জানিয়েছে, দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনে বিশ্বের ৫০টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। এ জন্য সরাসরি বিনিয়োগ করবেন এমন বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিশ্বের নামীদামি বেশ কিছু কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহী কিংবা প্রতিনিধিরাও নিবন্ধন করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে মামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক: ফারুকী

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর মিরপুরে মাহফুজ আলম শ্রাবণ হত্যার অভিযোগে অভিনেতা ইরেশ যাকেরসহ ৪০৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।‎ গত ২০ এপ্রিল নিহতের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন।

ইরেশ যাকের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বিনোদন অঙ্গনের অনেক তারকারাই কথা বলছেন। এবার সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সোমবার (২৮ এপ্রিল) সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এ সময় ইরেশ যাকেরের মামলার বিষয়টি উঠে আসে।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এখন নিজে সরকারের অংশ; অ্যাক্টিভিসস্ট নই। যে কারণে কথা কম বলে কাজ বেশি করতে হবে। ইরেশ যাকেরকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। জানি, তিনি জুলাইয়ের আন্দোলনেও জড়িত ছিলেন। ফলে তার বিরুদ্ধে এই মামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, মামলা করেছেন একজন ব্যক্তি। এটি রাষ্ট্রপক্ষ কিংবা সরকারের দেওয়া মামলা না। এখন মামলা করার স্বাধীনতা পেয়েছি সবাই। কেউ কেউ এটার অপব্যবহার করছে। আমি বিশ্বাস করি পুলিশ এটির সঠিক তদন্ত করে, যেটি সত্য সেটির পক্ষে থাকবে আর যেটি মিথ্যা সেটি বাতিল করে দেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ