বন্দরে বির্তকিত ফতোয়া দেয়ায় মসজিদের ইমাম নিয়ে উত্তেজনা
Published: 6th, April 2025 GMT
হিল্লা বিয়ে করে মেলামেশার পর ফরজ গোসলের এক ফোটা পানির সাথে ৭০টি ফেরেস্তা থাকে এবং একটি শহীদের মর্যাদা পাওয়া যায়। এমন ফতোয়া নিয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের সোমবাড়িয়া বাজার জামে মসজিদের ইমামকে নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ইমাম মাওলানা আতিকুল্লাহ তার মসজিদের মোয়াজ্জেম হাফেজ শরীফ উদ্দিনকে এমন ফতোয়া দিয়ে হিল্লা বিয়ে করার জন্য ফুসলানো ও পরে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার থেকে এ বিষয়টি নিয়ে এখারায় গুঞ্জন শুরু হলে রোববার (৬ এপ্রিল) এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা ঝড় বইতে থাকে।
এমন বির্তকিত ফতোয়া দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকায় ইমামের পক্ষে-বিপক্ষে দু’টি গ্রুপ মুখমোখি অব্স্থান নিয়েছে। যে কোন সময় সংঘাতে লিপ্ত হতে পারে এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের লক্ষনখোলা নাসিক ২৫নং ওয়ার্ডের সোমবাড়িয়া বাজার জামে মসজিদটি সোহাগপুর টেক্সটাইল মিল কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। মিলের অর্থায়নে ইমাম-মোয়াজ্জেমের বেতন ভাতা দেয়া হয়। তবে এ মসজিদে নামাজ আদায় করেন স্থানীয় মুসল্লীরা।
এ মসজিদের ইমাম মাওলানা আতিকুল্লাহ তার মসজিদের মোয়াজ্জেমকে হিল্লা বিয়ের জন্য চাপ দেয়। মোয়াজ্জেম তাতে রাজি না হলে তাকে হাদিয়া দেয়ার প্রলোভন দেখায়। তাতেও রাজি না হলে তাকে ফতোয়া দিয়ে রাজি করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে তাকে হুমকি দেন এ কথা কাউকে বললে তার চাকরি থাকবে না।
চাকুরি হারানোর ভয়ে সে দীর্ঘ ৮ মাস এ কথা গোপন রাখে। সে থেকে ইমাম এ মসজিদ থেকে মোয়াজ্জেমকে তাঁড়ানোর জন্য নানা ফন্দি আটতে থাকে।
কোম্পানীতে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দেন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে সে এ কথা সোমবাড়িয়া বাজার কমিটিকে জানালে সাথে সাথে বিষয়টি মুসল্লীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
এ ব্যপারে মোয়াজ্জেম হাফেজ শরীফ উদ্দিন জানান, তাকে একটি হিল্লা বিয়ের জন্য তার মসজিদের ইমাম আতিকুল্লাহ চাপ প্রয়োগ করে। তাকে হাদিয়া দেয়ার প্রলোভন দেখায় এবং বলে হিল্লা বিয়ে করে মেলামেলার পর ফরজ গোসল অনেক ছোয়াবের।
গোসলের এক ফোটা পানির সাখে ৭০ ফেরস্তা থাকে অনেক নেকী পাওয়া যায় ও একটি শহীদের মর্যাদা পাওয়া যায়।
তাকে বলে তুই একরাম ফুর্তি করবি। মনে করবি তোর নাইটপ্রেসার হয়েছে। ইমামের কথায় সে ইমামকে বলেছেন, আমি নতুন বিয়ে করেছি আমি আমার স্ত্রীর হক কাউকে দিতে পারবোনা। এতে ইমাম ব্যর্থ হলে তাকে অন্য কাউকে সংগ্রহ করে দিতে বলে।
অবশেষে তার চাকুরির কথা চিন্তা করে মাদ্রসা ছাত্র ইমরান হোসেন তার এক বন্ধুকে ইমামে কাছে নিয়ে এলে ইমামের প্রলোভেনে সেই মাদ্রসা ছাত্র রাজি না হওয়ায় ইমাম তার মোয়াজ্জেমের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়।
এ ব্যপারে ইমাম মাওলানা আতিকুল্লাহর সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি ৮ মাস পূর্বের। চৌড়াপাড়া বড় মসজিদের ইমাম প্রয়াত মাওলানা ওবায়দুল্লাহ নাকি তাকে হিল্লা বিয়ের জন্য একজন লোক যোগাড় করে দিতে বলেছিলেন। তাই আমি সরল মনে তার মসজিদের মোয়াজ্জেমকে বলেছিলেন।
মোয়াজ্জেম রাজি না হওয়ায় তিনি স্থানীয় একজনকেও রাজি করাতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু কেহ রাজি না হওয়ায় এ বিষয়টি সেখানেই শেষ হয়ে গেছে।
এ ব্যপারে এলাকাবাসীর পক্ষে ব্যবসায়ী নূরু জানান, এ মসজিদের ইমাম বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বির্তকিত কথা বলে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের হৃদয়ে আঘাত করে। তার এমন ফতোয়া এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে তাই আমি এলাকার ন্বার্থে থানায় অভিযোগ দায়ের করি যাতে প্রশাসন বিষয়টি হস্তক্ষেপ করে এবং এলাকায় শান্তির পরিবেশ বজায় থাকে।
এ ব্যপারে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পদক শাহজালাল বলেন, হিল্লা বিয়ের বিষয়টি অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এ নিয়ে এখন কেন কথা উঠবে? মোয়াজ্জেমকে এই ইমাম চাকুরি দিয়েছে। এখন ইমামের কথা সে শুনেনা তাই ইমাম তার প্রতি একটু রাগারাগি করায় সে ইমামের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রভাকান্ডা ছড়াচ্ছে।
আর একটি গ্রুপ রয়েছে যারা এ মসজিদের বিপক্ষে দীর্ঘ ১৬ বছর ছিল তারাই আবার এ মসজিদে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তবে মিল কর্তৃপক্ষ ইমামকে কিছু দিনের ছুটি দিয়েছে এলাকার পরিবেশ শান্ত হওয়ার জন্য। আর মোয়াজ্জেমকে অন্য মসজিদে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যপারে বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ নেয়া হয়েছে। লাঙ্গলবন্দে স্নান উৎসবে পুলিশ ব্যস্ত থাকায় তদন্তে যেতে পারেনি। এখন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: মসজ দ ন র য়ণগঞ জ ত র মসজ দ র এল ক ব স য় র জন য এ মসজ দ এল ক য় ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
অতীত জেনে মাধুরীকে বিয়ে করিনি: শ্রীরাম নেনে
১৯৯৯ সালে কোটি ভক্তের হৃদয় ভেঙে ডা. শ্রীরাম নেনেকে বিয়ে করেন বলিউডের ‘ধক ধক গার্ল’ মাধুরী দীক্ষিত। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ফলে রুপালি জগতের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়ে। ২০১১ সালে ভারতে ফিরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন নেনে। মাধুরীও আবার নিজ অঙ্গনে ফিরেন। এ দম্পতি দুই সন্তানের জনক-জননী।
কয়েক দিন আগে ভারতের জনপ্রিয় ইউটিউবার রণবীর আলাহাবাদিয়াকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মাধুরীর স্বামী। এ আলাপচারিতায় জানতে চাওয়া হয়, একজন সুপারস্টারকে বিয়ে করে অনুভূতি কেমন এবং জীবন কতটা বদলেছে। জবাবে নেনে বলেন, “আমেরিকাতেও এমনটা হয়েছিল! আমি তাকে সেভাবে চিনতাম না। সে আমার স্ত্রী এবং পার্টনার।”
বিয়ের পরের চ্যালেঞ্জিং সময়ের কথা জানিয়ে নেনে বলেন, “পরিচয় গোপন রাখাটা কঠিন ছিল, সাধারণ মানুষের মতো আচরণ করতে পারার ব্যাপার ছিল। ভাগ্যের বিষয় হলো— আমরা দুজনেই এটা উপভোগ করি। আমরা সবকিছুর জন্য খুবই কৃতজ্ঞ। মাধুরী খুবই সরল মনের মানুষ। ভক্ত ও অন্য মানুষের সঙ্গে তার আচরণই প্রমাণ। আমার ক্ষেত্রেও একই কথা। আমরা কেবল ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি।”
আরো পড়ুন:
১৫ দিন নিজের প্রস্রাব নিজে পান করেছি: পরেশ রাওয়াল
‘সাজিদ খান আমার পোশাক খুলতে বলেন’
মাধুরীর অতীত জেনে বিয়ে করেননি নেনে। মাধুরীও ঠিক তাই। নেনে বলেন, “আমরা পরস্পরের যত্ন নিই। আমি কখনো তার অতীত জানিনি এবং সেও আমারটা না। আমরা ভিন্ন অঙ্গন থেকে এসেছি। কিন্তু আমরা একই সময়ের, একই অঞ্চলের। আমরা দুজনেই মহারাষ্ট্রের। কেউই ভাবিনি যে আমরা বিয়ে করব। এটি ছিল ভাগ্য। এটি আমার জীবনের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ঘটনা।”
ভারতে ফিরে আপনি কি আরো বেশি সুখী? জবাবে নেনে বলেন, “আমি আরো সুখী এটা বলতে পারব না। এটা আলাদা ব্যাপার। সেখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) আপনি অপরিচিত, স্বাধীন। অনেকটাই স্ব-চালিত। ভারতে আমাদের সংস্কৃতি আছে, অনেক বন্ধন রয়েছে, তাই এটি আলাদা।”
১৯৮৪ সালে ‘অবোধ’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি জগতে পা রাখেন মাধুরী। এই সিনেমায় তার নায়ক ছিলেন বাঙালি অভিনেতা তাপস পাল। ১৯৮৮ সালে ‘তেজাব’ সিনেমার মাধ্যমে দর্শকমহলের সর্বত্র বিপুল সাড়া ফেলে দেন এই অভিনেত্রী।
আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে নব্বই দশকের শেষ পর্যন্ত বলিউড কাঁপান মাধুরী। এই সুন্দরী অভিনেত্রীর ঝোলায় জমা পড়েছে— ‘রাম লক্ষ্মণ’, ‘তেজাব’, ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’, ‘কোয়লা’, ‘দিল তো পাগল হ্যায়’, ‘খলনায়ক’–এর মতো অজস্র সুপারহিট সিনেমা। সর্বশেষ ‘ভুল ভুলাইয়া থ্রি’ সিনেমায় দেখা যায় মাধুরীকে। এটি গত বছর মুক্তি পায়।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ঢাকা/শান্ত