তরলকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম এপ্রিল মাসে প্রতি কেজিতে ১ পয়সা কমানো হয়েছে। এপ্রিলে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪৫০ টাকা। গত মাসেও একই দাম ছিল।
রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। আজ সন্ধ্যা ছয়টা থেকে নতুন দর কার্যকর হয়।
বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, বেসরকারি এলপিজির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১২০ টাকা ৮০ পয়সা, যা গত মার্চ মাসে ছিল ১২০ টাকা ৮১ পয়সা। এই হিসাবে বিভিন্ন আকারের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারিত হয়।
সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৬৯০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আর গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির (অটো গ্যাস) নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ৪১ পয়সা, যা আগে ছিল ৬৬ টাকা ৪৩ পয়সা।
বিইআরসি প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে। তবে বাজারে নির্ধারিত দামে এলপিজি বিক্রি না হওয়ার অভিযোগ আছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এলপ জ র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস বিচ্ছিন্ন, ৯০ কারখানা বন্ধ
বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় ঢাকা ইপিজেডে অবস্থিত ইউনাইটেড গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে কোম্পানির ৯০টি কারখানা। এসব কারখানায় অন্তত ৯০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এ ঘটনায় শ্রমিক অসন্তোষের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে কোম্পানিটির কাছে তিতাস গ্যাসের বকেয়া ৪৭৮ কোটি টাকা। তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ জানান, বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও বিল না দেওয়ায় গতকাল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিটি ২০২২ সালের দিকে একবার বকেয়া কিস্তিতে দেওয়ার বিষয়ে আবেদন করেছিল। আদালত বকেয়া কিস্তিতে বিল পরিশোধ করার আদেশ দেন। এর পরও তারা টাকা পরিশোধ করেনি।
ইউনাইটেড গ্রুপের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাসের দাম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেন্দ্র দুটি হলো ঢাকা ইপিজেড এলাকায় ৮৬ মেগাওয়াট ও চট্টগ্রাম ইপিজেডে অবস্থিত ৭২ মেগাওয়াট কেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি বাণিজ্যিক। তারা সরকারের কাছে নয়, গ্রাহকের কাছে সরাসরি বিদ্যুৎ বিক্রি করে। তাই কেন্দ্র দুটিকে ক্যাপটিভ বিবেচনায় গ্যাসের দাম ঘনমিটারপ্রতি ৩১.৫০ টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
একই সময়ে আইপিপির (বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র) জন্য গ্যাসের দর ছিল ১৬ টাকা। দাম কম হওয়ায় আইপিপি রেটে গ্যাস পেতে তদবির শুরু করে ইউনাইটেড। রেগুলেটরি কমিশন সেই দাবি নাকচ করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিইআরসির মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়। বিইআরসির তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জানিয়ে দেন, বিইআরসি আইনে কোনোভাবেই ইউনাইটেডের বিদ্যুৎকেন্দ্র আইপিপি হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।
তাই ক্যাপটিভের দরেই তাদের গ্যাস কিনতে হবে। পরে কোম্পানিটি আদালতের শরণাপন্ন হয়। সুপ্রিম কোর্টেও তাদের দাবি নাকচ হয়। এরপর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে নিজেদের ঘনিষ্ঠ এই ব্যবসায়ীর চাওয়া পূরণ করে। অন্তর্বর্তী সরকার গত ৭ মার্চ নির্বাহী আদেশে দেওয়া সুবিধা বাতিল করে। জ্বালানি বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, ইউনাইটেড গ্রুপকে ক্যাপটিভ রেটেই গ্যাসের দাম দিতে হবে।
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ গতকাল সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, বকেয়া আদায়ে দফায় দফায় যোগাযোগ করলেও ইউনাইটেড গ্রুপ সাড়া দেয়নি। তবে ইউনাইটেড পাওয়ারের হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স শামীম মিয়া সমকালকে বলেন, তিতাসের দাবি অযৌক্তিক। নিয়ম অনুসারেই আইপিপি দরেই গ্যাস বিল হওয়া উচিত। তাই আমাদের কোনো বকেয়া নেই। পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই গ্যাসলাইন কেটে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক শরিফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, না জানিয়েই গ্যাসলাইন কেটে দিয়েছে তিতাস। এখানে ৯০টি কারখানায় প্রায় ৯০ হাজার শ্রমিক রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় সব কারখানাই বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ না পেলে পণ্য রপ্তানিতে সমস্যা হবে। শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।