আদনান ফটোগ্রাফার। বন্ধুকে নিয়ে সদরঘাটে এসেছে ছবি তুলতে। এদিকে বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছে সুইটি। মা–বাবার পছন্দের ছেলেকে সে কিছুতেই বিয়ে করবে না। সদরঘাট থেকে লঞ্চে করে যাবে বরিশাল। বান্ধবীর বাড়িতে কিছুদিনের জন্য আস্তানা গাড়বে। সদরঘাটে সে যখন দিগ্বিদিক ছুটছে, আদনান তখন ছবি তোলায় মগ্ন। এরপর যা হওয়ার তাই হয়। নায়ক–নায়িকার অবধারিত ধাক্কা, বুড়িগঙ্গার বিশ বাও জলের নিচে ক্যামেরা! ক্ষতিপূরণ আদায়ে নাছোড় আদনানের বন্ধু।
একনজরেসিনেমা: ‘হাউ সুইট’
ধরন: কমেডি ড্রামা
পরিচালনা: কাজল আরেফিন
অভিনয়: অপূর্ব, তাসনিয়া ফারিণ, এরফান মৃধা, পাভেল
স্ট্রিমিং: বঙ্গ
আদনানের মন একটু নরম। সুইটির মতো সুন্দর মেয়ের কাছে খড়্গহস্ত হতে নারাজ। অবশ্য ক্ষতিপূরণ দিতে চায় সুইটি। কিন্তু তার কাছে তো টাকাপয়সা নেই। আদনানরা যদি তাকে বরিশালে বন্ধুর বাসায় পৌঁছে দেয়, তবে তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবে। অগত্যা রাজি হয় আদনান, লঞ্চ ছোটে বরিশাল। তখন অবশ্য কেউই জানত না সুইটির বান্ধবীর পরিবার একটা ‘মিনি চিড়িয়াখানা’।
সুইটির বান্ধবীর ভাই নয়ন এলাকায় দাপট দেখানোর চেষ্টা করে, চোখ ট্যারা, তাই সবাই তাকে ডাকে ‘ট্যারা নয়ন’। নয়ন নিজেকে গডফাদার ভাবে, তবে আদতে সে ভিতুর ডিম। তার কর্মকাণ্ড ভয়ের চেয়ে হাসায় বেশি।
তো বাসায় আসামাত্রই ছোট বোনের বান্ধবী সুইটিকে পছন্দ করে ফেলে নয়ন। বিয়ে করতে চায়, পরিবারের সবাই রাজি। সুইটি তো হতভম্ব। এক বিয়ে থেকে পালিয়ে আবার বিয়ে! রাজি না হওয়ায় তাকে বেঁধে এক ঘরে বন্ধ করে রাখা হয়। এদিকে লঞ্চ থামার পরেই আদনানদের না বলে পালিয়ে ছিল সুইটি। তারাও হন্যে হয়ে খুঁজছে মেয়েটিকে। ফারহানা সুইটিকে খুঁজে পাবে কি না, তার সঙ্গে সুইটির বিয়ে আদৌ কি হবে? এসব নিয়েই বঙ্গ প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে কাজল আরেফিনের ওয়েব ফিল্ম ‘হাউ সুইট’।
কয়েক বছর ধরেই ছোট পর্দা আর ওটিটিতে একের পর এক হিট কাজ উপহার দিচ্ছেন কাজল আরেফিন। লার্জার দ্যান লাইফ সব চরিত্র, হাস্যরসের মিশেলে ভিন্নমাত্রা পায় তার কাজ। থাকে ভরপুর বিনোদন। হাউ সুইটও তেমনি একটি কাজ। ওটিটিতে থ্রিলারধর্মী কাজের বাইরে বিনোদনের মোড়কে নির্মিত সিনেমাটি যেন দর্শকের চোখের আরাম।
‘হাউ সুইট’–এর দৃশ্য। ভিডিও থেকে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ উ স ইট স ইট র আদন ন
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় ফেরার পথেও স্বস্তি
ঈদযাত্রার কথা ভাবলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে বাস-ট্রেনে উপচে পড়া ভিড়। কখনও ট্রাকে, ট্রেনের ছাদে চড়ে গন্তব্যে ছুটছে মানুষ। ফেরার পথেও অন্তহীন ভোগান্তি। কিন্তু এবার যেন এসবের কিছুই ছিল না। সড়কে নেই যানজট। যাত্রীবাহী গাড়ি অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাবলীলভাবে ফিরছে গন্তব্যে। এবারের ঈদুল ফিতরে এখন পর্যন্ত যাতায়াতে দেখা গেছে বিরল স্বস্তি। ছুটি কাটিয়ে অনেকেই ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীতে। ফেরার পথেও এ ধারার ব্যত্যয় ছিল না।
গতকাল শুক্রবার কমলাপুর রেলস্টেশন, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা ভালো অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালনে নিরলস দেখা গেছে। কোথাও সামান্য যানজট দেখা দিলেই এগিয়ে এসে পরিস্থিতি ঠিক করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে তাদের। সায়েদাবাদে আসা কয়েকজন বাসচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকামুখী যাত্রীতে তাদের বাসের সব আসন পূর্ণ ছিল। সড়কে বিশৃঙ্খলা বা যানজট ছিল না।
আজ শনিবার বন্ধের দিন হলেও এক দিন আগেই অনেকে কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন। কমলাপুর রেলস্টেশনে রাজধানীতে ফেরা যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। আবার অনেকে নানা গন্তব্যে ঢাকা ছাড়ছেন। দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যাচ্ছেন কেউ কেউ। তবে সার্ভার জটিলতায় সকালে ঢাকার বাইরে যাওয়া কয়েকটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে।
সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কমলাপুর রেলস্টেশনে একের পর এক ট্রেন ভিড়ছে যাত্রী নিয়ে। এ সময় কয়েকটি ট্রেন ঢাকাও ছাড়ে। প্রায় সব ট্রেনেই ছিল যাত্রীর ভিড়। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে আসা ট্রেনগুলোতে ছিল বেশি ভিড়।
হবিগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসা তন্ময় শিকদার বলেন, ‘আমি হয়তো এক দিন পরই আসতাম। কিন্তু টিকিট পেয়েছি শুক্রবারের। তাই আজই আসতে হলো। রোববার থেকে অফিস।’ এবারের ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এবারের মতো স্বস্তির ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা আমার ছিল না। আমি চাই প্রতিবার ঈদ যাতায়াত যেন এ রকম হয়। বাড়তি ভাড়াও গুনতে হয়নি এবার।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসনাইন আহমেদ বলেন, ‘সোমবার থেকে আমার অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা শুরু। ইচ্ছা না থাকলেও আসতেই হবে। এবার নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকলেও শেষমেশ ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই নেত্রকোনা থেকে ঢাকা যাওয়া-আসা করতে পেরেছি।’
এ বিষয়ে কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন বলেন, কমলাপুর স্টেশনে যত ট্রেন এসেছে, সবগুলোতেই বিপুলসংখ্যক যাত্রী ছিল। তারা স্বাচ্ছন্দ্যেই ভ্রমণ করেছেন। আসার পথে কোনো সমস্যা হয়নি।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে রাজধানীতে ফেরা কর্মজীবী মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। সড়কপথের পাশাপাশি লঞ্চে ফিরছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশাল নদীবন্দর ছিল লোকারণ্য। নির্ধারিত লঞ্চে ধারণক্ষমতার বেশি হওয়ায় হাজারের বেশি যাত্রী পন্টুনে থেকে গেছেন।
পরে তারা সড়কপথে ঢাকায় যাত্রা করেন। তবে এবার লঞ্চ টার্মিনালে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা অনেক কম ঘটেছে।