বাউফলে ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১
Published: 6th, April 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফলে ৯ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সালাম খন্দকার (৫৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বাকলা তাতেরকাঠী গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে এইদিন সন্ধ্যায় ওই শিশুর বাবা বাউফল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা থেকে জানা যায়, শনিবার দুপুরে বাকলা তাতেরকাঠী গ্রামের ওই শিশুটিকে তার দাদা দাদির কাছে রেখে পরিবারের লোকজন অন্যত্র বেড়াতে যায়। বিকালে শিশুটি বাড়ির সামনে খেলাধুলা করছিল। প্রতিবেশি সালাম খন্দকার শিশুটিকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির পাশের নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এসময় শিশুটির ডাকচিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সালাম নগ্ন অবস্থায় দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে শিশুটি বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের কাছে সব খুলে বলে।
ওই শিশুর বাবা বলেন, “আমার মেয়ের সঙ্গে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা সালাম খন্দকার ঘটিয়েছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।”
বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, “শিশুটিকে মেডিকেল রিপোর্টের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত সালাম খন্দকারকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।”
ঢাকা/ইমরান/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাবির ভর্তি পরীক্ষা: একটি ইউনিটেই ৭৫০ ওএমআর বাতিল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় বৃত্ত ভরাটজনিত সমস্যার কারণে অন্তত ৭৫০টি ওএমআর বাতিল হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ওএমআর সংশোধনের মাধ্যমে পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন।
গত ১৯ এপ্রিল ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফল প্রকাশিত হলেও রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিষয়টি জানাজানি হয়।
জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৭ এপ্রিল ফল প্রকাশিত হয়। এই ইউনিটে মাত্র নয়টি ওএমআর বাতিল হলেও ‘এ’ ইউনিটে তা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৭৫০টিতে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, ‘বি’ ইউনিটে বৃত্ত ভরাটে ত্রুটির কারণে যেসব ওএমআর বাতিল হয়েছিল, সেগুলো ম্যানুয়ালি চেক করে সংশোধন করেছিল সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কর্তৃপক্ষ।
আরো পড়ুন:
৫ বিভাগীয় কেন্দ্রে রাবির সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
শিবিরনেতা নোমানী হত্যা মামলার আসামিকে গুলি করে ও কুপিয়ে জখম
কিন্তু ‘এ’ ইউনিটে বৃত্ত ভরাটে ত্রুটি হলেই তা পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। ম্যানুয়ালি চেক করে সংশোধন করা হয়নি। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন দুই নিয়ম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাজিদুল ইসলাম বলেন, “একজন শিক্ষার্থী যদি ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাটে ভুল করে থাকেন, তাহলে পরীক্ষার হলের কর্তব্যরত শিক্ষকের দায়িত্ব ছিল সেটা ঠিক করে দেওয়া। কিন্তু ঠিক না করেই তিনি সিগনেচার করেন কেমনে? এখানে শিক্ষকেরও গাফিলতি স্পষ্ট।”
বৃত্ত ভরাটে ত্রুটির কারণে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মো. আরমান আলিফের ওএমআর বাতিল হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি একজন সেকেন্ড টাইমার ছিলাম। মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আমার কোথাও চান্স হয়নি। ১ বছর অফ করে সেকেন্ড টাইম প্রস্তুতি নিয়েছি। আমার স্বপ্ন ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যালয় পড়া। পরীক্ষাও আলহামদুলিল্লাহ ভালো হয়েছে। কিন্ত আমি গতকাল চেক করে দেখি আমার রেজাল্ট আসছে না।”
তিনি আরো বলেন, “আমার রোল ভুলের কারণে ওএমআর বাতিল হয়েছে। আমি কয়েকবার চেক দিয়েছিলাম, হলের ম্যাম চেক দিয়েছিল। এমন হওয়ার কথা না, অন্য কোথাও সমস্যা হবে হয়তো। আমি রাবি নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করছিলাম। কিন্তু আমার সব শেষ হয়ে গেছে। শুধু বৃত্ত ভরাটের ত্রুটি কারণে আমার জীবনটা এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে?”
ভুক্তভোগী অনুনয় করে বলেন, “আমার শিক্ষা জীবনটা আপনারা বাঁচান। এ হতাশা নিয়ে আমি পাগল হয়ে যাব। ইউনিভার্সিটি কপি ও সিগনেচারের খাতায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রোল আছে। ওখান থেকে রোল নিয়ে ম্যানুয়ালি চেক করে ভুল সংশোধন করার আকুতি জানাচ্ছি। আমাদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ দাবি জানাচ্ছি।”
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী মাঈসা মাহাজাবিন বলেন, “গত একটা বছর পাগলের মতো পড়াশুনা করেছি। যদি চান্স না হত, তাহলে মনকে বুঝ দিতে পারতাম। কিন্ত ওএমআরের ত্রুটির কারণে ফল বাতিল হওয়াটা আমি মেনে নিতে পারছি না। আমাকে বাঁচার সুযোগ দিন। আমি সারাদিন কান্না করছি। রাতেও ঘুম আসে না। আমার জীবনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “গতকাল বিকালে বিষয়টা আমি জেনেছি। এটা শিক্ষার্থীরাই ভুল করেছে। যেহেতু ওএমআর শিটের উপরে রোল নাম্বার লেখা থাকে, ওটা দেখে আমরা ঠিক করে নেওয়ার চেষ্টা করি। ‘বি’ ইউনিটে সেটা করাও হয়েছে। ‘এ’ ইউনিটের সংখ্যাটা একটু বেশি। আমরা কাল (মঙ্গলবার) এটা নিয়ে একটা জরুরি মিটিং আহ্বান করেছি। সেই মিটিংয়ে এদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী