সিনেমা হলে ঈদের সিনেমা চলছে রমরমিয়ে। দর্শক পছন্দের সিনেমা দেখতে এসে টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন কিংবা অন্যটি দেখে বাড়ি ফিরছেন। এ কারণে মন খারাপ হচ্ছে অনেকের। 

তবে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জংলি’ সিনেমাটি দর্শকদের মাঝে গল্প নিয়ে বেশ প্রশংসিত হচ্ছে। সিনেমাটি দেখে অনেকেই আবেগ ধরে রাখতে পাচ্ছেন না সে কথা বলছেন প্রকাশ্যেই। 

এবার সিনেমাটির পরিচালক এম রাহিম জানালেন সিনেমাটি নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে পরিচালক লিখেছেন,শুটিংয়ের সময় কাউকে বুঝতে দেইনি যে আমি বুকের ভেতর কী নিয়ে শ্যুট করেছি। একটা সময় আর নিজেকে ধরে রাখতে পারতাম না, কখনো কখনো আড়ালে গিয়ে একা কান্না করতাম। এডিটের সময় কান্না করেছি, ডাবিংয়ের সময় করেছি, বিজিএম যখন করেছি, তখন করেছি। ফাইনাল সাউন্ড মিক্সের সময় যখন আউটপুট নিবো; তখন এডিটর, মিউজিক ডিরেক্টর, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারসহ ওখানে উপস্থিত এমন কেউ নেই যে কান্না করেনি।  

পরিচালক আরও যুক্ত করেছেন, আর এখন দর্শকের রিঅ্যাকশন দেখে চোখ দিয়ে কখন পানি পড়ছে- বুঝতেই পারিনা। তবে এই কান্না হচ্ছে আত্মতৃপ্তির কান্না। এই কান্না হচ্ছে মায়ার কান্না, প্রাপ্তির কান্না, দর্শকদের ভালোবাসার কান্না। 

পরিচালকের স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে যোগাযোগ করা হয় তার সঙ্গে। প্রশ্ন রাখা হয় জংলি সিনেমায় কি শুধুই কান্নার? উত্তরে  এম রাহিম বলেন, একেবারেই না। আগেও বলেছি এই গল্পে ভায়োলেন্স, অ্যাকশন ও রোমান্স সব আছে। সঙ্গে আছেন সুন্দর একটি গল্প। যে গল্পটি মানুষদের ভালো লাগছে। তারা রিলেট করতে পারছে। গল্পটি তাদের আবেগে নক করতে পারছে। দর্শক রিঅ্যাকশন দিচ্ছে তারা দেশ ৩০ মিনিট কান্না করছেন।  এটা কিন্তু গল্পের ভেতরে প্রবেশর কারণে ঘটছে। শুটিংয়ের সময় আমরাও ওই দৃশ্যগুলো নেওয়র সময় কেঁদেছি। এখন হলে দর্শকরা কাঁদছে। এটিই জংলির সাফল্য। 

এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’ সিনেমায় সিয়াম আহমেদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন শবনম বুবলী, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, দিলারা জামান, শহীদুজ্জামান সেলিম এবং রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ র স ন ম এম র হ ম র সময় ক পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শিকলবন্দি বাবুল বৈষ্ণব

প্রায় পরিত্যক্ত ভাঙা একটি ঘর। ওই ঘরে পায়ে শিকল পরা অবস্থায় মাটিতে বসে দিন কাটে বাবুল বৈষ্ণবের। পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ওষুধের পাতা।  

ঘটনাস্থল হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ঝিলুয়া গ্রাম।

স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, ৩ সপ্তাহ ধরে তাকে স্বজনরা শিকলবন্দি করে রেখেছেন। 

ঠিকমতো খাবারও জোটে না। চরম এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে । পারিবারিক কলহের জেরে পাগলের তকমা দিয়ে তবে স্থানীয়দের ভাষ্য- বাবুল মোটেও মানসিক ভারসাম্যহীন নন।

কথা হয় ৫০ বছর বয়সী বাবুল বৈষ্ণবের সাথে। তিনি জানান, ছোট একটি ঘটনা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। ওই সময় তিনি স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন। এ ঘটনার পর তার স্ত্রী, ছেলে ও কাকা মিলে তাকে মারপিট করে পাগলের তকমা দিয়ে শিকলে বেঁধে রেখেছে।

তিনি বলেন, “কোনো মানসিক সমস্যা নেই আমার। শুধু পারিবারিক ঝগড়ার কারণে ছেলে, স্ত্রী আর কাকা মিলে আমাকে বেঁধে রেখেছে। ঠিকমতো খাবার দেয় না। আমার বৃদ্ধা মা মাঝে মধ্যে কিছু খাবার দিলে তাকেও গালাগাল করা হয়। মাঝেমধ্যে খাবারের থালা মায়ের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ফেলে দেয়। আধা বালতি পানি দিয়ে গত ২০ দিনে মা আমাকে ৩-৪ দিন গোসল করিয়েছে। অথচ কোনো দিন কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি।”

বাবুল জানান, তিনি অনেক কষ্ট করে সংসার চালিয়েছেন। ছেলেমেয়েকে বড় করেছেন। আটকে রাখার আগেও তিনি কৃষি কাজের বাইরে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে সবজি, বীজ বিক্রি করেছেন।

বাবুলের কাকা রথিন্দ্র চৌধুরী বলেন, “বাবুল প্রায়ই পরিবারের লোকজনকে মারপিট করে। দা নিয়ে হামলা করতে আসে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে।”

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বদলপুরের ইউপি সদস্য দিলীপ কুমার চৌধুরী বলেন, “আমি বিষয়টি জানি না। তবে এখন যেহেতু আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমি খোঁজ নেব। তবে আমার জানা মতে, তার আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক হলেও পাগল বলা যাবে না। এমনকি তিনি কখনো কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন বলেও আমার জানা নেই।” 

ঢাকা/মামুন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ