শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি
Published: 6th, April 2025 GMT
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনায় স্থানীয়রা এক ব্যক্তিকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে আটক করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গণপিটুনির শিকার ছবির শেখের (৪৫) বিরুদ্ধে এর আগেও ধর্ষণের অভিযোগ আছে। ধর্ষণ মামলায় তিনি দীর্ঘ দিন জেল খেটেছেন। ছবির মিরপুর উপজেলার নওপাড়া এলাকার খবির শেখের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে পাঁচ বছরের দুই শিশু বাড়ির পাশে নদীতে কচুরিপানা নিয়ে খেলছিল। এ সময় ছবির শেখ এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। বিষয়টি টের পেয়ে লোকজন ছবিরকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে খবর দেওয়া হলে পরে পুলিশ এসে ছবিরকে আটক করে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
মদ্যপ অবস্থায় থানায় ঢুকে গালিগালাজ, যুবদলের ২ নেতা গ্রেপ্তার
জলাশয় ইজারার বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে গণপিটুনির শিকার ওই ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক গণপ ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
চীন, ভিয়েতনাম, ভারতের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ২৭ জাতির জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মোট রপ্তানি আয়ের ৫০ শতাংশের বেশি আসে ইইউতে পণ্য রপ্তানি থেকে। চলতি পঞ্জিকা বছরের প্রথম দুই মাস অর্থাৎ জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির দিক থেকে প্রতিযোগী সব দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের পোশাক। এ সময় বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৭ শতাংশ। ভারতের ২৬, চীনের ২৫ ও ভিয়েতনামের ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
বাংলাদেশের স্বস্তিকর এ রপ্তানি প্রবাহ আগামীতে ধরে রাখা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বাণিজ্য বিশ্লেষক এবং রপ্তানিকারকদের অনেকে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি চীন-ভিয়েতামের পণ্য আমদানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন। এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দেশ দুটির পণ্য রপ্তানি কঠিন হয়ে পড়বে। বিশেষ করে চীনা পণ্য রপ্তানি বন্ধও হয়ে যেতে পারে। এতে বাধ্য হয়ে অন্য বাজারে একটা চাপ তৈরি করবে চীনা পণ্য।
গত ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশহ ৬৫ দেশের পণ্যে অতিরিক্ত বিভিন্ন হারে শুল্ক আরোপের নজিরবহীন ঘটনার পর বিভিন্ন আলোচনায় এ উদ্বেগের কথা বলে আসছেন অর্থনীতিবিদ, বাণিজ্য বিশ্লেষক ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তারা। নতুন ঘোষণা বহাল থাকলে বাংলাদেশের পণ্যে মোট শুল্কভার দাঁড়াবে ৫২ শতাংশ। ভিয়েতনামের পণ্যে ৬১ শতাংশ। চীনের পণ্যে শুল্ক হার হবে ১৪৫ শতাংশ। যদিও গত ৯ এপ্রিল থেকে ৯০ দিনের জন্য বাংলাদেশ, ভিয়েতনামসহ চীন বাদে অন্য সব দেশের পণ্যে বাড়তি শুল্ক স্থগিত রাখা হয়েছে।
ইইউতে রপ্তানিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয়
ইইউর বাজারে শীর্ষ ১০ রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। তালিকায় শীর্ষ স্থানে বরাবরের মতো চীন। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্যান্য বাজারের মতো ইইউর বাজারে রপ্তানিতে শীর্ষ পাঁচ দেশের তালিকায় নেই ভিয়েতনাম। দেশটির অবস্থান এখানে ষষ্ঠ। তুরস্ক সেখানে তৃতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ। চতুর্থ এবং পঞ্চম অবস্থানে যথাক্রমে ভারত ও কম্বোডিয়া। শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় পাকিস্তান সপ্তম, মরক্কো অষ্টম, শ্রীলঙ্কা নবম। আর দশম অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া।
ইইউর সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে চীনের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৫৫ কোটি ডলার। বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৩৬৯ কোটি ডলারের কিছু বেশি। তুরস্কের রপ্তানির পরিমাণ ১৬১ কোটি ডলার। ভারতের ৮৭ কোটি ডলারের কিছু কম। কম্বোডিয়ার ৭৮ কোটি ডলার এবং ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণ ৭৬ কোটি ডলার। ওই সময়ে মোট ১ হাজার ৬১০ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে ইইউ দেশগুলো।
তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সমকালকে বলেন, অনেকগুলো কারণে ইইউতে রপ্তানিতে এই ইতিবাচক প্রবণতা। ওই অঞ্চলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পর চাহিদা বেড়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানিতে মূল্য সংযোজিত পণ্যের পরিমাণও কিছুটা বেড়েছে। নিরাপত্তা উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশের প্রতি ব্র্যান্ড-ক্রেতাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। হাতে রপ্তানি আদেশের পরিমাণ বেশ ভালো।
হুমকি হয়েই থাকবে ভিয়েতনাম!
আগামী বছরের নভেম্বর মাসে এলডিসি থেকে চূড়ান্ত উত্তরণ হবে বাংলাদেশের। পরবর্তী তিন বছরও শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যাবে। এর পর আর এ সুবিধা থাকবে না। বাংলাদেশ যে ধরনের পণ্য রপ্তানি করে থাকে, সেগুলোর ওপর তখন গড়ে ৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে। অন্যদিকে প্রতিযোগী ভিয়েতনামের সঙ্গে ইইউর মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) পুরোপুরি কার্যকর হবে ২০২৭ সালে। অর্থাৎ ভিয়েতনামের সঙ্গে বাংলাদেশের আজকের অবস্থান পুরোপুরি বিপরীত হয়ে দাঁড়াবে। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) আশঙ্কা, ইইউ এবং অন্যান্য বাজার মিলে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ রপ্তানি আয় হারাবে বাংলাদেশ। ২০২০ সালে ইইউ-ভিয়েতনাম এফটিএ আংশিকভাবে কার্যকর হয়। এখন পর্যন্ত ভিয়েতনামের ৭১ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা ভোগ করছে। এ তালিকায় তৈরি পোশাক নেই। গড়ে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ শুল্কারোপ রয়েছে পোশাক পণ্যে।