শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সাইফ পাওয়ারটেকের নিলামে তোলা সম্পদের নিলাম ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনায় বসছে কোম্পানিটি। আজ রোববার শেয়ারবাজারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক কর্তৃপক্ষ।

কোম্পানিটি জানিয়েছে, ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই নিলামের বিষয়টির দ্রুত সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটি আশা করছে, দুই পক্ষের আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান হবে। ফলে সাইফ পাওয়ারটেকের ওপর কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে না।

বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) মহাখালী শাখার গ্রাহক সাইফ পাওয়ারটেক। ব্যাংকটি তার ঋণের প্রায় ৫১৮ কোটি টাকা অনাদায়ি বা বকেয়া ঋণ আদায়ে সাইফ পাওয়ারটেকের নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের দুটি বন্ধকি জমি নিলামে তুলেছে। গত ২০ মার্চ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই সম্পদ নিলামে তোলা হয়। ব্যাংকের পক্ষ থেকে সাইফ পাওয়ারের মালিকানায় থাকা যে দুটি বন্ধকি জমি নিলামে তোলা হয়েছে, তার পরিমাণ সাড়ে ৫৭ শতাংশের বেশি। নিলামে এই সম্পত্তির জন্য ২৪ এপ্রিলের মধ্যে আগ্রহী ক্রেতাদের দরপ্রস্তাব জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ব্যাংকের নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে।

ব্যাংকের নিলাম বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, সাইফ পাওয়ারটেকসহ মোট তিনটি কোম্পানির সম্পত্তি নিলামে তোলা হয়েছে। এই তিন কোম্পানির কাছে ব্যাংকটির অনাদায়ি ঋণের পরিমাণ ৭৫৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সাইফ পাওয়ারটেক ছাড়াও নিলামে থাকা অন্য দুটি কোম্পানি হলো ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও ম্যাক্সন পাওয়ার লিমিটেড। এর মধ্যে ই-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাছে ব্যাংকের অনাদায়ি পাওনা প্রায় ১৯৮ কোটি টাকা এবং ম্যাক্সন পাওয়ারের অনাদায়ি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এই তিন কোম্পানিরই মালিক তরফদার মো.

রুহুল আমিন। তিন কোম্পানির মধ্যে তিনি সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আর বাকি দুটির চেয়ারম্যান। কোম্পানি তিনটির মধ্যে শুধু সাইল পাওয়ারটেক শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত।

সাইফ পাওয়ারটেক মূলত চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসার পাশাপাশি কোম্পানিটির জেনারেটর ও ব্যাটারির ব্যবসাও রয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের মধ্যে তিনিও ছিলেন একজন।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির সম্পত্তি নিলামে তোলার ঘটনায় এটির শেয়ারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দেয়। এ কারণে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে কোম্পানিটির কাছে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে আজ রোববার জানানো হয়, ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বিষয়টির দ্রুত সমাধানে কাজ করছে তারা।

সাইফ পাওয়ারটেক ২০১৪ সালে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। আইপিওতে প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করা হয় ৩০ টাকায়। এর মধ্যে ১০ টাকা ছিল ফেসভ্যালু বা অভিহিত মূল্য আর ২০ টাকা প্রিমিয়াম বা অধিমূল্য। ১০ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য আজ দিন শেষে নেমে এসেছে ১১ টাকা ৪০ পয়সায়। আজ ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২০ পয়সা বা পৌনে ২ শতাংশ কমেছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গত বছরের জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সেই লভ্যাংশের পুরো অর্থ বিতরণ করতে না পারায় কোম্পানিটিকে দুর্বল মানের জেড শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। গগ জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছর শেষে কোম্পানিটি সাড়ে ২৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র অন দ য় ব ষয়ট ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

তৃতীয় পক্ষের অ্যাপে মোবাইল প্যাকেজ ওভার চার্জিং

বিকাশের মতো তৃতীয় পক্ষের প্ল্যাটফর্মে উচ্চ মূল্যে মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ বিক্রির অভিযোগ এসেছে। ‘মোবাইল প্যাকেজ ওভার চার্জিং: এ কল ফর রেগুলেটরি অডিট অ্যান্ড কনজিউমার প্রোটেকশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে মোবাইল অপারেটর অ্যাপে তালিকাভুক্ত দাম এবং বাহ্যিক চ্যানেলের মাধ্যমে চার্জ করা মূল্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

প্রধান উপদেষ্টার তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব এ তথ্য ফেসবুকে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্যাকেজগুলো অনুমোদিত মূল্যের চেয়ে ২০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ বেশি হারে বিক্রি হয়েছিল। মোবাইল অপারেটরের নিজস্ব অ্যাপে ৩০ দিনের ৪৫ জিবি ডেটা প্যাকের দাম ছিল ৪৯৭ টাকা, কিন্তু একই প্যাকটি বিকাশের মাধ্যমে ৫৯৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি।

১৯৮ টাকায় তালিকাভুক্ত একটি ৭ দিনের ২৫ জিবি প্যাক বিকাশের মাধ্যমে একই দামে ২০ জিবি প্যাক হিসাবে বিক্রি হয়েছিল, যা ৮০ শতাংশ ওভারচার্জ।

২২৭ টাকা মূল্যের একটি সাত দিনের ৪০ জিবি প্যাক বিকাশে একই মূল্যের জন্য ৩৫ জিবি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা ভিত্তি মূল্যের তুলনায় ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি।

৭  দিনের ১০ জিবি এবং ৩-দিনের ৫ জিবি বিকল্পগুলোসহ অন্যান্য প্যাকেজগুলোও ৫৫ শতাংশ থেকে ৫৮ শতাংশ অতিরিক্ত চার্জে বিক্রি হয়েছে।
ফয়েজ আহমেদ লেখেন, বিটিআরসিতে সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের অধীনে একটি সুষ্পষ্ট প্রাইসিং রেগুলেশন রয়েছে। তার তোয়াক্কা না করে ২০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত প্রাক্কলন অতিরিক্ত মূল্য আদায় গ্রাহকস্বার্থ ও রাষ্ট্রের সার্বিক স্বার্থবিরোধী বলেই বিবেচিত হওয়া উচিত। বিষয়টি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের রেগুলেটরি শাস্তির মুখোমুখি করা দরকার বলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ