ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সোমবার রাজধানীসহ সারা দেশে সাধারণ ধর্মঘট কর্মসূচি চলছে। সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের শোবিজ তারকারাও। গাঁজাবাসীর জন্য মন কাঁদছে জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়েছেন শাকিব খান, সিয়াম আহমেদ, আফরান নিশো ও আরিফিন শুভর মত তারকারা। 

দেশের শীর্ঘ নায়ক শাকিব  খান নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে  লিখেছেন, ‘গাজা শুধু একটি ভৌগোলিক নাম নয়, এটি যেন আজ নির্যাতিত মানুষের প্রতীক! দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা হচ্ছে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করতে না পারা! তাদের পাশে আছি - ভালোবাসা, সংহতি, আর শান্তির প্রত্যাশায়।’

চিত্রনায়িকা সিয়াম আহমেদ দীর্ঘ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমি যখন এই পোস্ট লিখছি, ততক্ষণে গাজার অস্তিত্ব কি মুছে গেছে? আমরা কি পারলাম না এই শহরটাকে, এই দেশটাকে বাঁচাতে? ফিলিস্তিনের এই ধ্বংসাবশেষের দায় কি আমরা কেউ এড়াতে পারব? ফিলিস্তিনের জন্য আমার মনের কান্না কখনো থামাতে পারিনি।’

এ হত্যাকাণ্ডের দায় কেউ এড়াতে পারে না বলে মনে করেন সিয়াম। এই চিত্রনায়ক লিখেছেন, ‘এই যে ঈদের পরপরই তাদের ওপর নরক নেমে এল, তার দায় কি এই পৃথিবী নেবে না?’

সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা জানিয়ে সিয়াম লিখেছেন, ‘আল্লাহ, তুমি জান্নাতের দরজা খুলে দাও। এই পৃথিবী আর গাজাবাসীর জন্য নয়। আমরা পারিনি, আমরা পারলাম না।’

আক্ষেপ ও অসহায়ত্বের কথা উল্লেখ করে ঢালিউডের আরেক চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ লিখেছেন, ‘গাজার আকাশের যে ধোঁয়া আর অশ্রুর বৃষ্টি সেই নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে আমরা শুধু প্রার্থনা করতে পারি, কাঁদতে পারি, আর চিৎকার করতে পারি। এই মানুষগুলোর অপরাধ কি শুধু এই যে, তারা নিজেদের মাটিতে বাঁচতে চায়?’

অভিনেত্রী জয়া আহসান একাধিক পোস্টে সমর্থন জানিয়েছেন গাজাবাসীর প্রতি। এক ফেসবুকে অভিনেত্রী প্রশ্ন রেখেছেন বিশ্বের বড় বড় নেতাদের প্রতি। জয়া লিখেছেন, ‘দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি সেনারা ১৫ জন জরুরি চিকিৎসাকর্মীকে হত্যা করেছে। গাজায় যে নিষ্ঠুর আর হৃদয়হীন গণহত্যা ইসরায়েল চালিয়ে আসছে, এটা তারই অংশ। পৃথিবীকে তারা ফিলিস্তিনিশূন্য করার নিয়ত নিয়ে নেমেছে।বিশ্ববাসীর প্রতিবাদে ইসরায়েল ভ্রূক্ষেপ করবে না, সেটা জানি। কিন্তু বাকি বিশ্ব? বিশ্বের বড় বড় নেতারা? এভাবে বেশুমার শিশুহত্যা, নারীহত্যা, গণহত্যা সবার চোখের সামনে চলতে থাকবে? মানুষের হৃদয়ের ওপর থেকে পর্দা সরুক। ফিলিস্তিনিরা মানুষের মতো বাঁচার সুযোগ পাক।’

পরিচালক আশফাক নিপুণও ফেসবুকে গাজার জন্য লিখেছেন, ‘দুইটা ভিডিও। একটায় গাজায় শিশু ভাইয়ের চিৎকার করে কান্নায় প্রবোধ দিচ্ছে আরেক শিশু।আরেকটায় গাজায় ধ্বংসস্তুপে বসে চোখে পানি নিয়ে কিছু একটা খেতে খেতে আবার কাঁদছে আরেক শিশু। এই দুই শিশুর কষ্টের অভিশাপে পাপীরা যেন শেষ হয়ে যায়! জুলুমের শেষ পরিণতি যেন দেখে যেতে পারে এই দুই শিশু সহ ফিলিস্তিনের লাখ লাখ মজলুম।’

গায়ক আসিফ আকবর গাজাবাসীদের নিয়ে লিখেছেন, ‘বিদায় রাফাহ্-গাজার জান্নাতি শহীদেরা। শ্রেষ্ঠ ধর্মের অনুসারী আর তাদের নিকৃষ্ট শাসকরা আনন্দে থাকুক জ্বলন্ত জমিনের দোজখে।’

নব্বইয়ের দশকের একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনও এক ভিডিও বার্তায় গাজার প্রতি নিজের সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়াও ঢাকার শোবিজের গাজার সমর্থনে সরব হয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং এর মধ্যেই এক দিনে আরও অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এতে করে ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ জনে পৌঁছে গেছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ফ সব ক র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা বললে সরকার পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুললে সরকার পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ‘দোহাই’ দেয় বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। আজ শুক্রবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সমাবেশে এ কথা বলেছেন তিনি। ‘জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে’ এই সমাবেশের আয়োজন করে ইনকিলাব মঞ্চ।

আজ শাহবাগে এই উন্মুক্ত প্রান্তরে তাঁরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেটা ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে পূরণ হওয়ার কথা ছিল বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন সারজিস আলম। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যখনই তাদের কাছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তারা আমাদের পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়।’ এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘যখন শাপলা চত্বর, পিলখানা এবং জুলাইয়ে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, তখন পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কোথায় ছিল?’

তবে সারজিস আলম তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নিয়ে এই অবস্থান ব্যক্তকারী হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা উপদেষ্টা কিংবা পশ্চিমা কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি।

এ সময় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে সারজিস বলেছেন, ‘এই জেনারেশনকে (প্রজন্ম) ভয় করুন। যদি এই জেনারেশনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আবেগ নিয়ে খেলা করেন, তাহলে এই জেনারেশন সকল ক্ষমতার বিপক্ষে গিয়ে যে কাউকে টেনেহিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারে।’

এই সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহসমন্বয়ক মোসাদ্দেক ইবনে আলী বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর একটি রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে, তারা বিদেশি দূতাবাসগুলোর কাছে নিজেদের শির দাঁড়া বিক্রি করে দিয়েছে। দল গঠনের পর তারা দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়, কিন্তু কোথাও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা ছিল না। এই সরকারের ঘুড়িটা অন্তর্বর্তীকালের মধ্যে ঘুরলেও তার নাটাইটা বিদেশি কোনো দূতাবাসের হাতে রয়েছে।

সরকার কোন কোন বিচার করছে এবং সেটা কতখানি হয়েছে, তা স্পষ্ট করে বলার দাবি জানান এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন, পৃথিবীতে অনেক ফ্যাসিবাদী দলকে চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের নজির আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সেই নিয়মেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

‘জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে’ সমাবেশে উপস্থিত দর্শকদের একাংশ। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন: মামুনুল হক
  • জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
  • আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে আপ বাংলাদেশের মিছিল
  • ফিলিস্তিনে নির্বিচার মুসলিম গণহত্যা বন্ধের দাবিতে মহাসমাবেশ
  • ‘ম্যাস গ্যাদারিং ফর প্যালেস্টাইনে’ জনতার ঢল, বিশ্বমুসলিম ঐক্যের আ
  • ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ 
  • নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচার দাবি
  • প্রশাসন আগের মতো দলবাজি শুরু করছে: নুরুল হক
  • সংস্কার-নির্বাচনের খেলা বাদ দিয়ে বিচার করুন: সারজিস
  • আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা বললে সরকার পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়