গাজার নিপীড়িত মানুষের প্রতি সংহতি ও বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের আহ্বানে সাড়া জানিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। 

রবিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে ‘গাজার পাশে আছি’ শীর্ষক এক বিবৃতিতে তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। আগামী সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে।

বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গণহত্যার মুখে নীরব থাকতে পারি না এবং থাকবো না। গাজার নিপীড়িত মানুষের প্রতি অকুণ্ঠ সংহতি জানিয়ে আমরা সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছি। এদিন কোন ক্লাস, ল্যাব বা অফিস চলবে না।

আরো পড়ুন:

নিরাপত্তা শঙ্কায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

অভ্যুত্থান বিরোধীদের তথ্য চেয়ে ইবি প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি

তারা আরো বলেন, দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী ও তাদের মিত্রদের হাতে প্রতিদিন নিরপরাধ নারী, পুরুষ, শিশু এমনকি নবজাতকরাও নৃশংসতার শিকার হচ্ছে। এটি যুদ্ধ নয়, এটি পরিকল্পিত জাতিগত নিধন। বিশ্ব নেতারা যখন নীরব, তখন আমরাই সত্যের পক্ষে কণ্ঠ তুলে ধরি।”

শিক্ষার্থীদের মতে, এই ধর্মঘট শুধুই প্রতিবাদ নয়; এটি মানবতার পক্ষে অবস্থান, একটি সম্মিলিত চিৎকার এবং যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ঘোষণা। তারা দেশের সব শিক্ষার্থীদের এ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শুল্ক আরোপের সমালোচনায় খোদ ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্বব্যাপী শুল্ক আরোপের ঘোষণা নিয়ে সমালোচনা করেছেন খোদ তার ঘনিষ্ঠ ধনকুবের ব্যবসায়ী নেতারা। বুধবার ট্রাম্পের ওই শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর থেকে সারা বিশ্বে পুঁজিবাজারগুলোয় ব্যাপক দরপতন হচ্ছে। 

ট্রাম্পের সমর্থক ধনকুবের বিনিয়োগকারী বিল অকম্যান গত রোববার সতর্ক করে বলেছেন, নতুন শুল্ক আরোপ নিয়ে সামনে অগ্রসর হলে সেটা অর্থনৈতিকভাবে পরমাণু যুদ্ধ শুরু করার শামিল হবে। ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেছিলেন অকম্যান। খবর সিএনএন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাকি বিশ্বের বাণিজ্যে ভারসাম্য আনার কথা বলে ২ এপ্রিল বেশ কয়েকটি দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তালিকায় থাকা কয়েকটি দেশের ওপর তিনি উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের কথা বলেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’–এ এক পোস্টে অকম্যান লিখেছেন, যদি নতুন শুল্ক কার্যকর হয়, তবে বাণিজ্যিক বিনিয়োগ ক্রমশ গতি হারাবে এবং ক্রেতারা অর্থ ব্যয় বন্ধ করে দেবেন।

অকম্যান আরও লিখেন, ‘বাকি বিশ্বের কাছে আমাদের যে সুনাম রয়েছে, আমরা সেটির গুরুতর ক্ষতি করব এবং এই সুনাম পুনরুদ্ধার করতে কয়েক বছর এবং সম্ভবত কয়েক দশক লেগে যাবে।’

অকম্যানের এই পোস্ট ১ কোটি ৬০ লাখ বার দেখা হয়েছে।

পারশিং স্কয়ার ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অকম্যান আরও বলেছেন, ‘যদি ট্রাম্প তাঁর পথ পরিবর্তন না করেন, তবে আমরা নিজেদের তৈরি করা একটি অর্থনৈতিক পরমাণু দুর্যোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এবং আমাদের আশ্রয় খোঁজা শুরু করা উচিত।’

কেন তিনি এ কথা বলছেন, তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন অকম্যান। তিনি বলেন, ‘একটি অর্থনৈতিক পরমাণু যুদ্ধের মাঝখানে কোনো সিইও এবং কোনো পরিচালনা পরিষদ আমাদের দেশে বড়, দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি দিতে কি স্বস্তিবোধ করবেন? প্রেসিডেন্ট বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক নেতাদের আস্থা হারাতে শুরু করেছেন।’

ট্রাম্প বুধবার সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা সব পণ্যের ওপর যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, তা গত শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। সর্বশেষ আরোপ করা শুল্ক কার্যকর হবে আগামীকাল বুধবার থেকে।

অন্যান্য লাখো কোটিপতি ও ধনকুবের ব্যবসায়ীরাও খোলাখুলি ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেছেন। তাঁদের একজন জেমি ডিমোন। তিনি জেপিমরগ্যান চেজ–এর চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনিও ট্রাম্পের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

গতকাল সোমবার ডিমোন সতর্ক করে বলেন, শুল্কের ফলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, বৈশ্বিক অর্থনীতি মন্দার দিকে ধাবিত হওয়ার এবং বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। 

শেয়ারহোল্ডারদের কাছে পাঠানো বার্ষিক চিঠিতে ডিমোন আরও লেখেন, ‘সাম্প্রতিক শুল্ক খুব সম্ভবত মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি করবে এবং অনেকেই মনে করছেন, এতে মন্দার সম্ভাবনাও অনেক বাড়বে। শুল্কের কারণে মন্দা দেখা দেবে কি দেবে না, তা নিয়ে এখনো হয়তো প্রশ্নের অবকাশ আছে, কিন্তু এটা অর্থনীতির গতি হ্রাস করবে।’

আরেক কোটিপতি বিনিয়োগকারী স্ট্যানলি ড্রুকেনমিলার গতকাল এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, তিনি ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপের পক্ষে নন।

গতকাল রাতে ফিশার ইনভেস্টমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান ধনকুবের কেন ফিশার এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, ‘ট্রাম্প (গত) বুধবার যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটা বোকামি, ভুল, চরম উদ্ধত, ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতাকে অবজ্ঞা করা এবং সমস্যাই নয়—এমন একটি বিষয়কে ভুল যন্ত্র দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা। আমার অভিজ্ঞতা বলছে, এটা ব্যর্থ হবে এবং সমস্যা যতটা তার চেয়ে আতঙ্ক বেশি এবং এখান থেকে এটা অতিরঞ্জিত।’

ফিশার এদিন বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, তিনি সাধারণত প্রেসিডেন্টদের কার্যক্রম নিয়ে জনসম্মুখে কথা বলেন না। কিন্তু শুল্ক নিয়ে এখন পর্যন্ত ট্রাম্প যা করেছেন, সেটা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ