মানবপাচার রোধে কাজ করছে সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 6th, April 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মানবপাচার রোধে বাংলাদেশ তার প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে এবং এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, “মানবপাচার সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহি করার জন্য শক্তিশালী আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সজাগ ও সক্রিয় রয়েছে। সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং পাচারের বিপদ সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের সচেতন করার জন্য বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক প্রচারণা জোরদার করা হয়েছে।“
রবিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকার একটি হোটেলে মানবপাচার সংক্রান্ত বিমসটেক সাব-গ্রুপের তৃতীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং মানবপাচার সংক্রান্ত বিমসটেক সাব-গ্রুপের তৃতীয় সভার চেয়ারম্যান খন্দকার মো.
উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ মানবপাচার মোকাবিলায় জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, মানবপাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের দক্ষতার সঙ্গে শনাক্তকরণ, তাদের চাহিদা মূল্যায়ন এবং উপযুক্ত পরিষেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য একটি জাতীয় রেফারেল ব্যবস্থা (ওয়েব প্ল্যাটফর্মে হোস্ট করা)-সহ সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।”
তিনি বলেন, “মানবপাচারকারীদের বিচার দ্রুত করার জন্য নিবেদিত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং আমাদের জাতীয় কৌশলে সচেতনতামূলক প্রচারণাগুলোকে পদ্ধতিগতভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উপরন্তু, আমরা বিমসটেক এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য আমাদের পারস্পরিক আইনি সহায়তা ব্যবস্থাকে প্রসারিত করেছি।”
তিনি বলেন, “মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্যান্য বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ বৈঠকে সেই পদক্ষেপ এবং অভিজ্ঞতাসমূহ বিনিময় করা হবে মর্মে আমি আশা করি।”
তিনি আরো বলেন, “পাচারকারীরা সরকারী উদ্যোগগুলোকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত নিত্য নতুন কৌশল গ্রহণ করে। তারা সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সংকট ও দারিদ্র্যকে কাজে লাগিয়ে ও প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে তাদের গোপন কার্যকলাপ এগিয়ে নেওয়ার জন্য অভিবাসন রুটগুলোকে কাজে লাগাতে থাকে। এই অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি সম্মিলিত এবং কৌশলগত কর্মপদ্ধতি প্রয়োজন এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য ও সেরা অনুশীলন বিনিময়ের মাধ্যমে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদানে বিমসটেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সম্মিলিত প্রয়াস আমাদের পাচারবিরোধী কৌশলকে আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম করবে।”
উপদেষ্টা আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেক এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব বাংলাদেশকে অর্পণ করার জন্য এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্ভুক্তিমূলক, কর্মমুখী এবং দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিমসটেককে পরিচালনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁর সক্ষম এবং অনুপ্রেরণামূলক নেতৃত্বে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে বিমসটেক আমাদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং সম্পর্ক গভীরতর করার মাধ্যমে নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছাবে।”
তিনি বলেন, “এ বৈঠক মানবপাচার কৌশল নিয়ে আলোচনা, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং বিমসটেক অঞ্চল জুড়ে মানবপাচার রোধে আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ প্রদান করেছে।”
তিনি বলেন, “এ বৈঠকের ফলাফল শক্তিশালী নীতি তৈরি, এর কার্যকর প্রয়োগ এবং গভীর আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।”
সভায় বিমসটেকভুক্ত সাত সদস্য দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটান) মানবপাচার সংক্রান্ত সাব-গ্রপের সংশ্লিষ্ট সদস্যরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম নবপ চ র স ক র ন ত ম নবপ চ র র ব মসট ক স উপদ ষ ট আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জামায়াতের আমিরের
জাতীয় স্বার্থে দল–মতনির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানান জামায়াতের আমির। বইয়ের শিরোনাম ‘মাওলানা আব্দুস সুবহান রহ.: তৃণমূল থেকে শীর্ষে’।
অনুষ্ঠানে শফিকুর রহমান বলেন, একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে জাতির স্বার্থে জাতীয় ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হলে এ জাতি বিজয়ী হবে।
মাওলানা আব্দুস সুবহানের ব্যক্তিত্ব দল–মতনির্বিশেষে সবাইকে মুগ্ধ করত বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে কনডেমড সেলে মৃত্যু অপেক্ষায় থেকেও মাওলানা আব্দুস সুবহান কখনো ভয় পাননি। জেলে থাকা অবস্থায়ও তিনি কারাগারে থাকা সবার খোঁজ খবর রাখতেন। নেতৃত্ব দিতে হলে মানুষকে বুঝতে হয়, এটার আজ বড় অভাব। মাওলানা আব্দুস সুবহান জেলে গিয়েও মানুষের সমস্যা সমাধান করতেন। তিনি ফাঁসির রায় শুনেও প্রশান্ত ছিলেন। দেশকে, মানুষকে ভালোবাসলে কেউ পালিয়ে যায় না। জামায়াত নেতারা তা প্রমাণ করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, জুলাই বিপ্লবের বিতাড়িত সরকার আব্দুস সুবহানকে অপমানিত করতেই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামি করেছিল। তবে আজ সেই আওয়ামী লীগই অপমানিত হয়ে দেশ থেকে পালিয়েছে।
বইটির লেখক আলী আহমাদ মাবরুর। তিনিসহ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শামীম সাঈদী, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন প্রমুখ।