বাড়িতে প্রেমিকের রক্ত ছিটিয়ে নিখোঁজের নাটক সাজান গৃহবধূ: পুলিশ
Published: 6th, April 2025 GMT
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঘরের মেঝেসহ বাড়ির বিভিন্ন স্থানে প্রেমিকের রক্ত ছিটিয়ে নিখোঁজ হওয়ার নাটক সাজানো গৃহবধূ আঁখি আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রিশিবপুর ইউনিয়নের পাদ্রিশিবপুর গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। গৃহবধূর প্রেমিক হাসান মাহমুদও (৩২) আটক হন।
রবিবার (৬ এপ্রিল) এতথ্য জানান কলাপাড়া থানার ওসি তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে, কলাপাড়া উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চাকামইয়া গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন আাঁখি। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় অনেকে ধারণা করেন, তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার উদ্দেশ্যে অপরহরণ করা হয়েছিল উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন আঁখির বাবা আলমগীর হাওলাদার। ওই মামলায় আাঁখির স্বামী আলমগীর হোসেনসহ শ্বশুর বাড়ির ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। এরপর ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে আঁখি আক্তার ও তার প্রেমিকা মাহমুদ হাসানকে পাদ্রিশিবপুর গ্রাম থেকে আটক করে।
আরো পড়ুন:
ডাবল মার্ডারে গ্রেপ্তার, তাহসিন হত্যাকাণ্ডে রিমান্ডে ছোট সাজ্জাদ
শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি
পুলিশ জানায়, প্রায় ৯ মাস আগে আঁখি আক্তারের ছোট বোনকে দেখতে তার বাবার বাড়ি বাকেরগঞ্জের পূর্ব মহেষপুর গ্রামে যান হাসান। সে সময় হাসান আঁখি আক্তারের বোনকে পছন্দ করলেও তারা হাসানকে পছন্দ করেনি। বিষয়টি হাসানকে ফোন করে জানান আঁখি। এরপর তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে কয়েকবার কথা হয়। এক পর্যায়ে হাসানের সঙ্গে আঁখির প্রেমর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হাসান আঁখিকে নিয়ে যেতে কলাপাড়ায় আসেন। তার আগে তিনি আমতলীতে নিজের একব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে আঁখির স্বামী আলমগীর হোসেনের বাড়ি কলাপাড়ার পশ্চিম চাকামাইয়া যান। আঁখি তার প্রেমিকের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে স্বামীর ঘরের মেঝেসহ বাড়ির বিভিন্ন স্থানে ছিটিয়ে দেন। পরে তিন সন্তানকে রেখে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যান আঁখি। এ ঘটনায় ওই দিন হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে স্বামী আলমগীর হোসেনসহ শ্বশুর বাড়ির ৯ জনের নামে থানায় মামলা করেন আঁখির বাবা আলমগীর হাওলাদার। পরে পুলিশ স্বামী আলমগীরসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে আছেন।
আঁখিকে খুঁজে বের করতে মাঠে নামে জেলা গোয়েন্দা শাখা ও থানা পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা পুলিশ হাসানের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে গৃহবধূ ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ।
কলাপাড়া থানার ওসি তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে গৃহবধূ আঁখি ও তার প্রেমিক হাসনকে আটক করেছে। তার পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন। আটকের সময় হাসানের বাড়িতে শুধু তার মা উপস্থিত ছিলেন। আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক আলমগ র হ কল প ড় গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রীকে নিয়ে মির্জা ফখরুলের আবেগঘন পোস্ট
নিজের স্ত্রী রাহাত আরা বেগমকে নিয়ে ফেসবুকে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ পোস্ট দেন তিনি। নিজের ও স্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সস্ত্রীক সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন মির্জা ফখরুল।
২০২২ সালের ডিসেম্বরের শুরুতে মির্জা ফখরুলের স্ত্রীর গুরুতর একটি রোগ শনাক্ত হয়। ওই বছর ১০ ডিসেম্বর তার অস্ত্রোপচারের নির্ধারিত দিন ছিল। এর দুই দিন আগে মধ্যরাতে বাসা থেকে আটক হওয়ার কথা স্ট্যাটাসে তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল পোস্টে লেখেন, ‘২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে যখন আমার স্ত্রীর অসুখ ধরা পড়ে, তখন আমার পৃথিবীটা এক মুহূর্তে থেমে গিয়েছিল। তিনি আমাদের পরিবারের মূল স্তম্ভ বা ভরসা। এই পরিস্থিতিতে আমি যত দ্রুত সম্ভব তার অস্ত্রোপচার করানোর সিদ্ধান্ত নিই। তার অস্ত্রোপচারের আগের দিন রাত তিনটায় আমাকে আমার নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় আওয়ামী পুলিশ। আমার মেয়ে ঢাকায় ছুটে আসে। যখন আমার স্ত্রীর শরীরে অস্ত্রোপচার চলছিল, তখন আমি ছিলাম কারাগারে। আমার কন্যারা এবং চিকিৎসক জাহিদ (বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন) ছাড়া আর কেউ তখন হাসপাতালে ছিলেন না। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান) ও আমার ভাইবোনেরা ফোনে খোঁজখবর রাখছিলেন।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমার স্ত্রী সবকিছু অসীম ধৈর্য ও হাসিমুখে মোকাবিলা করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চলা জটিল চিকিৎসার বিষয়টিই শুধু সহ্য করেননি, একই সঙ্গে প্রায় ৫০ বছর ধরে আমাদের পারিবারিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আজ (১০ এপ্রিল) সিঙ্গাপুরে তার চিকিৎসক জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত সবকিছু ভালো দেখা যাচ্ছে। তবে ছয় মাস পর আমাদের আবার যেতে হবে। আপনাদের দোয়া ও শুভকামনার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’
৩২ দিন কারাভোগের পর ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার উদ্দেশ্যে গত ৬ এপ্রিল স্ত্রী রাহাত আরা বেগমকে নিয়ে সিঙ্গাপুরে গেছেন বিএনপির মহাসচিব।