ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাঁকে তিন মাসের ছুটি দেওয়া হয়েছে, যা আগামীকাল সোমবার থেকে কার্যকর হবে। পাশাপাশি এমডির অনিয়ম তুলে ধরে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি। চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের ঋণসংক্রান্ত অনিয়মে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কারণে মুনিরুল মওলার বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসলামী ব্যাংক।

আজ রোববার ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৩৫৯তম সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডি ওমর ফারুক খানকে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক ব্যাংকার ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে চেয়ারম্যান করে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৭ সাল থেকে ব্যাংকটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এস আলমের মালিকানাধীন গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। নতুন পর্ষদ গঠনের পর অনিয়ম খুঁজতে চারটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়।

ব্যাংকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এসব নিরীক্ষায় এস আলম–সংশ্লিষ্ট প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার ঋণে অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে আসে। এতে এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ পরিচালনা পর্ষদের সভায় এমডিকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী তাঁকে যেন অপসারণ করে, এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে তাঁর অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে চিঠি দেবে ইসলামী ব্যাংক। সাধারণত ব্যাংকের এমডিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এ ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক উদ্যোগী হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিচ্ছে।

ইসলামী ব্যাংক তদারকিতে যুক্ত থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এস আলম পালিয়ে গেলেও এমডি বহাল তবিয়তে ছিলেন। এটি ব্যাংকটির কর্মকর্তারা কোনোভাবেই মানতে পারছিলেন না। এ জন্য পর্ষদ বাধ্য হয়ে এমডিকে ছুটিতে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া নিরীক্ষা প্রতিবেদন স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য এমডিকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া বিকল্প ছিল না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ এস আলম ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘প্রত্নকথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন তিন উপদেষ্টার

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রকাশিত ভ্রমণ বই ‘প্রত্নকথা’র মোড়ক উন্মোচন করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জেলার উন্নয়ন-সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ সভা শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর উপস্থিতিতে বইটির আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
ভ্রমণ বইটি প্রকাশনার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা তুল জান্নাত বলেন, 
তিনি অত্যন্ত আনন্দিত যে, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রত্ননগরী খ্যাত মুন্সীগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখা, জেলার পর্যটনকে সমৃদ্ধ করা ও আগামী প্রজন্মের কাছে এগুলোকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এ ধরনের একটি ভ্রমণ বই প্রকাশ করতে পেরেছেন।
ভ্রমণ বইটিতে মুন্সীগঞ্জের প্রত্নতাত্ত্বিক ও দর্শনীয় ৬২টি স্থানের সচিত্র বর্ণনা, অবস্থান, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকের কথা বিবেচনায় বইটির সব তথ্য 
এবং বর্ণনা বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় 
লিখিত হয়েছে। 
বইটি সম্পাদনা করেন জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শরীফ উল্যাহ। তিনি জানান, বইটি মূলত দেশি-বিদেশি পর্যটকের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেলার একটি ভ্রমণ গাইড হিসেবে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব নিজাম উদ্দিন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মফিদুর রহমান, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের  মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাবিনা আলম প্রমুখ। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ