লিওনেল মেসি মাঠে নামবেন কি না রহস্য রেখে দিয়েছিলেন হাভিয়ের মাচেরানো। সামনেই কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে ‘বাঁচা-মরা’র ম্যাচ, তার আগে মেসি মাঠে নামবেন বলে নিশ্চয়তা দেননি ইন্টার মায়ামি কোচ। তবে বাংলাদেশ সময় আজ সকালে মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) মেসি টরন্টো এফসির বিপক্ষে খেললেন এবং গোলও করলেন।

যে গোল ইন্টার মায়ামিকে পিছিয়ে থাকা ম্যাচে সমতা এনে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এনে দিয়েছে ১-১ সমতার এক পয়েন্টও।

আজ পোর্ট লডারডেলের চেজ স্টেডিয়ামে মায়ামি-টরন্টো ম্যাচের দুটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। দ্বিতীয় মিনিটে মায়ামির তিন খেলোয়াড়ের মধ্যে থেকেই বল জালে পাঠিয়ে টরন্টোকে এগিয়ে দেন ফেদেরিকো বের্নারদেস্কি। জুভেন্টাসে খেলা এই সাবেক ইতালিয়ান উইঙ্গার অবশ্য বেশিক্ষণ স্বস্তিতে থাকতে পারেননি। যোগ করা সময়ে পঞ্চম ও শেষ মিনিটে ১-১ করে ফেলেন মেসি। বক্সের মাথায় বল পাওয়ার পর ডান পায়ে বল থামিয়ে বাঁ পায়ের ভলিতে বল জালে পাঠান তিনি।
এবারের এমএলএসে এটি মেসির চার ম্যাচে তৃতীয় গোল। আর ২০২৩ সালে মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৪তম। আর্জেন্টাইন মহাতারকার পেশাদার ক্যারিয়ারের গোলসংখ্যা এখন ৮৫৬টি।
সমতার প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য মায়ামি ও টরন্টো কোনো দলই গোল করতে পারেনি। মায়ামি মাঠ ছাড়ে মৌসুমে দ্বিতীয় ড্র নিয়ে। ৬ ম্যাচে ২ ড্র ও ৪ জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে মায়ামি এখন ইস্টার্ন কনফারেন্সের দ্বিতীয় স্থানে। এক ম্যাচ বেশি খেলা কলম্বাস ক্রু ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। এখনো পর্যন্ত জয়হীন টরন্টো ৭ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ১৪ নম্বরে।
মায়ামির পরের ম্যাচ কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। গত সপ্তাহে প্রথম লেগে লস অ্যাঞ্জেলেসের কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল মায়ামি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: টরন ট

এছাড়াও পড়ুন:

কণ্ঠস্বরকে সুস্থ রাখতে চাই সচেতনতা

ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে কণ্ঠের ওঠানামা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কথা কী প্রভাব সৃষ্টি করবে, তার ৩৮ শতাংশ নির্ভর করে কণ্ঠের ওঠানামার ওপর। পেশাগত কণ্ঠ ব্যবহারকারী মানুষ যেমন গায়ক, অভিনেতা, শিক্ষক, উকিল, ধারাভাষ্যকার, বিক্রয়কর্মী, কলসেন্টারের কর্মী, কণ্ঠশিল্পীদের জন্য কণ্ঠই সবকিছু।

কণ্ঠনালির প্রদাহ

এ প্রদাহ দুই ধরনের। সাময়িক ও দীর্ঘমেয়াদি ল্যারিনজাইটিস। ভাইরাস, আবহাওয়া পরিবর্তন, পরিবেশদূষণেও কণ্ঠনালির প্রদাহ হতে পারে। পাকস্থলীর অ্যাসিড রিফ্লাক্সের জন্য কণ্ঠনালির দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ হতে পারে। ধূমপান, অতিরিক্ত চা বা পানীয় পান করলে, হাঁপানির জন্য ইনহেলার ব্যবহার করলে বা যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, তাদের দীর্ঘমেয়াদি ল্যারিনজাইটিস হতে পারে।

কণ্ঠস্বরের অতিব্যবহার

অতিরিক্ত চিৎকারের কারণে যেমন স্বর ভেঙে যায়, তেমনি আবার মৌসুম বদলের সময়ও এমন সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। তাপমাত্রার তারতম্যের সময় কণ্ঠনালি বা টনসিলের প্রদাহের উপসর্গ হিসেবে স্বর ভেঙে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে সপ্তাহখানেকের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।

তবে কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে রোগী স্বর ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন: কণ্ঠস্বরের ওপর যাঁদের খুব বেশি চাপ পড়ে (যেমন গায়ক, আবৃত্তিকার, শিশুদের শিক্ষক)। তাঁদের স্বরতন্ত্রীতে ছোট ছোট গোটা হতে পারে (নডিউল)। এ রকম হলে স্বর অস্বাভাবিক রয়ে যায় দীর্ঘদিন। স্বর ভাঙার অন্যান্য কারণ হলো থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি, ফুসফুস বা শ্বাসতন্ত্রের ক্যানসার, স্টেরয়েড ইনহেলার ব্যবহার ইত্যাদি।

মৌসুমের কারণে কণ্ঠনালির প্রদাহ হলে গলাব্যথা, জ্বর, কাশি ও সর্দির মতো উপসর্গ থাকে।

থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতিতে ওজন বৃদ্ধি, শীতপ্রবণতা, দুর্বলতা, বিষণ্নতা, চিন্তায় ও কাজে ধীরতা, চুল পড়া প্রভৃতি সমস্যা দেখা দেয়।

ফুসফুস বা শ্বাসতন্ত্রের ক্যানসারে ওজন হ্রাস, বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

কণ্ঠস্বরের যত্নে যা করতে হবে

● কণ্ঠস্বরের সমস্যা তিন সপ্তাহের বেশি থাকলে নাক–কান–গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

● আর্দ্রতা কণ্ঠের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি, তাই প্রতিদিন অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে হবে।

● কণ্ঠ ব্যবহারে সাবধানী হোন। অতিউচ্চ বা পরিবর্তিত স্বরে কথা বলবেন না।

● ধূমপান, অ্যালকোহল, তামাক, গাঁজা ও অন্যান্য নেশা সম্পূর্ণ পরিহার করুন। 

● ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে খাওয়া শেষ করুন এবং অল্প আহার করুন।

● অতিরিক্ত টেলিফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। 

● অপ্রয়োজনে বারবার গলা পরিষ্কার ও কাশি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

● শুষ্ক আবহাওয়া কণ্ঠের জন্য ক্ষতিকর। শীতাতপ যন্ত্রের বাতাসে জলীয় বাষ্প কম থাকে, এটি কণ্ঠের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। রাতে আর্দ্রতা বৃদ্ধিকারী যন্ত্র ব্যবহার করুন।

● গলা শুকনো থাকলে অথবা মিউকাস জমে থাকলে জোরে কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করার চেষ্টা করা ক্ষতিকর। 

● যখন বেশি মিউকাস উৎপন্ন হয়, তখন মিউকাস তরলকারী ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।

আমরা একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করি প্রধানত কণ্ঠের মাধ্যমে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও খাওয়ার বদভ্যাস কণ্ঠস্বরের নানা সমস্যার জন্ম দেয়। তাই সঠিক কণ্ঠস্বর বজায় রাখতে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ।


অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক, ইএনটি হেড নেক সার্জারি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ