ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতা থামছেই না। গতকাল রবিবার (৬ এপ্রিল) গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ জনে পৌঁছে গেছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেইর আল-বালাহের পাঁচটি এলাকার বাসিন্দাদের তাদের এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর ইসরায়েল গাজার মধ্যাঞ্চলে গতকাল রবিবার নতুন করে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে।

আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, গাজা শহরের পূর্বে আল-নাখিল স্ট্রিটে ইসরায়েলি কামানের গোলাবর্ষণে আট শিশুসহ দশজন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে একটি চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে।

আরো পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ফেনীতে বিক্ষোভ 

গাজায় স্বাস্থ্যকর্মী হত্যার ঘটনায় ভুল স্বীকার করল ইসরায়েল

ওই সূত্র আরো জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহেও ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আরেকটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, গাজা শহরের পূর্বে শুজাইয়া পাড়া লক্ষ্য করে বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।

একই শহরের জেইতুন পাড়ায় আইন জালুত স্কুলের কাছে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলায় আরো দুইজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সূত্র জানিয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়ার সালাম পাড়ায়ও কামানের গোলাবর্ষণে আরো চারজন নিহত হয়েছেন।

এছাড়া কেন্দ্রীয় গাজার জাওয়াইদা এলাকায় একটি বাস্তুচ্যুত শিবিরে ড্রোন হামলায় আরো একজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। আরেকটি মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে চালানো হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন।

দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসের কিজান রাসওয়ান এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের একটি দলকে লক্ষ্য করে আরেকটি হামলায় আরো একজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

অন্যদিকে খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি গুলিবর্ষণে এক ফিলিস্তিনি শিশু নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। খান ইউনিসের পূর্বে আবাসন আল-কাবিরায় কামানের গোলাবর্ষণে আরো একজন নিহত এবং আরো চারজন আহত হয়েছেন।

এদিকে আল জাজিরার লাইভ খবরে বলা হয়েছে, আজ সোমবার সকালেও গাজার আল-আকসা হাসপাতালের কাছে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

কুদস নিউজ নেটওয়ার্কের বরাত দিয়ে আল জাজিরা বলেছে, গাজার বাস্তুচ্যুত নিরুপায় মানুষেরা আল–আকসা হাসপাতালের কাছে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ হামলায় প্রচুর হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা জানা যায়নি। তবে আহত বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল খ ন ইউন স ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ১৫ চিকিৎসাকর্মীকে গুলি করে হত্যা, ভুল স্বীকার

ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ১০-১৫ তলারও বেশি উচ্চতায় উঠে নিচে পড়ে যাচ্ছে মানুষ। মনে হচ্ছে, তারা আকাশে উড়ছে! নিচে বিশাল ইট-সুরকি-ধুলার কুণ্ডলী। মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপ পুরো ভবন। সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একটি ভিডিওতে এমন মর্মান্তিক দৃশ্য দেখা গেছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, আজান শুরু হতেই বোমা হামলায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একটি মসজিদ। থেমে যায় মুয়াজ্জিনের কণ্ঠস্বর। এভাবে একের পর এক ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিন। রাতে ঘুমিয়ে থাকা নারী-শিশুর শরীর ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের। 

গতকাল রোববার ভোরে গাজার খান ইউনিসের একটি আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বোমা হামলায় সেখানে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে নারী-শিশুর মরদেহ। ওই হামলা থেকে বেঁচে ফেরা খান ইউনিসের বাসিন্দা জামাল আল-মধুন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ ঘরগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেল। আমরা ধ্বংসস্তূপ থেকে আটজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। তাদের সবাই নারী ও শিশু। একজন পুরুষও নেই। এই নিরীহ নারী-শিশু সবার মরদেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। 

গত ২৩ মার্চ গাজায় ১৫ জন জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কর্মীকে হত্যার ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) তাদের ভুল স্বীকার করেছে। তারা শুরুতে দাবি করেছিল, অন্ধকারে হেডলাইট বা ফ্ল্যাশলাইট ছাড়া গাড়িবহরের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তারা গুলি চালিয়েছিল। তবে নিহত প্যারামেডিকদের একজনের তোলা মোবাইল ফোনের ফুটেজে দেখা গেছে, আহতদের সাহায্য করার জন্য ডাকাডাকির সময় যানবাহনগুলোয় আলো জ্বালানো ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর হামলায় অন্তত ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৩৮ জন আহত হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অবরুদ্ধ ও বোমাবর্ষণ করা অঞ্চলে ইসরায়েলের পোলিও টিকা দিতে বাধা দেওয়াকে টাইম বোমার সঙ্গে তুলনা করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় টিকা দিতে বাধা দেওয়ায় গাজার ৬ লাখ ২ হাজার শিশু স্থায়ী পক্ষাঘাত ও দীর্ঘস্থায়ী অক্ষমতার ঝুঁকিতে রয়েছে। 
এদিকে, যুক্তরাজ্যের আইনসভার দুই সদস্যকে আটক করেছে ইসরায়েল। একটি প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে তারা ইসরায়েল সফরে গিয়েছিলেন। পরে ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সংসদ সদস্যরা রোববার ভোরে দেশ ছেড়েছেন। 

গাজায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দিয়েছে ‘দ্য ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস ইন প্যালেস্টাইন’। ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল আনটিল জেনোসাইড স্টপস’ নামে আজ সোমবার বিশ্বজুড়ে এ অবরোধ পালনের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লক্ষ্মীপুর বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১
  • ভুমি ভাবতেই পারেননি তার জীবনে এই সুযোগ আসবে
  • ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরীমণিকে রুটিরুজির অংশ বানিয়েছে: শেখ সাদী
  • ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরীমনিকে রুটিরুজির অংশ বানিয়েছে: শেখ সাদী
  • ভিউ ব্যবসায়ী সাংবাদিক পরীমনিকে  তাদের রুটিরুজির অংশ বানিয়েছে: সাদী
  • সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত, মদ্যপ পরিচালক গ্রেপ্তার
  • হাতভাঙার ভুয়া এক্স-রে জমা দিয়ে মামলার অভিযোগ 
  • ম্যারাডোনা: কখনো দেবতা, কখনো বিপ্লবী, আবার কখনো জোচ্চোর ও মাদকসেবী
  • গাজায় ১৫ চিকিৎসাকর্মীকে গুলি করে হত্যা, ভুল স্বীকার