রংপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কর্মী নিহত, সাবেক এমপিসহ ৮ নেতা বহিষ্কার
Published: 7th, April 2025 GMT
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহতসহ অন্তত ১৫ জন আহতের ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থি অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে বিএনপি ও যুবদলের আট নেতাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির ছয় নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন- বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক এবং সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক, উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, কালুপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক এবং বিষ্ণপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত আরেক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও পরিপন্থি অনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বদরগঞ্জ পৌর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুমন সরদার ও যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক কয়েলকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার বদরগঞ্জে ভাড়াটিয়া ও দোকান মালিকের দ্বন্দ্বের জেরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লাভলু মিয়া নামে এক বিএনপিকর্মী নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয় অন্তত ১৫ জন। এ সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির তিন নেতার বিরুদ্ধে দখলদারিত্বের অভিযোগ এনে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয় রংপুর জেলা বিএনপি। তিন নেতা হলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক এবং উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক।
এদিকে, মরদেহ দাফন শেষে রোববার সন্ধ্যার পর বিএনপিকর্মী লাভলু মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদে বদরগঞ্জ পৌরশহরে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিকের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক, তার ছেলে তমাল ও বদরগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান মানিককে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান রোববার রাত ১১টার দিকে জানান, এ বিষয়ে এখনও মামলা হয়নি। তবে প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র স বদরগঞ জ স ঘর ষ দ ল হক সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে লাভলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
মোহাম্মদ আলী সরকারের পক্ষের বিএনপি নেতা লাভলু মিয়া বদরগঞ্জের রাজরামপুর গ্রামের মৃত মহসিন আলীর ছেলে। পেশায় তিনি ইটভাটা ব্যবসায়ী ছিলেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের সর্দার রুমের ইনচার্জ সেলিম মিয়া।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বদরগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন একটি দোকানঘর নিয়ে ব্যবসায়ী জাহিদুল হক জোয়ারদার এবং দোকান মালিক ইশতিয়াক বাবুর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। ইশতিয়াক বাবু দোকানঘর ছাড়ার জন্য চাপ দিলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। বিষয়টি রাজনৈতিক রূপ নেয় যখন জাহিদুল হক আশ্রয় নেন কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা শহিদুল হক মানিকের কাছে এবং দোকান মালিক ইশতিয়াক বাবু আশ্রয় নেন সাবেক এমপি ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকারের কাছে।
শনিবার দুপুরে দোকান খুলে দেওয়ার দাবিতে শহীদ মিনার এলাকায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে বিএনপি নেতা শহিদুল হক মানিকের নেতৃত্বে জাহিদুল হকের অনুসারীরা। কিন্তু মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থকরা তা পণ্ড করে দেন। যার ফলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়, শুরু হয় দুই পক্ষেরই নেতাকর্মীদের দেশীয় অস্ত্রসহ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এসময় পৌরশহরের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করে। একপর্যায়ে সৃষ্ট সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন দু’জন পথচারীসহ অন্তত ১০ জন। এর মধ্যে বিএনপি কর্মী লাভলু মিয়া (৫০), মোক্তারুল ইসলাম (৪৫), মুন্নাফ আলী (৫০), শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও ময়নাল হোসেনকে (২৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় লাভলু মিয়া মারা যান। তারা সবাই উপজেলা বিএনপির নেতা ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের কর্মী-সমর্থক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুর দুইটার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ শহরে টহল শুরু করে।
বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান জানান, লাভলু মিয়ার মারা যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি, কিন্তু এখনও কাগজ হাতে পাইনি। এলাকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং দোষীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।