ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ: সোমবার হেফাজতের ‘বৈশ্বিক হরতাল’
Published: 6th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনে গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানিয়ে তাদের ওপর ইসরাইলের চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার বাদ জোহর ‘বৈশ্বিক হরতাল’ কর্মসূচি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
রবিবার (৬ এপ্রিল) সংগঠনটির আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে সর্বস্তরের ওলামায়ে কেরাম এবং সমস্ত মাদরাসা, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-জনতাকে একযোগে বৈশ্বিক হরতাল পালনের আহ্বান জানান।
ফিলিস্তিন দখলকারী ও গণহত্যাকারী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে থামাতে বৈশ্বিক জিহাদ অনিবার্য হয়ে পড়েছে জানিয়ে হেফাজত নেতারা বলেন, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা পৃথিবীর সমস্ত নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে। কথিত মানবাধিকারের ধ্বজাধারী আমেরিকার বিবেক গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরাইলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আমেরিকার প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতায় অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের ওপর বছরের পর বছর দখলবাজি ও বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সারখ্যাত দেশটি। অথচ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নির্বিকারচিত্তে শুধু দেখেই যাচ্ছে, কারণ ফিলিস্তিনিরা মুসলমান। মুসলমানের মানবাধিকার ‘নাই’ করে দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ইতিহাসের চরম ভুল পথে হাঁটছে, যা তাদের জন্য আত্মঘাতী।
তারা বলেন, আমেরিকার জনগণকে আমরা সর্বোচ্চ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান করছি। এতে তাদের দায় রয়েছে। কারণ তাদের ভ্যাট ও ট্যাক্সের টাকায় ইসরাইলকে অবিরত সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের দাসত্ব গ্রহণ করা আমেরিকার ক্ষমতালোভী শাসকগোষ্ঠী। মার্কিন শাসকগোষ্ঠীকে এই রাষ্ট্রীয় দাসত্বনীতি থেকে বের করে আনার রাজনৈতিক উদ্যোগ আমেরিকার জনগণকেই নিতে হবে। জবাবদিহিতার মধ্যে তাদের শাসকগোষ্ঠীকে আনতে না পারলে পৃথিবীতে মানবতার কোনো মূল্যই আর থাকবে না।
নেতারা আরো বলেন, পৃথিবীর পরিশুদ্ধতা ও মানবতার অগ্রগতির জন্য অবৈধ জালিম রাষ্ট্র ইসরাইলের পতন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। ফিলিস্তিন দখলকারী ও গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরাইলকে থামাতে বৈশ্বিক জিহাদ অনিবার্য হয়ে পড়েছে। এর অংশ হিসেবে মুসলিম বিশ্বের সামরিক প্রতিরোধ, ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক তৎপরতা, প্রতিবাদী গণ-আন্দোলন ও ইসরাইলি পণ্য বয়কটের কর্মসূচি একযোগে বিশ্বব্যাপী পালন করতে হবে, যতক্ষণ না অবৈধ ইসরাইল রাষ্ট্রের সমূলে বিনাশ ঘটে। এক্ষেত্রে ধর্ম ও দল-মত নির্বিশেষে দুনিয়ার সমগ্র মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষের অংশগ্রহণ কাম্য।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম র ক র গণহত য
এছাড়াও পড়ুন:
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা বললে সরকার পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুললে সরকার পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ‘দোহাই’ দেয় বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। আজ শুক্রবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সমাবেশে এ কথা বলেছেন তিনি। ‘জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে’ এই সমাবেশের আয়োজন করে ইনকিলাব মঞ্চ।
আজ শাহবাগে এই উন্মুক্ত প্রান্তরে তাঁরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেটা ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে পূরণ হওয়ার কথা ছিল বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন সারজিস আলম। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যখনই তাদের কাছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তারা আমাদের পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়।’ এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘যখন শাপলা চত্বর, পিলখানা এবং জুলাইয়ে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, তখন পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কোথায় ছিল?’
তবে সারজিস আলম তাঁর বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নিয়ে এই অবস্থান ব্যক্তকারী হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা উপদেষ্টা কিংবা পশ্চিমা কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি।
এ সময় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে সারজিস বলেছেন, ‘এই জেনারেশনকে (প্রজন্ম) ভয় করুন। যদি এই জেনারেশনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আবেগ নিয়ে খেলা করেন, তাহলে এই জেনারেশন সকল ক্ষমতার বিপক্ষে গিয়ে যে কাউকে টেনেহিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারে।’
এই সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সহসমন্বয়ক মোসাদ্দেক ইবনে আলী বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর একটি রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে, তারা বিদেশি দূতাবাসগুলোর কাছে নিজেদের শির দাঁড়া বিক্রি করে দিয়েছে। দল গঠনের পর তারা দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়, কিন্তু কোথাও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা ছিল না। এই সরকারের ঘুড়িটা অন্তর্বর্তীকালের মধ্যে ঘুরলেও তার নাটাইটা বিদেশি কোনো দূতাবাসের হাতে রয়েছে।
সরকার কোন কোন বিচার করছে এবং সেটা কতখানি হয়েছে, তা স্পষ্ট করে বলার দাবি জানান এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেন, পৃথিবীতে অনেক ফ্যাসিবাদী দলকে চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের নজির আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সেই নিয়মেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
‘জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে’ সমাবেশে উপস্থিত দর্শকদের একাংশ। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে