ভাঙ্গায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা আটক
Published: 7th, April 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার রাত ১০টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আশারাফ হোসেন।
ওসি জানায়, ভিকটিম কিশোরীর জবানবন্দি অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মামা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সোমবার ভুক্তভোগী কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হবে এবং অভিযুক্ত বাবাকে ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হবে।
কিশোরীর পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৪-৫ মাস আগে বিষয়টি ওই কিশোরী তার মা ও মামাদের জানায়। কিন্তু সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে পারিবারিকভাবে নিশ্চুপ থাকেন ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা। এরপর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে, অভিযুক্ত বাবা গাঁ ঢাকা দেয়। এক পর্যায়ে আজ রাতে ওই কিশোরীর মামা বাড়িতে আসেন অভিযুক্ত বাবা। এরপর প্রতিবেশীদের সহায়তায় তাকে আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সরেজমিনে গিয়ে প্রাথমিক তদন্তে ও ভিকটিম কিশোরীর জবানবন্দি অনুযায়ী ঘটনার সত্যতা পায়। এরপর তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক
এছাড়াও পড়ুন:
২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ফেরত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন খাইরুল
এক যাত্রীর ফেলে দেওয়া ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণাংলকার ফিরিয়ে দিয়ে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কলেজছাত্র ও পার্টটাইম অটোরিকশাচালক খাইরুল ইসলাম। এ ঘটনায় খাইরুলকে নিয়ে তার এলাকার বাসিন্দারাও গর্বিত।
খাইরুল ইসলাম বগুড়ার শাজাহানুপর উপজেলার বেতগাড়ি এলাকার শাহজাহান আলীর ছেলে। তিনি সরকারি শাহ সুলতান কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র। সংসারে অভাব অনটনের কারনে পার্টটাইমে অটোরিকশা চালিয়ে নিজের পড়ালেখার খরচ চালানোর পাশাপাশি সংসারে সহায়তা করে থাকেন।
গত ২৯ মার্চ অটোরিকশা চালানোর সময় শহরতলীর বনানী এলাকায় তার অটোরিকশায় একটি ব্যাগ দেখতে পান। খাইরুল বুঝতে পারেন, এটি কোনো যাত্রী ভুল করে ফেলে রেখে গেছেন। ব্যাগের মালিক না পেয়ে খাইরুল ব্যাগ নিয়ে বাড়ি গিয়ে মায়ের সামনে ব্যাগ খুলে দেখেন, ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ১৫ হাজার টাকা আর কিছু কাপড়।
খাইরুলের মা ফাতেমা খাতুন খাইরুলকে নির্দেশ দেন, এই ব্যাগ মালিকের কাছে ফেরত দিতে। মায়ের কথায় তিনি ব্যাগ ফেরত দিতে মালিককে খুঁজতে থাকেন। দু’দিন ধরে মালিককে খুঁজে না পেয়ে বগুড়া সদর থানায় বিষয়টি অবগত করেন এবং ব্যাগ থানায় জমা রাখেন। একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে, ব্যাগের মালিকের নাম শাহিন আলম। তার বাড়ি পাবনা জেলায়। তিনি একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ঈদের দুদিন আগে বগুড়ায় এসেছিলেন কেনাকাটা করতে। ওই সময় ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। বনানী এলাকায় বাসের জন্য অটোরিকশায় যান। এরপর বাস দেখে দ্রুত বাসে ওঠে পড়েন অটোরিকশায় ব্যাগ ফেলে রেখে।
বগুড়া পুলিশ শাহিন আলমের সন্ধান পেয়ে পেয়ে তাকে বগুড়া সদর থানায় ডেকে পাঠান। ৪ মার্চ রাত ১১টার দিকে বগুড়া সদর থানায় আসেন তিনি। সেখানে ডাকা হয় অটোরিকশাচালক খাইরুলকেও। সেখানে পুলিশের সামনে প্রকৃত মালিক হারোনো জিনিসপত্রের সঠিক বর্ণনা দিলে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় ব্যাগ।
শাহিন বলেন, ঈদের দুদিন আগে ২৯ মার্চ তিনি ব্যবসার কাজে বগুড়া শহরে আসেন। এরপর তিনি শহরের নিউমার্কেট থেকে ২৫ লক্ষাধিক টাকায় ১৮ ভরি স্বর্ণের বিভিন্ন গহনা কিনে একটি কালো ব্যাগে ভরে বাড়ি যাওয়ার জন্য শহরের সাতমাথায় যান। এরপর সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় চেপে বনানী যান। সেখানে পাবনাগামী একটি বাসে উঠে রওনা দেন। বাসটি যখন শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিরা এলাকায় পৌঁছে, তখন তার মনে হয় তিনি ভুল করে স্বর্ণালংকারসহ তার ব্যাগটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ফেলে রেখে গেছেন। এরপর তৎক্ষণাৎ তিনি বাস থেকে নেমে পড়েন এবং শাহজাহানপুর ও বগুড়া সদর থানার দ্বারস্থ হন।
পুলিশের পরামর্শে তিনি শাজাহানপুর থানায় একটি জিডি করেন। সেইসঙ্গে তিনি কয়েকদিন ধরে সাতমাথায় ওই সিএনজিচালককে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু তার দেখা না পেয়ে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। ব্যাগ পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে খাইরুলকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন এবং খাইরুলকে পুরস্কৃত করেন।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক খাইরুল ইসলাম বলেন, তার গাড়িতে পাওয়া ব্যাগটি তিনি বাড়িতে রেখে দুদিন যাবত মালিককে খুঁজে না পেয়ে পুলিশকে জানান। পুলিশের সহায়তায় ব্যাগের প্রকৃত মালিককে ফেরত দেন। খাইরুল বলেন, অন্যের ব্যাগটি আমার কাজে মস্তবড় বোঝার মতো মনে হচ্ছিল। ব্যাগটি প্রকৃত মালিককে ফেরত দিতে পেরে স্বস্তি পেলাম।
খাইরুলের এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, স্বর্ণালংকারসহ খাইরুল ব্যাগ মালিককে ফিরিয়ে দিয়ে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, তাতে আমরা এলাকাবাসীও গর্বিত।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মইনুদ্দিন বলেন, এ যুগেও যে হাজারো মানুষের ভিড়ে সৎ মানুষ আছে; তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ সিএনজিচালক খাইরুল ইসলাম। সততার জন্য আমি তাকে স্যালুট জানাই।