পেঁয়াজ সংরক্ষণে বসছে চার হাজার এয়ার-ফ্লো মেশিন
Published: 6th, April 2025 GMT
এবার পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকরা চমক দেখিয়েছেন, ফলে ভোক্তারা তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। কিন্তু কৃষকরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারেননি। পেঁয়াজ নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ ও লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। দেশে চাহিদার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হলেও আধুনিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় প্রতিবছর উৎপাদিত পেঁয়াজের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক সংরক্ষণাগার গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, পেঁয়াজ সংরক্ষণে গড়ে তোলা হবে আধুনিক এয়ার-ফ্লো মেশিন (বাতাস প্রবাহ যন্ত্র) সংযুক্ত বিশেষ সংরক্ষণাগার। প্রাথমিকভাবে পেঁয়াজ অধ্যুষিত এলাকায় আধুনিক পদ্ধতিতে স্বল্প খরচে পেঁয়াজ সংরক্ষণে আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে ৪ হাজার এয়ার-ফ্লো মেশিন স্থাপন করা হবে।
ঈদের ছুটিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ বিষয়ক কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক ভার্চুয়াল সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সভায় জানান, কিছু এলাকায় কৃষকের নিজস্ব উদ্যোগ ও বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে এয়ার-ফ্লো মেশিন ব্যবহার হচ্ছে। এতে সুফল মিলছে। এয়ার-ফ্লো মেশিনের মাধ্যমে পেঁয়াজের পচন ঠেকিয়ে আমদানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা যাবে বলে মত প্রকাশ করেন তারা।
কৃষি সচিব ড.
তিনি বলেন, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য সারাদেশে কিছু মডেল ঘর আছে। আমরা সেসব ঘরে কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ ক্রয় করে সংরক্ষণে রাখব। পরে সেটি বাজারে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও টিসিবির মাধ্যমে বিক্রি করব। এ ছাড়া চাষিদের লোকসান কমাতে বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতেও পেঁয়াজ দেওয়ার কথা চিন্তা করছি। এতে ভোক্তাও লাভবান হবেন, চাষিরাও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
ফরিদপুর সদর উপজেলার পিয়ারপুর গ্রামের আব্দুর রহিম শেখ দীর্ঘদিন ধরে এয়ার-ফ্লো মেশিনের মাধ্যমে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করছেন। আব্দুর রহিম শেখ বলেন, ১৫-১৬ হাজার টাকার এই যন্ত্র দিয়ে তিনি প্রায় তিনশ মণ পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারছেন, যাতে মাসে বিদ্যুৎ খরচ আসছে পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকা।
নতুন এ পদ্ধতিতে ঘরের মেঝেতে ইট দিয়ে মাচা তৈরির পর ছিদ্রযুক্ত মাদুর বিছানো হয়। ঘরের মাঝামাঝি রাখা হয় একটি ভার্টিক্যাল সিলিন্ডার। সিলিন্ডারের ভেতর থাকে বৈদ্যুতিক পাখা। পাখার সাহায্যে ওপর থেকে বাতাস টেনে নিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বাতাস প্রবাহিত হয় মজুতকৃত পেঁয়াজের মধ্য দিয়ে। বছরে আট মাস এভাবে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় হামলা বন্ধের দাবিতে পশ্চিম তীরে ধর্মঘট
গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলা বন্ধের দাবিতে দখলকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ধর্মঘট করেছেন ফিলিস্তিনিরা। সোমবার পশ্চিম তীরজুড়ে দোকানপাট, বিদ্যালয় এবং বেশির ভাগ প্রশাসনিক ভবন বন্ধ ছিল। পূর্ব জেরুজালেমের ব্যস্ত সালাহেদ্দিন সড়কও ছিল খালি।
‘ফিলিস্তিনিদের ওপর জাতিগত নিধন ও চলমান হত্যাকাণ্ডের’ প্রতিবাদে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ফাতাহ, হামাসসহ ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর জোট। ইসরায়েলের দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, শরণার্থীশিবির এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থকদের এই ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানায় তারা।
সোমবার বেথলেহেমে ফাদি সাদি নামের এক দোকানদার এএফপিকে বলেন, ‘আজ আমি শহরের ভেতর দিয়ে হেঁটে গিয়েছি। তবে এমন একটি জায়গাও খুঁজে পাইনি, সেটি খোলা ছিল।’ আর জেরুজালেমের এক দোকান মালিক ইমাদ সালমান বলেন, ‘গাজায় আমাদের পরিবারের জন্য, আমাদের শিশুদের জন্য আজ আমরা (দোকান) বন্ধ রেখেছি।’
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দীর্ঘ ১৫ মাস পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে উপত্যকাটিতে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। পরে ১৮ মার্চ থেকে যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবার ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা দখলের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ধর্মঘটে অংশ নেওয়া আহমেদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, ট্রাম্প বা নেতানিয়াহু, ইসরায়েল সরকার বা মার্কিন সরকার যে–ই হোক, ফিলিস্তিনিদের ওপর যে যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধে এবং গাজাবাসীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সোমবার এই ধর্মঘট পালন করেন তাঁরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ১৮ মাস ধরে চলা সহিংসতায় উপত্যকাটিতে অন্তত ৫০ হাজার ৬৯৫ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশু বেশি। এই সময়ে আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৩৮ জন। আর গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের হিসাবে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০। তাঁদের মধ্যে নিখোঁজ ফিলিস্তিনিরাও রয়েছেন।