শত বছরের পুরোনো গাণিতিক ধাঁধার সমাধান করলেন গণিতবিদেরা
Published: 6th, April 2025 GMT
গণিতের অনেক অমীমাংসিত ধাঁধা রয়েছে। এসব ধাঁধার গাণিতিক সমাধানের জন্য যুগের পর যুগ ধরে চেষ্টা করছেন বিভিন্ন দেশের গণিতবিদেরা। সম্প্রতি শত বছরের পুরোনো কাকেয়ার অনুমান বা কনজেকচার নামে পরিচিত এক গাণিতিক ধাঁধার সমাধান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতবিদ হং ওয়াং ও কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জোশুয়া জাহল।
১৯১৭ সালে গণিতবিদ সোইচি কাকেয়া প্রশ্ন করেন, একটি সমতলের ক্ষেত্রফল কত ছোট হলে তার মধ্যে একক দৈর্ঘ্যের একটি সুই ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরানো সম্ভব? কল্পনা করুন, একটি টেবিলের ওপর এক মিটার লম্বা একটি লাঠি আছে। আপনি লাঠির মাঝখানে ধরে সেটিকে ঘড়ির কাঁটার দিকে ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরাতে চান। তবে কাকেয়ার প্রশ্নটি ছিল সুই নিয়ে। কত ক্ষুদ্র জায়গার মধ্যে একটি সুই আপনি ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরাতে পারবেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে গণিতের দুনিয়ায় কাকেয়া সেটের ধারণা তৈরি হয়। এটিকে বেসিকোভিচ সেট বলা হয়।
আরও পড়ুনশত বছরের পুরোনো গাণিতিক সমস্যার সমাধান করলেন এক তরুণী২৫ মার্চ ২০২৫গণিতবিদ হং ওয়াং ও জোশুয়া জাহল ত্রিমাত্রিক সমাধান তৈরি করে দীর্ঘদিনের এই অমীমাংসিত গাণিতিক ধাঁধার সমাধান করেছেন। ত্রিমাত্রিক সমাধানটির বিষয়ে অপর গণিতবিদ ইয়াল লুবেটস্কি বলেন, এটিকে একুশ শতকের শীর্ষ গাণিতিক অর্জনের একটি বলা যায়।
আরও পড়ুন২০২৫ সালের জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন গণিতবিদেরা, কেন২৬ ডিসেম্বর ২০২৪১৯৭১ সালে গণিতবিদ রয় ডেভিস কাকেয়ার ধাঁধার দ্বিমাত্রিক সমাধান করেছিলেন। এর পর থেকে গণিতবিদেরা অসীম মাত্রায় সমস্যাটির সমাধান করতে চেষ্টা করতে থাকেন। এত দিন গণিতবিদদের ধারণা ছিল, ঘূর্ণমান কোনো সুইকে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫ কম স্থানিক মাত্রায় ঘোরানো সম্ভব। এবার সেই ধারণাকে পেছনে ফেলে গণিতবিদ হং ওয়াং ও জোশুয়া জাহল গাণিতিক ধাঁধাটির ত্রিমাত্রিক সমাধান করেছেন।
সূত্র: সায়েন্টিফিক আমেরিকান
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এবার গণমিছিল থেকে সরকারকে বার্তা কারিগরি শিক্ষার্থীদের
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এবার গণমিছিল থেকে ছয় দফা দাবি পূরণে সরকারকে বার্তা দিলেন কারিগরির শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর ১টায় রাজধানীর আইডিইবি ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে কাকরাই মোড় ও কাকরাইল মসজিদ মোড় ঘুরে আবার আইডিইবি ভবনে এসে শেষ হয় মিছিলটি।
ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে দাবি আদায়ে সক্রিয় রয়েছেন কারিগরির শিক্ষার্থীরা; প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা।
আরো পড়ুন:
ছাত্র আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামির জামিন, একদিন পর বিক্ষোভ
ছয় দফা দাবিতে রাজশাহী পলিটেকনিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সোমবার গণমিছিল শেষে আইডিইবির সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মো. মাশফিক ইসলাম বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, আন্দোলনের আট মাস পর কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এখনো আন্দোলনকে জীবিত রেখেছেন। তারই ফলাফল আজকের গণমিছিল ও বিক্ষোভ।
“যদি আবার আমাদের রাজপথে নামার সময় আসে, যদি আবার রাজপথ থেকে দাবি আদায় করে নিতে হয়, তাহলে দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রস্তুত।”
দাবি আদায়ে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে সবাইকে প্রস্তুত থাকার বার্তা দিয়ে মাশফিক ইসলাম বলেন, “ঢাকা থেকে আমরা সারা দেশের পলিটেকনিক ভাই-বোনদের জানিয়ে দিতে চাই, যদি গ্রেপ্তার হওয়ার প্রয়োজন হয়, রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়; তাহলে আমরা ঢাকা পলিটেকনিক প্রস্তুত।”
গণমিছিল শেষে আইডিইবির সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। ছবি: রাইজিংবিডি
মাশফিক ইসলাম বলেন, “যে ৬ দফা দাবির জন্য আমার ভাইয়েরা রক্ত দিয়েছে, সেই রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। দাবি আদায়ে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে।”
এর আগে সকাল থেকে আইডিইবি ভবনে সি.আর. সম্মেলন করেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
কারিগরি শিক্ষার্থীদের ছয় দাবি
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন ও মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত। নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) এর পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) থেকে পা করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও, যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ। এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে 'কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়' নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা/রায়হান/রাসেল