আক্কেলপুরে অটোরিকশার ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
Published: 6th, April 2025 GMT
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌরসভার একটি মহল্লার নাম শান্তা। পৌরসভার জিরো পয়েন্ট থেকে ওই মহল্লার দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। ১৫ দিন আগেও ওই পথে ব্যাটারিচালিত রিকশায় জনপ্রতি ভাড়া ছিল পাঁচ টাকা। হঠাৎ করেই ভাড়া দ্বিগুণ অর্থাৎ ১০ টাকা করে আদায় করছেন রিকশা-ভ্যানের চালকেরা।
ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মহল্লার তরুণেরা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে আক্কেলপুর-তিলকপুর সড়কে শান্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তাঁরা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় প্রায় ৩০ মিনিট সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
পরে পুলিশ আসার পর সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে নেন অবরোধকারীরা। এরপর সড়কের যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আক্কেলপুর-তিলকপুর সড়কে মহল্লার শান্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। গাছের গুঁড়ির সামনে তরুণেরা দাঁড়িয়ে আছেন। সড়কের দুই পাশে যানবাহন আটকে রয়েছে।
আন্দোলনকারী কয়েকজন বলেন, তাঁরা অটোরিকশা-ভ্যানে পাঁচ টাকা ভাড়ায় চলাচল করতেন। হঠাৎ করেই অটো রিকশা-ভ্যানের ভাড়া পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ১০ টাকা করা হয়েছে। অটোরিকশা-ভ্যানের ভাড়া নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই চালকদের সঙ্গে তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা হচ্ছে।
মোবাশ্বির হোসেন নামের এক তরুণ বলেন, ‘আমাদের মহল্লায় অটোরিকশা-ভ্যানে চলাচলের পাঁচ টাকার ভাড়া জোর করে ১০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। আমরা পাঁচ টাকার বেশি ভাড়া দেব না। এ কারণে আমরা মহল্লার তরুণেরা সবাই সড়ক অবরোধ করেছি। প্রশাসনের লোকজন আসার পর আমরা অবরোধ তুলে নিয়েছি।’
শফিকুল ইসলাম নামের একজন অটোরিকশার চালক বলেন, ‘শান্তা মহল্লায় সরাসরি অটোরিকশা চলাচল করে না। যদি আসন ফাঁকা থাকে, তাহলে শান্তার লোকজনদের অটোরিকশায় নেওয়া হয়। চালকদের কেউ ৫ টাকা আবার কেউ ১০ টাকা ভাড়া দেন। এটা নিয়ে সড়ক অবরোধ করে লোকজনের ভোগান্তি করার কোনো দরকার আছে বলে মনে হয় না।’
এ সম্পর্কে আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, সড়ক অবরোধ করার কথা জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এরপর তরুণেরা অবরোধ তুলে নিয়েছেন। ভাড়ার বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মহল ল র ১০ ট ক র সড়ক
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল বিষয়ে পিছু হটল ট্রাম্প প্রশাসন
তীব্র বিরোধিতার মুখে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বিচার বিভাগের অ্যাটর্নি এলিজাবেথ কারলান ফেডারেল আদালতকে জানিয়েছেন, অভিবাসন কর্মকর্তারা এখন বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নতুন ব্যবস্থায় ভিসা পর্যালোচনা ও বাতিল নিয়ে কাজ করছেন।
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল ও পড়াশোনার আইনি অধিকার কেড়ে নেওয়ায় আদালতে ১০০টির বেশি মামলা হয়েছে। এরপরই সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দেওয়া হলো।
মার্কিন হায়ার এডুকেশনের এক হিসাবে দেখা গেছে, ২৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুমানিক ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর ওপর ভিসা বাতিলের প্রভাব পড়েছে।
আরও পড়ুনতহবিল স্থগিত করা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা২২ এপ্রিল ২০২৫মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের ঘোষণা দেন। এরপর অনেক শিক্ষার্থীকে জোর করে বের করে দেওয়ায় কঠোর সমালোচনার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেওয়া নির্দেশনায় সরকারি অর্থ বরাদ্দ বাতিলের হুমকি দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় মামলা দায়ের করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যায়। মামলার শুনানিতে গতকাল শুক্রবার এক বিচারক জানান, সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় ঐকমত্যে পৌঁছেছে এবং সরকার তাদের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলে ট্রাম্প প্রশাসনের সরে আসার সিদ্ধান্তের বিষয়ে গতকাল রাতে একটি নিউজ প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমসও। এ সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাঁরা এখন নিরাপদে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুনটাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিং: দেশসেরা বুয়েট ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবির অবস্থান কোথায়২৫ এপ্রিল ২০২৫শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণ হিসেবে তিনটি বিষয়ের কথা বলা হচ্ছে। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর তীব্র বিরোধিতা। দ্বিতীয়ত, এ সিদ্ধান্তের ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতো। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন মহল থেকে চাপ।
এর আগে শিক্ষার্থী ভিসা (স্টুডেন্ট ভিসা) নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো ছিল—১. যেসব শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস করবেন, তাঁদের ভিসা বাতিল করা হবে; ২. যাঁরা শুধু অনলাইন কোর্সে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না; ৩. যাঁরা অনলাইন ও অফলাইন উভয় পদ্ধতিতে ক্লাস করবেন, তাঁদের ভিসা বাতিল হবে না; ৪. এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতো।
আরও পড়ুনজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে জেলায় জেলায় হচ্ছে স্বতন্ত্র পরীক্ষাকেন্দ্র২৪ এপ্রিল ২০২৫ট্রাম্প প্রশাসনের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চের পর থেকে ১৭৪ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়। এর ফলে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বৈধতা হারিয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত যদি বহাল থাকত, তাহলে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হতো।