নাটক নয়, মিরাক্কেলের জামিল সত্যিই বিয়ে করলেন
Published: 7th, April 2025 GMT
বহু নাটকে বর-বধূর সাজে সেজেছেন অভিনয় করেছেন ‘মীরাক্কেল’ খ্যাত জামিল হোসেন ও মুনমুন। নাটকে তারা সংসারও করেছন। সেই তারা যখন বিয়ের ছবি প্রকাশ করলেন সবাই ভাবলো হয়তো এটা নাটকেরই কোনো দৃশ্য। কিন্তু না নাটকের এই জুটি এবার সত্যি সত্যিই বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।
রোববার ঢাকার উত্তরার একটি রেস্তোঁরায় দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে জামিল ও মুনমুনের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
বিয়ের বিষয়টি জানিয়ে গতকাল রাতে জামিল তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ।’ জামিলের পোস্ট করা সেই স্থিরচিত্রে ভক্তদের পাশাপাশি বিনোদন অঙ্গনে তাঁদের দুজনের শুভাকাঙ্ক্ষীরা শুভকামনা জানিয়েছেন।
তাদের বিয়ের একাধিক ছবি ও ভিডিও ক্লিপস শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী মনিরা মিঠু। ক্যাপশনে লেখেন, আমাদের প্রিয় জামিল-মুনমুনের বিয়ে হলো। বর-কনের জন্য সবাই অন্তর থেকে দোয়া করবেন।
মূলত একসঙ্গে অভিনয়ের সূত্র ধরেই একে অপরের সঙ্গে পরিচয় ও কাছে আসা। একসময় তারা একসঙ্গে পথ চলার সিদ্ধান্ত নেন। জামিল বলেন, ‘বছরখানেক আগে আমাদের দুজনের পরিচয়। মুনমুনও অভিনয় করে। অভিনয়ের সূত্রে পরিচয় হলেও একটা সময় আমাদের মধ্যে একটা বোঝাপড়া তৈরি হয়। আমরা ভাবলাম, সম্পর্কটা আরও এগিয়ে নেওয়ার। এরপর দুজনের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়। দুই পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয় এবং আমরা বিয়ে করি।
জি বাংলার জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘মীরাক্কেল’ দিয়ে বিনোদন অঙ্গনে পরিচিতি পান জামিল হোসেন। এরপর অভিনয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি নাটক প্রযোজনার সঙ্গেও জড়িত আছেন। অভিনয়ে তাঁর অভিষেক ঘটে ‘মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার-৬’-এ অংশগ্রহণের পর। এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগী ছিলেন তিনি। বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হয়ে পরিচিতি পেয়েছেন মুনমুন। এরপর নাম লেখান টিভি নাটকে। অল্প দিনেই টেলিভিশন নাটকে সাবলীল অভিনয় করে পরিচিতি পেয়েছেন। ‘কাগজ’ নামের একটি সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু কবিরাজের ঝাড়ফুঁক পেতে মানুষের ভিড়, সামলাতে পরিবারে হিমশিম
চার বছরের এক শিশুর ঝাড়ফুঁক দেওয়া পানি ও তেল ব্যবহার করে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে অসুস্থ রোগীরা- এমন বিশ্বাসে শিশুটির বাড়িতে প্রতিদিন ভিড় করছেন হাজারো মানুষ। এ খবর এতোটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে, উপচে পড়া লোক সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার ভাটি লঙ্গরপাড়া এলাকায় এমন কাণ্ডে মানুষের ভিড় জমলেও সচেতন মহল বলছেন, এটা কুসংস্কার ও ভ্রান্ত বিশ্বাস ছাড়া কিছুই নয়।
পানি পড়া পেতে নারীদের লাইন
চার বছরের শিশুটির নাম লাবীব। স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী মো. আব্দুল ওয়াহাব এর এই শিশুপুত্রটির পরিচয় এখন ‘শিশু কবিরাজ’। তার স্বজন ও অনেক রোগীর দাবি, আল্লাহর নামে ঝাড়ফুঁক দেওয়া তার তেল ব্যবহার করলে ও পানি পান করলে জটিল ও কঠিন রোগ থেকে মুক্তি মিলছে।
প্রথমে তার পরিবারের সদস্যদের রোগ মুক্তি, পরে তার আত্বীয় স্বজনের রোগমুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলাসহ জেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ভিড় করছেন হাজার হাজার মানুষ। এরপর থেকেই বিভিন্ন রোগীকে ঝাড়ফুঁক দিয়ে যাচ্ছেন শিশু কবিরাজ। তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, এটা আল্লাহ প্রদত্ত অলৌকিক ক্ষমতা।
বাবার কোলে লাবীব
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটি নিজের মনে বাবার সাথে পানি দিয়ে খেলছে। দুইজন মানুষ বালতি বালতি পানি এনে বোতলে ভরছেন। তার বাবা তাকে খেলাধুলা বন্ধ করে পানিতে ফু দিতে বলছে। অমনি ছেলেটি মাথা এগিয়ে পানিতে ফু দিচ্ছে। অপরদিকে শত শত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে এক এক করে পানি ও তেলের বোতল এগিয়ে শিশুটির মুখের কাছে ধরছেন। আবার কখনও শিশুটি তার বাবার কোলে বসে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের বোতল ভর্তি পানি, তেলের শিশিতে ঝাড়ফুঁক দিচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা এবং বিকেল ৫টায় দুই ধাপে চলে এই ঝাড়ফুঁক। আগত রোগীর মধ্যে নারীরাই বেশি।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব হাবিবুর রহমান বলেন, “আমার দ্বিতীয় বারের মতো স্ট্রোক হওয়ার পর একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারতাম না। এই শিশু কবিরাজের চিকিৎসায় আমি এখন সুস্থ। আমি এখন লাঠি ছাড়া দ্রুত হাঁটতে পারি।”
খেলাধুলার সময়ে নিস্তার নেই, সেখানেও দিতে হচ্ছে ঝাড়ফুঁক
শিশুটির বাবা বলেন, “আমার ছেলে শত শত মানুষের রোগ ভালো করেছে বলে রোগীরা আমাদের জানিয়েছেন। তার এই ক্ষমতা আল্লাহ প্রদত্ত। প্রথমে সে তার মাকে চিকিৎসা করে ভালো করেছে। পরে সুস্থ করেন এলাকার আঘাতপ্রাপ্ত স্থানীয় কয়েকজন ফুটবল খেলোয়াড়দের। এরপর থেকে জানাজানি শুরু হলে মানুষের ভিড় জমে। আল্লাহর নাম নিয়ে আমার ছেলে ফু দিয়ে দিলে অনেকেই সুস্থ হয়ে যায় বিধায় হাজার হাজার লোক আসে। এর জন্য আমার ছেলে আজ পর্যন্ত একটি টাকা কারো কাছে নেয়নি।”
এসময় তিনি তার ছেলেকে একজন আলেম বানাতে চান বলে দোয়া চান।
শেরপুর সিভিলে সার্জন ডা. মুহাম্মদ শাহীন বলেন, “এটা সম্পূর্ণ কুসংস্কার। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই পদ্ধতিতে রোগ মুক্তির কোন ভিত্তি নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও শেখ জাবের আহমেদ বলেন, “এই ঘটনাটি অবৈজ্ঞানিক এবং কুসংস্কার এ নিপতিত একটা ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে। যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাই। ঠিকানাসহ অভিযোগ পেলে উপজেলা প্রশাসন যথাযথ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।”
ঢাকা/তারিকুল/টিপু