স্পেন ছেড়েছেন প্রায় সাত বছর হতে চলল। সৌদি আরবে এসেছেন তাও তিন বছর হয়ে গেছে। আল নাসরেতে থেকেও অবসর নিতে চান। কিন্তু তারপর? স্প্যানিশ আউটলেট মুন্ডো দেপর্তিভোর খবর অবসরের পর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো স্পেনেই ফিরবেন। তবে দলের কোচ হয়ে নয়, বরং ক্লাবের মালিক হয়ে। লা লিগার ক্লাব ভ্যালেন্সিয়া কিনে নিতে পারেন তিনি এবং সেটা আগামী মৌসুমেই। 

তবে রোনালদো নাকি একটি শর্ত দিয়েছেন ভ্যালেন্সিয়া কর্তৃপক্ষকে। তা হলো এবার রেলিগেশনের শঙ্কা কাটাতে তাদের আগামী মৌসুমেও লা লিগা খেলতে হবে। ক্লাবটির মালিক সিঙ্গাপুরভিত্তিক ধনকুবের পিটার লিম। কিন্তু তাঁর নাকি ক্লাবটির প্রতি কোনো মনোযোগ নেই। সম্প্রতি মালিকানা বদলের জন্য ভ্যালেন্সিয়ার সমর্থকরা বিক্ষোভ করেছেন। এই পিটার লিমের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রোনালদোর। তাই পিটারই নাকি ভ্যালেন্সিয়াকে রোনালদোর কাছে বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছেন। মিররের খবর স্প্যানিশ ক্লাবটি কিনতে ১৬৯ মিলিয়ন পাউন্ড দরকার, যা রোনালদোর এক বছরের আয়ের থেকেও কম। সৌদি ক্লাবে বছরে ২০২ মিলিয়ন পাউন্ড আয় করে থাকেন রোনালদো। তা ছাড়া সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে রোনালদোর যে ঘনিষ্ঠতা, তাতে ক্লাব কিনতে তাঁর কোনো সমস্যা হবে না।

এমনিতে ফুটবলের এই তারকার ব্যবসায় বিনিয়োগ কম না। হোটেল চেইন, ক্লথিং ফ্র্যাঞ্চাইজি, লাইফ স্টাইল ব্র্যান্ড, ফিটনেস সেন্টার, রিয়াল এস্টেট থেকে শুরু করে মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি– রোনালদোর লগ্নি আছে এসবে। তার সঙ্গে যদি স্প্যানিশ ক্লাবটি যুক্ত হয়, তাহলে মন্দ হবে না। যদিও এই ব্যাপারে রোনালদোর প্রতিক্রিয়া মেলেনি মিডিয়ায়। তবে দেপর্তিভোর রিপোর্টার জুলিয়ান রেদোনদো জানিয়েছেন ক্লাবটি কেনার ব্যাপারে রোনালদো নাকি বেশ আগ্রহী। কারণ সৌদি আরবে আরও কয়েক বছর কাটিয়ে তিনি স্পেনে ফিরতে চান। 

সৌদিতে রোনালদো কত বছর থাকবেন, তার একটা ইঙ্গিত রয়েছে। ক্যারিয়ারে ১ হাজার গোল করার লক্ষ্য নিয়েছেন রোনালদো। শুক্রবার রাতে রিয়াদ ডার্বিতে আল হিলালের বিপক্ষে জোড়া গোল পেয়েছেন। ২-১ গোলে তাঁর দল জিতেছে ম্যাচটি। এ নিয়ে তাঁর মোট গোলসংখ্যা এখন ৯৩১ (১ হাজার ২৭২ ম্যাচে)। চার অঙ্কে পৌঁছতে যতদিন লাগে, ততদিন তিনি আল নাসরেতেই থাকবেন। তা ছাড়া ২০৩৪ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে সৌদি আরবে। সেই ইভেন্টেও সৌদি আরবের হয়ে প্রচারণায় থাকবেন। তাই ফুটবলের সঙ্গে থাকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাতেই ভ্যালেন্সিয়া কিনতে পারেন। 

এই মুহূর্তে লা লিগার পয়েন্ট তালিকায় দলটির অবস্থান ১৬। এই অবস্থান ধরে রাখতে পারলেই লা লিগায় পরের মৌসুমে থাকবে তারা। ফিফা আর উয়েফার নিয়মে রয়েছে খেলোয়াড় হিসেবে কেউ ক্লাবের মালিক হতে পারবেন, যদি কিনা তা স্বার্থবিরোধী হয়। অর্থাৎ একই লিগে কোনো খেলোয়াড় সেই লিগের ক্লাব কিনতে পারবেন না। রোনালদো যেহেতু সৌদি প্রো লিগ খেলছেন, সেখানে লা লিগার ক্লাব কিনতে তাঁর সমস্যা নেই। কেননা একমাত্র প্রীতি ম্যাচ ছাড়া আল নাসরে আর ভ্যালেন্সিয়ার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়ার্কচার্জের ২৪ কর্মীর চাকরি স্থায়ী হয়নি ২৭ বছরেও

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সালের বিভিন্ন সময়ে ওয়ার্কচার্জ কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে ৩৯৬ জনকে নিয়োগ দিয়েছিল। তাদের নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছিল ১০ বছর চাকরি করার পর পর্যায়ক্রমে তাদের স্থায়ী করা হবে। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ জনবল স্থায়ী হবে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে আর ওয়ার্কচার্জ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্য থেকে স্থায়ী হবেন ২৫ শতাংশ। এরপর নানা সময় ওয়ার্কচার্জ কর্মীদের মধ্যে ৩৭২ জনের চাকরি স্থায়ী হলেও বঞ্চিত রয়ে গেছেন ২৪ জন। তাদের মধ্যে তিনজন করোনা মহামারি সময়ে মারা গেছেন। বাকি ২১ জনের হয়েছে অবসরে যাওয়ার সময়।

ওয়ার্কচার্জ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মূলত তাদের কাজ অনুযায়ী নির্দিষ্ট হারে বেতন-ভাতা পান। সরকারি চাকরিজীবীদের মতো অন্যান্য সুবিধা পান না। জানা গেছে, ইতোমধ্যে ওয়ার্কচার্জের ২১ কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজউক চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠানের বোর্ড সদস্যের (প্রশাসন) সঙ্গে দেখা করে চাকরি স্থায়ীকরণের আবেদন জানিয়েছেন। তবু তাদের স্থায়ী করার উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। অথচ তাদের স্থায়ী করার জন্য বিপরীতে প্রায় অর্ধশত পদ শূন্য রয়েছে। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী না করে বরং বিভিন্ন প্রকল্প থেকে কর্মীদের চাকরি স্থায়ী করার অভিযোগ উঠেছে।

রাজউক সূত্র জানায়, নিয়োগ পাওয়া ৩৯৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জাতীয় বেতন স্কেল-১৯৯৬ অনুসারে ২০০১ সালে রাজস্ব খাতভুক্ত ওয়ার্কচার্জ করা হয়। তাদের মধ্যে আব্দুল লতিফ হেলালী রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী হয়ে অবসরে গেছেন। উজ্জ্বল মল্লিকও প্রধান প্রকৌশলীর পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর সম্প্রতি তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আবু হাসান মোর্তজা ও মো. হাফিজ নগর পরিকল্পনাবিদ হয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অবসরে গেছেন। ওই সময়ে নিয়োগ পাওয়া মোজাফ্ফর উদ্দিন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে বর্তমানে কর্মরত। আরও কয়েকজন আছেন নির্বাহী প্রকৌশলী পদে। এ ছাড়া আরও অনেকে নিয়মিত হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। অনেকে কর্মকর্তা হয়ে অবসরে গেছেন। তিনজন নিম্নমান সহকারীর চাকরি স্থায়ী হওয়ার আগেই মৃত্যু হয়েছে। বাকি যারা পড়ে আছেন, তারা ছোট পদে কর্মরত। এ জন্যই তাদের দিকে রাজউকের নজর কম বলে অভিযোগ।

ভুক্তভোগীরা জানান, নিয়োগ ও পদোন্নতি কোটার ৪৫টি পদ এখনও শূন্য। কিন্তু রাজউক পরিচালনা পর্ষদ কোনো নিয়ম অনুসরণ না করে একেক সময় একেকজনের চাকরি নিয়মিত করেছে। সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কাজী অমিত ও নুরুল আলমকে নিয়মিত করা হয়েছে। এ দু’জনই ছিলেন প্রকল্পের কর্মচারী। ওয়ার্কচার্জভুক্ত যে ২১ জনের চাকরি নিয়মিত হয়নি, তাদের প্রত্যেকের চেয়ে এ দু’জন অনেক কনিষ্ঠ।

ভুক্তভোগী এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁর দেড় বছর চাকরি আছে। এখনও বলতে পারেন না চাকরিটি স্থায়ী হয়েছে। এ জন্য পরিবারের কাছেও লজ্জা পেতে হয়। আরেকজন বলেন, চাকরি নিয়মিত হলে অবসরে গেলে কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু এ অবস্থায় অবসরে গেলে একদম নিঃস্ব হাতে বিদায় নিতে হবে।

আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, গত বছর তাদের চাকরি স্থায়ী করার উদ্যোগ নিয়েছিল রাজউক বোর্ড। তখন তথাকথিত রাজউক শ্রমিক লীগের কয়েকজন নেতা এতে বাধা দেন। ওই নেতারা আমাদের কাছে কিছু আর্থিক সুবিধা দাবি করেছিলেন। কিন্তু আমরা তাতে রাজি হইনি। তখন শ্রমিক লীগের নেতারা আমাদের ২১ জনকে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করে বোর্ডকে প্রভাবিত করেন। ফলে আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণের উদ্যোগ থমকে যায়।

এসব প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ২১ ওয়ার্কচার্জ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়টি মানবিকভাবে আমরা দেখার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে বোর্ডে দু-তিনবার তুলেছি। কিন্তু বিভিন্ন সময় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এমন কিছু নিয়ম করেছে যে, তাদের নতুন করে সব সনদ জমা দিতে হবে। তারা সেটা পারে না। এ কারণে রাজউকেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। তবে এটা বুঝতে পারছি মানবিক কারণে হলেও তাদের চাকরিটা স্থায়ী করা দরকার।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অবসর নিয়ে গুঞ্জনে যা বললেন ধোনি
  • আইএমইডিতে নতুন সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে জনপ্রশাসনে সংযুক্ত
  • খেলার দুনিয়ায় যত বিলিয়নিয়ার
  • ওয়ার্কচার্জের ২৪ কর্মীর চাকরি স্থায়ী হয়নি ২৭ বছরেও