খাগড়াছড়িতে যুবককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ
Published: 6th, April 2025 GMT
খাগড়াছড়ির পানছড়িতে অমর জীবন চাকমা (৩০) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৮দিকে উপজেলার শ্রীকুন্তি মা ছড়া এলাকার রত্নসেন পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত অমর জীবন চাকমা ওই পাড়ার সত্যপ্রিয় চাকমার ছেলে। তবে, কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
ছোট ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে মেজ ভাই নিহত
স্বামীকে পরকীয়া থেকে ফেরাতে না পেরে হত্যা, স্ত্রী আটক
পানছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ‘‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। খোঁজ খবর নিয়ে লাশ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’’
ঢাকা/রুপায়ন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে টিকাদানে বড় অগ্রগতি, তবে প্রায় ৫ লাখ শিশু টিকার সব ডোজ পায় না
শিশুদের টিকা দেওয়ার হার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বড় অগ্রগতি অর্জন করলেও এখনো উল্লেখযোগ্য ঘাটতি রয়ে গেছে, প্রায় পাঁচ লাখ শিশুর অবস্থা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে সোমবার এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স–গ্যাভি এ বিষয়ে সতর্ক করেছে।
শিশুদের টিকাদানে ঘাটতি পূরণে অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এই তিন সংস্থা। একই সঙ্গে টিকা দিয়ে প্রতিরোধযোগ্য রোগগুলো থেকে প্রতিটি শিশুকে সুরক্ষা প্রদানের মাধ্যমে একটি স্বাস্থ্যকর ও আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তার জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও ৪ লাখের মতো শিশু ঠিকমতো সব টিকা পায়নি এবং ৭০ হাজার (১ দশমিক ৫ শতাংশ) শিশু একেবারেই টিকা পায়নি। শহরাঞ্চলগুলোতে টিকা না পাওয়ার হার বেশি—মাত্র ৭৯ শতাংশ পুরোপুরি টিকা পেয়েছে, ২ দশমিক ৪ শতাংশ এক ডোজ টিকাও পায়নি এবং ৯ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু টিকার সব ডোজ ঠিকমতো পায়নি; সেই তুলনায় গ্রামাঞ্চলগুলোতে ৮৫ শতাংশ শিশু টিকার সব ডোজ পেয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি (ওআইসি) স্ট্যানলি গোয়াভুয়া বলেছেন, ‘১৯৭৯ সালে ইপিআই চালু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে—সব ডোজ টিকা গ্রহণের হার মাত্র ২ শতাংশ থেকে ৮১ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এই সফলতা সরকারের জোরালো প্রতিশ্রুতি এবং অংশীজন, এনজিও ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত স্বাস্থ্যকর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে। কিন্তু চূড়ান্ত সফলতার জন্য শেষের পথটুকু পাড়ি দেওয়া সবচেয়ে কঠিন। প্রতিটি শিশু ও নারীর কাছে পৌঁছানোর জন্য, বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকা ও শহরের দরিদ্র এলাকাগুলোতে, দরকার আবারও জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ, জোরালো প্রচেষ্টা এবং বাড়তি বিনিয়োগ।’
বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচিকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে ইউনিসেফ সহায়তা অব্যাহত রাখবে উল্লেখ করে স্ট্যানলি গোয়াভুয়া বলেন, এই সহায়তা দেওয়া হবে পরিকল্পনা প্রণয়নে কারিগরি সহায়তা প্রদান, সরবরাহ ব্যবস্থা, সংরক্ষণ ব্যবস্থা (কোল্ড চেইন), ডিজিটাল উদ্ভাবন ও চাহিদা পূরণের মাধ্যমে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ইপিআইয়ের কারণে বর্তমানে প্রতিবছর আনুমানিক ৯৪ হাজার মানুষের জীবন রক্ষা পাচ্ছে এবং ৫০ লাখ শিশুর অসুস্থতা প্রতিরোধ করা যাচ্ছে। এতে বলা হয়েছে, এখানে প্রতি ১ মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ফলে ২৫ ডলার ফেরত আসছে, যা সত্যিই সন্তোষজনক।
অবশ্য প্রতিটি শিশুকে টিকা প্রদান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, একেবারেই টিকা না পাওয়া ৭০ হাজার এবং টিকার সব ডোজ ঠিকমতো না পাওয়া ৪ লাখ শিশুর কাছে পৌঁছানো জরুরি, যেহেতু তারা স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে প্রতিরোধযোগ্য শিশুমৃত্যুর ক্ষেত্রে একটি বড় কারণ হয়ে থাকে। এসব শিশু প্রায়ই দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব এবং স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ সীমিত থাকার মতো নানাবিধ জটিলতার মুখোমুখি হয়ে থাকে।
এ ছাড়া সবাইকে টিকার সব ডোজ সময়মতো দেওয়ার লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেমন জনবলের ঘাটতি, শহরের বস্তিগুলোতে বড় সংখ্যায় টিকা না পাওয়া, প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছাতে নানা বাধা এবং গ্যাভির সহায়তার ক্ষেত্রে আসন্ন পরিবর্তন; যার অর্থ সরকারকে তার জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির জন্য নিজস্ব সম্পদ দিয়ে সবকিছু পরিচালনা করতে হবে। এর মধ্যে অর্থায়ন, টিকা কেনা, নীতি সহায়তা, সংরক্ষণের সরঞ্জাম (কোল্ড চেইন ইকুইপমেন্ট), টিকা প্রদানের মতো কার্যক্রম রয়েছে। আর এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে তিন সংস্থার যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
সহায়তা অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. আহমেদ জামশেদ মোহাম্মদ বলেছেন, প্রতিটি শিশুর জন্য টিকা পাওয়ার সমান সুযোগ নিশ্চিত, একটি স্বাস্থ্যকর জীবন এবং আরও অভিঘাতসহিষ্ণু ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ডব্লিউএইচও গর্বের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও অংশীদারদের পাশে রয়েছে।
টিকা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যে বাস্তব প্রভাব দেখা গেছে ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, সেটা ধরে রাখতে চাইলে টিকাদানে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বলে উল্লেখ করেছেন গ্যাভির আঞ্চলিক প্রধান স্যাম মুলের।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্যাভি বাংলাদেশে ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে পোলিও, হাম, রুবেলা ও রোটাভাইরাসের মতো রোগগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রুটিন টিকাদান কর্মসূচিতে সহায়তা করে চলেছে। বাংলাদেশ গ্যাভির সহায়তায় ২০২৩ সালে জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৭০ লাখের বেশি মেয়েশিশুকে লক্ষ্য করে এক ডোজ হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) ভ্যাকসিন চালু করেছে।
ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও ও গ্যাভি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোরদার ও টেকসই জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে জনবল ও পর্যাপ্ত বরাদ্দ, শহরে টিকা প্রদানের ঘাটতি পূরণে অগ্রাধিকার প্রদান, টিকা সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, এইচপিভি টিকাদান আরও জোরালো করা এবং আরও ভালো মনিটরিং ও সবার কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে ডিজিটাল উদ্ভাবন সম্প্রসারণের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। এসব পদক্ষেপ নিলে সারা দেশে কোনো শিশুকে টিকা প্রদান থেকে বাদ না রেখে ৯৫ শতাংশের বেশি টিকাদানের লক্ষ্য অর্জনের পরিবেশ তৈরি হবে বলে যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।