হঠাৎ বড়লোক রুনা লায়লা, এত টাকা কপালে সইবে তো
Published: 7th, April 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন নির্মাতা আশফাক নিপুন। চাইলে সেই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে থ্রিলার, ক্রাইম-ড্রামা বানাতে পারতেন। তবে তিনি ও পথে হাঁটেননি। থ্রিলার বানানোর জনপ্রিয় টোপ এড়িয়ে তিনি বরং বানিয়েছেন ডার্ক কমেডি। প্রেক্ষাপট হিসেবে বেছে নিয়েছেন জুলাই অভ্যুত্থান। গত ২৮ মার্চ হইচইতে এসেছে ‘জিম্মি’। কেমন হলো নিপুনের সিরিজটি? মহানগর নির্মাতা কি পারলেন নামের প্রতি সুবিচার করতে?
একনজরেসিরিজ: ‘জিম্মি’
ধরন: ডার্ক কমেডি
পরিচালক: আশফাক নিপুন
অভিনয়ে: জয়া আহসান, ইরেশ যাকের, শাহরিয়ার নাজিম জয়, প্রান্তর দস্তিদার
স্ট্রিমিং: হইচই
টিজার, ট্রেলার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ‘জিম্মি’ তেমনই। সরকারি চাকরিজীবী নারী রুনা লায়লা (জয়া আহসান)। টানাটানির সংসার, স্বামীর (ইরেশ যাকের) কারখানা বন্ধ। তবে স্ত্রীকে সে কথা সে বলতে পারে না, রোজ সময়মতো অফিসের নাম করে বের হয়ে যায়। নিজের শখ-আহ্লাদের কিছুই পূরণ করতে পারে না রুনা লায়লা, অলংকারের দোকানে গিয়ে গয়না দেখাই সার হয়। এমন সময় হঠাৎই যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যায় সে। সহকর্মী মারা যাওয়ায় অফিসের স্টোররুমের দায়িত্ব পায় রুনা, সেখানে গিয়েই পেয়ে যায় টাকার বাক্স! লোভ আর নীতির দ্বন্দ্বে শেষ পর্যন্ত লোভই জেতে। তবে টাকা নিয়ে রুনা নতুন জীবন শুরুর স্বপ্ন দেখলেও সেটা কি সত্যি হয়? এই নিয়ে এগিয়ে গেছে গল্প।
‘জিম্মি’র চিত্রনাট্য আরও জমাটি হতে পারত। শুরুর দিকের পর্বগুলো দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল যেন প্রায় কিছুই ঘটছে না, এক জায়গাতেই আটকে আছে। মুশকিলটা হয়েছে, সিরিজের ট্রেলারে গল্পের অনেক কিছুই দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে, দেখার সময় তাই নতুনত্বের স্বাদ মিলছিল না।
‘জিম্মি’তে জয়া আহসান। হইচই.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আরও ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ। সরকারে এমন উদ্যোগের কথা জানিয়ে আজ সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কাছে চিঠি লিখেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বাড়তি ৩৭ শতাংশ তিন মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যে অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা প্রত্যাহার করে। এরপর থেকে বাংলাদেশের সকল রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়। অথচ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড়ে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। উল্লেখ্য, কাঁচা তুলা ও লোহার স্ক্র্যাপের ক্ষেত্রে আমাদের শুল্ক হার যথাক্রমে শূন্য ও এক শতাংশ।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় তুলা আমদানিকারক দেশ, যা দিয়ে তৈরি পোশাক শিল্প চালিত হয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের পণ্যগুলোর ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের শুল্ক তালিকায় ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্ক হার শূন্য এবং আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে।
এতের আরও বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) অনুযায়ী, উভয় দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পথে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা যৌথভাবে দূর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সব সময় গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী। যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিতে যদি কোনো বাধা থাকে তা দূর করতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বাণিজ্য শাখার সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার শুল্ক হার কমানো, সব ধরনের অশুল্ক বাধা দূর করা এবং পারস্পারিক বাণিজ্যকে আরও লাভজনক করতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে: আমদানি নীতির হালনাগাদ, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, ট্রেডমার্ক ও পেটেন্ট সুরক্ষা ইত্যাদি।
এছাড়া আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি, মার্কিন অটো নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সয়াবিন, গম, তুলা ইত্যাদি বড় আকারে আমদানির উদ্যোগ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সেবামূলক খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
চিঠিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, তার বিশ্বাস এসব উদ্যোগ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ভারসাম্য আনতে এবং উভয় দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে। প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস এবং তাঁর সরকারসহ বাণিজ্য উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে ইউএসটিআর দপ্তরের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও মজবুত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বেশির দেশের পণ্যে এমন শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। যে দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য–ঘাটতি বেশি, সেই দেশের ওপর বেশি হারে শুল্ক আরোপ হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে। বাংলাদেশেও সরকারের উচ্চমহল ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ প্রধান উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা এ বাড়তি শুল্কের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দুই চিঠি দেন।