রাজধানীর বনশ্রীতে এক নারী সাংবাদিককে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ রোববার সংগঠনের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর সই করা যৌথ বিবৃতিতে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

রাজধানীর বনশ্রীতে ২ এপ্রিল রাতে এক নারী সংবাদকর্মীকে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় ওই নারী সংবাদকর্মী তিনজনের বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় মামলা করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনা সূত্রে জানা যায় যে ওই নারী সাংবাদিক তাঁর ছোট ভাইকে নিয়ে জুসের দোকানে যান। এক ব্যক্তি ওই নারীর সঙ্গে অশোভন আচরণ করছিলেন। পরে কয়েকজন যুবক এসে ওই নারীকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। নারী সাংবাদিকের ছোট ভাই প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করেন ওই যুবকেরা। এ সময় ওই নারী বাধা দিতে গেলে ১০-১২ জন যুবক মিলে ওই তাঁকে মারধর এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ওই নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে নানা আপত্তিকর কথা লিখে মানহানির চেষ্টা চালানো হচ্ছে এবং কুরুচিপূর্ণ পোস্ট দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুনবনশ্রীতে নারী সংবাদকর্মীকে শ্লীলতাহানি-মারধর, থানায় মামলা০৩ এপ্রিল ২০২৫

বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে নারী ও কন্যার প্রতি বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা এবং সরাসরি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে উসকানিমূলক ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। রাস্তাঘাটে নানা অজুহাতে মব–সন্ত্রাসের মাধ্যমে সব বয়সের সব শ্রেণি-পেশার নারী ও কন্যারা শ্লীলতাহানি ও হেনস্তার শিকার হচ্ছে। এ ধরনের সহিংসতায় দেশে নারীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে। এসব ঘটনা নারীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করার পাশাপাশি নারীর অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিবৃতিতে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টিকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে নারী সহিংসতার বিষয়ে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই ন র ম রধর ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু, আটক ২

চাঁদপুরের কচুয়ায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া নূর মোহাম্মদ তুষার (২৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কচুয়া থানার ওসি মো. আজিজুল ইসলাম।

আটককৃতরা হলেন- নিহতের প্রেমিকা ফিমা আক্তার (১৮) এবং তার মা হাছিনা বেগম (৪৫)। তারা কচুয়ার গোহট দক্ষিণ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রাজাপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে ও স্ত্রী। 

আরো পড়ুন:

আবু সাঈদ হত্যার সঠিক বিচারে সচেষ্ট হতে হবে: প্রধান বিচারপতি

খাগড়াছড়িতে যুবককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ

নিহত তুষার কচুয়ার মনোহরপুর গ্রামের সরকার বাড়ির মৃত মিজানুর রহমান ও তাছলিমা বেগম দম্পতির ছেলে। 

নিহত তুষারের মা তাছলিমা বেগম বলেন, “ফেসবুকে পরিচয় থেকে তুষার ও ফিমার মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রবিবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফিমার ফোন কল পেয়ে তার বাড়িতে দেখা করতে যায় তুষার। মূলত বিয়ের আশ্বাসে তুষারকে ডেকে নিয়েছিল ফিমা। পরে সেখানে তুষারকে অবরুদ্ধ করে মারধর করে ফিমা, তার মা হাছিনা বেগম এবং তাদের বাড়ির লোকজন।”

তিনি আরো বলেন, “আমাকে ফোন কলে ডেকে নিয়ে রাত সাড়ে ১২টার সময় তুষারকে নিয়ে যেতে বলেন ফিমার মা। আমি সেখানে গিয়ে তুষারকে খারাপ অবস্থায় দেখি। তাকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হই। এসময় তুষারের নাম ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে। পরে তাকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক প্রাথমিক দিয়ে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তুষারকে ঢাকায় রেফার্ড করেন। ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতিকালেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তুষার মারা যায়।” 

তাছলিমা বেগম বলেন, “বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা অভিযুক্ত মা ও মেয়েকে আটক করে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।”

পুলিশ হেফাজতে থাকা ফিমা ও তার মা হাছিনা বেগম গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে জানান, তুষারকে রাতে চোর সন্দেহে এলাকাবাসী গণপিটুনি দেয়। এতে তিনি আহত হন। পরে তার মৃত্যু হয়।

কচুয়া থানার ওসি মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, “তুষারের মরদেহ পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ