মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। রবিবার রাতে (৬ এপ্রিল ) তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান।

সোমবার (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও গাজা যুদ্ধ নিয়ে জরুরি আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন সফর করছেন নেতানিয়াহু। আগামী দুই দিন তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে অংশ নেবেন। এই বৈঠকগুলোর মূল আলোচ্য বিষয় হলো গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ এবং সেখানে এখনো আটক থাকা ৫৯ জন জিম্মির মুক্তি।

আরো পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ অব্যাহত, নিহত আরো অর্ধশতাধিক

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ফেনীতে বিক্ষোভ 

পাশাপাশি ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি, যার আওতায় ইসরায়েলি পণ্যের ওপর ১৭ শতাংশ মার্কিন শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

চ্যানেল ১২-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সফর ঘোষণার ২৪ ঘণ্টারও কম সময় পর, রবিবার বুদাপেস্ট থেকে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা হন নেতানিয়াহু। এই সফর মঙ্গলবার পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা বাড়তেও পারে। 

নেতানিয়াহু তার স্ত্রী সারা নেতানিয়াহুকে সঙ্গে নিয়ে ওয়াশিংটনে পৌঁছার পরপরই বিমানবন্দর থেকে একটি গাড়িবহরের মাধ্যমে ব্লেয়ার হাউসে যান। সেখানে তিনি মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের সঙ্গে বৈঠক করেন।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, বৈঠকটি ‘উষ্ণ এবং ফলপ্রসূ’ ছিল।

ট্রাম্প চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর নেতানিয়াহু এ  নিয়ে দ্বিতীয়বার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

নবীজির (সা.) আদেশ ও সুপারিশের পার্থক্য

নবীজি (সা.) অনেক সময় সাধারণ অর্থে মতামত দিতেন, আদেশ হিসেবে নয়। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা হতো নবীজির (সা.)সুপারিশ। নবীজির (সা.)আদেশ ও সুপারিশের মধ্যে পার্থক্য ছিল। আদেশ হলো, যা কার্যকর করা অপরিহার্য এবং ব্যতিক্রম করার উপায় নেই। তবে সুপারিশ হলো, কোনো বিষয়ে নবীজির (সা.)আগ্রহ। সুপারিশকৃত বিষয় পালন না করার স্বাধীনতা ব্যক্তির আছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাহাবিগণ নবীজির(সা.) সুপারিশও কবুল করে নিতেন।

উভয় অবস্থার উদাহরণ পেশ করছি:

ইবনে আবু হাদরাদের কাছে কা’ব ইবনে মালিকের কিছু পাওনা ছিল। মসজিদে তাদের দেখা হলে কা’ব তাঁর পাওনা দাবি করলেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে উভয়ের স্বর উঁচু হলো। নবীজি (সা.) ঘর থেকে তাদের কথা শুনলেন। তাঁর কক্ষের পর্দা উঠিয়ে ডাক দিলেন, ‘কা’ব।’ কা’ব (রা.) বললেন, ‘জ্বি, আল্লাহর রাসুল।’ নবীজি(সা.) বললেন, ‘তুমি তোমার পাওনা এইটুকু ছেড়ে দাও।’ ইশারা করে দেখালেন, অর্ধেক কমিয়ে দাও। কা’ব বললেন, ‘আমি তা-ই করছি, আল্লাহর রাসুল।’ এরপর নবীজি(সা.) ইবনে আবু হাদরাদকে বললেন, ‘যাও, এবার তার পাওনা আদায় করে দাও।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৫৭; মুসলিম, হাদিস: ১,৫৫৮)

আরও পড়ুনমহানবী (সা.) এবং এক কুস্তিগিরের গল্প১০ এপ্রিল ২০২৫

কা’ব (রা.)-এর কাছে নবীজি (সা.)তার পাওনা অর্ধেক কমিয়ে দেওয়ার যে অনুরোধ করেছেন, তা মূলত সুপারিশ ছিল; আদেশ নয়। কা’ব যদিও তক্ষুনি তার অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন, তবে সাড়া না দেওয়ার অধিকারও তার ছিল। কিন্তু তিনি নবীজির সুপারিশ কবুল করে নিয়েছেন।

দ্বিতীয়ত উদাহরণটি ঠিক এর বিপরীত।

বারিরা (রা.) ছিলেন দাসী। তাকে মুক্ত করে দিলেন তার মালিক। কিন্তু তার স্বামী তখনও দাস। দাসত্ব থেকে মুক্ত হলে স্ত্রীর অধিকার থাকে বিয়ে বহাল রাখা বা না রাখার। বারিরা (রা.) তার বিবাহ ভেঙে দিলেন।

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘বারিরার স্বামীকে মুগিস নামে ডাকা হতো। সেই দৃশ্য যেন আমি এখনো দেখছি যে, সে বারিরার পেছনে ঘুরছে আর কান্নামাখা অশ্রু তার দাঁড়ি বেয়ে ঝরছে।’ নবীজি (সা.) আব্বাসকে বললেন, ‘আব্বাস, বারিরার প্রতি মুগিসের ভালোবাসা আর মুগিসের প্রতি বারিরার অবজ্ঞা দেখে তোমার অবাক লাগছে না?’ নবীজি(সা.) বারিরাকে বললেন, ‘যদি তুমি তাকে ফিরিয়ে নিতে!’ বারিরা বললেন, ‘আল্লাহর রাসুল, আপনি কি আদেশ করছেন?’ নবীজি(সা.) বলেন, ‘আমি শুধু সুপারিশ করছি।’ বারিরা বলেন, ‘তাকে আমার কোনো দরকার নেই।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,২৮৩)

বারিরা (রা.) কিন্তু নবীজির(সা.) সুপারিশ কবুল করেননি। কারণ স্বামীর প্রতি তিনি বীতশ্রদ্ধ ছিলেন এবং তার সঙ্গে তিনি জীবন কাটাতে চাইছিলেন না।

এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, সাহাবিদের অন্তরে নবীজির(সা.) আদেশ ও সুপারিশের মধ্যকার ব্যবধান কত স্পষ্ট ছিল। এমনকি দাস-দাসীদের কাছেও তা ছিল পরিষ্কার।

আরও পড়ুনমহানবী (সা.) এবং এক ইহুদি ছেলের গল্প০৫ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ