Samakal:
2025-04-07@18:45:19 GMT

৯ কোটির ল্যাবে বাড়ছে ই-বর্জ্য

Published: 6th, April 2025 GMT

৯ কোটির ল্যাবে বাড়ছে ই-বর্জ্য

শিক্ষার্থীদের অ্যানিমেশন, রোবটিকসহ প্রযুক্তি শিক্ষা দিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দু’দফায় বসানো হয় ডিজিটাল ল্যাব। এর মাধ্যমে নিত্যনতুন সফটওয়্যার এবং ডিভাইসের ব্যবহারও তাদের শেখানোর কথা ছিল। সে লক্ষ্যে বসানো হয় কম্পিউটারসহ নানান প্রযুক্তি সরঞ্জাম। কিন্তু কয়েক বছর না যেতেই সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ১৮টি ল্যাব অচল হতে চলেছে। অনেক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে বাড়ছে ই-বর্জ্য। প্রযুক্তি শিক্ষার বদলে ল্যাবগুলো এখন পরিণত হচ্ছে বোঝায়।
২০১২ সালে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ ও ২০১৮ সালে ‘স্কুল অব ফিউচার’ নামে সারাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়। শুরুতে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ১৩টি প্রতিষ্ঠানে এমন ল্যাব স্থাপন করে তথ্য ও যোগাযোগ 
প্রযুক্তি অধিদপ্তর। এর বর্তমান নাম হয়েছে ‘আইসিটিডি’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রকল্পে উপজেলার আরও পাঁচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়।
এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানো এবং স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা। সে লক্ষ্যে স্কুল অব ফিউচার ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছিল। বাস্তবে সেগুলোর বেশির ভাগই ব্যবহার হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরাও পাচ্ছে না প্রযুক্তি শিক্ষা। অনেক ল্যাবের কিছু উপকরণ ই-বর্জ্যে পরিণত হচ্ছে। এতে ল্যাব তৈরিতে খরচ হওয়া অন্তত ৯ কোটি টাকা পানিতে যেতে বসেছে।
সরেজমিন উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশ ল্যাব প্রায় অচল বা তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে। তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল অব ফিউচারের অবস্থা জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামের ভাষ্য, অপারেটর না থাকায় ল্যাবের কার্যক্রম বন্ধ আছে। নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজে স্থাপিত ডিজিটাল ল্যাবের ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ অন্যান্য ডিজিটাল সামগ্রী অচল হওয়ার পথে। ল্যাবটি অনেকটা ই-বর্জ্যে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বেলাল হোসেন আনছারী। 
গুল্টা বাজার শহীদ এম মনসুর আলী ডিগ্রি কলেজের ল্যাবের ল্যাপটপগুলো নষ্ট হওয়ার পথে। পাঁচ থেকে সাতটির কোনো হদিস নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে কম্পিউটারগুলো প্রতিষ্ঠানে ফেরত দিতে বারবার তাগাদা দিলেও কলেজের অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান তাতে সাড়া দেননি। অভিযোগ উঠেছে, এসব ল্যাপটপ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও অধ্যক্ষ তা অস্বীকার করেছেন।
ল্যাবগুলো এভাবে বোঝায় পরিণত হওয়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুরুতে নিম্নমানের সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছিল। এতে কয়েক বছরের মধ্যেই তা বিকল বা অচল হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে। অথচ এসব ল্যাব পরিচালনার জন্য একজন করে ল্যাব সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা সরকারিভাবে নিয়মিত মাসিক বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। 
এসব ল্যাব স্থাপনে উপজেলায় কত টাকা খরচ হয়েছিল, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। স্থানীয় আইসিটি খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, যে ধরনের সরঞ্জাম রয়েছে, তাতে ১৮টি ল্যাবে সরকারের অন্তত ৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একটি সিন্ডিকেট আগের জেনারেশন সংস্করণের ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ওয়েবক্যাম, এলইডি টিভি, হোয়াইট বোর্ড, রাউটার, ট্যাব, সার্ভার সিস্টেমসহ ফার্নিচার  সরবরাহ করে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করে মোটা অঙ্কের টাকা লুটে নিয়েছে।
ল্যাব প্রতিষ্ঠায় কত টাকা ব্যয় হয়েছিল, সে তথ্য রাখা হয়নি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেও। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রধান ও উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ল্যাবের সমস্যা সমাধানে টেকনিশিয়ান চেয়ে বারবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ তাদের। ফলে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা, অ্যানিমেশন, রোবটিকসহ প্রযুক্তি শিক্ষার উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পড়েছে।
তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কয়েকটি কম্পিউটার এখনও সচল রয়েছে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর ল্যাবকক্ষটি তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, আইসিটি ল্যাব হিসেবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি বিশেষ কক্ষ রয়েছে। 
এসব ল্যাবে কম্পিউটার, ইন্টারনেট অ্যাক্সেস এবং অন্যান্য ডিজিটাল সরঞ্জাম রাখা হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা দেওয়ার কথা। নতুন সফটওয়্যার এবং ডিভাইস কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, তাও শিখবে তারা। বাস্তবে এ শিক্ষা অধরা বলে জানিয়েছে তামিম, রাফিদ, রেজওয়ানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৪টি শর্ত দেওয়া হয়। সেগুলোর বেশির ভাগই মানা হয়নি। এলাকার এমপিরা নিয়ম না মেনে তাদের পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ডিও লেটার দিয়ে ল্যাব স্থাপন করেছেন। 
উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা আবু রায়হান ল্যাবগুলোর করুণ অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন। ডিজিটাল ল্যাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর কার্যালয় থেকে বিভিন্ন ল্যাব পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন পাঠানো হচ্ছে। ল্যাব প্রতিষ্ঠার সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের শুধু পত্র দিয়ে জানিয়েছিল। কত বরাদ্দ, কেমন মানের ডিজিটাল সামগ্রী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করেছে, তাও তাদের লিখিত বা মৌখিকভাবে জানানো হয়নি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ই বর জ য উপজ ল র সরঞ জ ম ব যবহ র এসব ল য হয় ছ ল সরক র হওয় র আইস ট

এছাড়াও পড়ুন:

হাইব্রিড সোলারে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ

নতুন ঘরানার বেশ কয়েকটি হাইব্রিড সোলার আইপিএস সল্যুশন উদ্ভাবন করেছে প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ওয়ালটন। নতুন মডেলের হাইব্রিড সোলার আইপিএস সল্যুশন পারফরম্যান্স, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ ও সোলার প্যানেলের সহায়তায় পরিবেশবান্ধব, নবায়নযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুৎ সরবরাহের সুবিধার কথা জানাল। ফলে সৌরশক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ খরচ কমানোর সঙ্গে গ্রাহক পরিবেশ সুরক্ষায় অংশীজন হতে পারবেন।
চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী ওয়ালটনের ‘আর্ক’ ব্র্যান্ডের ১২০০ ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার, ২০৫০ ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার, ৩ হাজার ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার ও ৫৫০০ ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার ক্ষমতার হাইব্রিড সোলার আইপিএস সল্যুশন পাওয়া যাচ্ছে। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য যা ব্যবহারযোগ্য। বিশেষ করে কৃষি ও উৎপাদনভিত্তিক ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ সব উদ্যোগ পরিবেশবান্ধব সাশ্রয়ী বিদ্যুতের জন্য এমন হাইব্রিড সোলার আইপিএস সল্যুশন সিস্টেম সময়োপযোগী উদ্ভাবন।
সব মডেলের সোলার হাইব্রিড আইপিএস বিশেষ সুবিধায় রয়েছে বিশেষ কাস্টমাইজেশন সুবিধা। নিজের প্রয়োজনে গ্রাহক মডেলের কনফিগারেশন বদলে নিতে পারবেন। থাকবে অনগ্রিড ও অফগ্রিড সুবিধা। নির্মাতারা জানান, সব মডেলের সঙ্গে সোলার প্যানেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এআরসি মনো আরটিএম২০১০এম এবং আরসি মনো আরটি৭১-৪৫০এম, যা পারফরম্যান্স, দ্রুত চার্জিং ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ নিশ্চিত করে।
তা ছাড়া সোলার হাইব্রিড আইপিএস মডেলের বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো বিদ্যুৎবিভ্রাট বা ভোল্টেজ ওঠানামার সময়ে নিরবচ্ছিন্ন শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। জানা গেছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা, অফিস, হোটেল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ অন্যসব সংস্থার জরুরি অপারেশনাল সিস্টেম ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সুরক্ষিত রাখতে এসব প্যানেল সহায়ক। সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহক শুধু বিদ্যুৎ বিল কমাতে পারবেন। অন্যদিকে, পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহারে অংশীজন হওয়ার সুযোগ পাবেন।
ওয়ালটন কম্পিউটারের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, নবায়নযোগ্য, সাশ্রয়ী ও  পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিতে আমরা নতুন হাইব্রিড সোলার আইপিএস সল্যুশন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। হাইব্রিড সিস্টেম সৌরশক্তি ও গ্রিড বিদ্যুৎ থেকে স্মার্ট ইনভার্টার পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাটারি চার্জ করবে। ফলে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, বিপরীতে দীর্ঘ সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যাকআপ পাওয়া যাবে।
হাইব্রিড প্যানেলের জন্য ২০ বছরের বিক্রয়োত্তর পরিষেবা, ব্যাটারির জন্য ১২ মাস আর সোলার ইনভার্টারের জন্য ১৮ মাসের পরিষেবা পাওয়া যাবে। আগ্রহীরা ব্র্যান্ডের দাপ্তরিক সাইট থেকে বিস্তারিত
তথ্য জানতে পারবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রভাব কম দেশের শেয়ারবাজারে
  • হাইব্রিড সোলারে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ
  • ট্রাম্প শুল্ক, বিশ্ববাণিজ্য ও বাংলাদেশ
  • টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক বাঁচানো যাবে?
  • খুলনায় গ্যাস সরবরাহ দয়ার বিষয় নয়
  • খুলনায় পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ প্রকল্প ‘স্থগিতের’ প্রতিবাদ
  • অবিলম্বে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে
  • ট্রাম্পের শুল্ক আরোপে কোন কোন পণ্যে পকেট কাটা যাবে মার্কিনদের
  • বাড়ছে গরম, ঘাম ছোটাতে পারে লোডশেডিং