ফ্ল্যাট ইস্যুতে যুক্তরাজ্যে ‘মিথ্যাচার’ করার অভিযোগ টিউলিপের বিরুদ্ধে
Published: 6th, April 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের সাবেক নগরমন্ত্রী ও শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একটি ফ্ল্যাটের মালিকানার বিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কাছে ‘মিথ্যচার’ করার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় টিউলিপ সিদ্দিকের নিজ নামে থাকা ৬ লাখ পাউন্ড সমমূল্যের ফ্ল্যাটটি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে বাংলাদেশ সরকার জব্দ করেছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে তদন্তও চলছে।
আরো পড়ুন:
হিথ্রো বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু
পাল্টা জবাবে রাশিয়ার এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করল যুক্তরাজ্যে
৪২ বছর বয়সী টিউলিপ দাবি করেছেন তিনি কোনো অন্যায় করেননি। ডেইলি মেইলকে তিনি বলেছেন, ২০০২ সালে বাবা-মায়ের কাছ থেকে উপহার হিসেবে ফ্ল্যাটটি পেয়েছিলেন এবং আইনগত ও বৈধভাবে বোন আজমিনার কাছে ২০১৫ সালে এটি হস্তান্তর করেন। ওই বছর ব্রিটিশ এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরই ফ্ল্যাটটি বোনকে দিয়ে দেওয়ার দাবি করেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিনিস্টার রেজিস্টারে এমপিদের সম্পর্কে যে তথ্য আছে সে অনুযায়ী, ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত এই সম্পদটি পরিবারের সদস্যের সঙ্গে টিউলিপের যৌথ মালিকানাধীন ছিল। পরের মাসে তিনি এটি হস্তান্তর করে দেন।
তবে ডেইলি মেইল গত সপ্তাহে ঢাকা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছ, টিউলিপ সিদ্দিক এখনো ফ্ল্যাটটির মালিক। যেমনটা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দাবি করছে। এখন বাংলাদেশের আদালত সিদ্ধান্ত নেবে ফ্ল্যাটটি কার মালিকানাধীন।
গত মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানায়, হেবার মাধ্যমে ২০১৫ সালে টিউলিপ ফ্ল্যাটটি আজমিনার কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা করেন। হেবা হলো একটি ইসলামিক নথি। যেটির মাধ্যমে পরিবারের এক সদস্য অন্য সদস্যের কাছে ‘ভালোবাসার’ খাতিরে কোনো কিছু দান করতে পারেন।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বাংলাদেশি আইন অনুসারে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে সম্পত্তির মালিকানা পরিবর্তন না করা পর্যন্ত সম্পত্তি হস্তান্তর বৈধ বলে বিবেচিত হয় না।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দাবি করেছে, টিউলিপের হেবা করার বিষয়টিও ‘ভুয়া’। যে ব্যারিস্টারের মাধ্যমে এটি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে তিনি এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। সঙ্গে অভিযোগ করেছেন তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে।
তবে টিউলিপের আইনজীবীরা বলছেন, হেবা সঠিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়েছে। টিউলিপের মতে, ফ্ল্যাটটি ‘পরিবারের সদস্যের সঙ্গে যৌথ মালিকানাধীন’, কারণ ফ্ল্যাটের সব ভাড়া তার বোনের কাছে গিয়েছিল।
টিউলিপের আইনজীবীরা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগগুলোকে ‘মিথ্যা ও বিরক্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন।
লন্ডনে বিতর্কিত এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৭ লাখ পাউন্ড সমমূল্যের একটি ফ্ল্যাট উপহার নেওয়ার অভিযোগ উঠলে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট উল প স দ দ ক ট উল প র কর ছ ন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ টিউলিপের বিরুদ্ধে
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশে একটি ফ্ল্যাটের মালিকানার হস্তান্তর নিয়ে এই প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম ডেইলি মেইল। ঢাকার গুলশানের এই ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনিয়মের কথা অস্বীকার করেছেন টিউলিপ। ডেইলি মেইলকে এই লেবার এমপি বলেন, ২০০২ সালে বাবা-মায়ের কাছ থেকে উপহার হিসেবে ফ্ল্যাটটি পেয়েছিলেন। ২০১৫ সালের মে মাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীকে তা হস্তান্তর করেন।
২০১৫ সালের জুনে ওয়েস্টমিনস্টারে এমপিদের জমা দেওয়া সম্পদের হিসাবে বলা হয়েছিল, পরিবারের একজনের সঙ্গে যৌথভাবে ওই সম্পত্তির মালিকানায় আছেন টিউলিপ। পরের মাসে ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তর করার কথা বলা হয়।
গত সপ্তাহে ঢাকার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনুসন্ধান চালিয়ে ভিন্ন তথ্য পায় ডেইলি মেইল। সেখানে সংরক্ষিত নথি বলছে, টিউলিপ এখনো ওই ফ্ল্যাটের মালিক, যা দুদকের অভিযোগের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
গত ১০ মার্চ দুদক জানায়, টিউলিপ তার বোনকে গুলশানের ওই ফ্ল্যাট হস্তান্তরে যে নোটারি ব্যবহার করেছেন, তদন্তে তা ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে।
টিউলিপ ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা রূপন্তীকে দান করেন। দলিলটি হয় ২০১৫ সালের ৯ জুন। দলিল অনুযায়ী, ২৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকায় কেনা ফ্ল্যাট আজমিনাকে দেওয়া হয়। দলিলে ফ্ল্যাটের সম্পূর্ণ মালিকানা, স্বত্ব, অধিকার এবং একটি পার্কিং স্পেস হস্তান্তরের কথা বলা হয়।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ফ্ল্যাট বা সম্পত্তির হস্তান্তর করতে হয় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে।
দুদকের দাবি, হেবা দলিলটি ভুয়া ছিল। কারণ সংশ্লিষ্ট আইনজীবী এর সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি উল্টো অভিযোগ করেন, তার সই জাল করা হয়েছে।
ডেইলি মেইলের প্রশ্নে টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবী বলেছেন, যথাযথভাবে হেবা সম্পন্ন করা হয়েছিল। পরিবারের সদস্যের সঙ্গে যৌথভাবে ফ্ল্যাটের মালিকানায় থাকার কথা জানিয়েছিলেন টিউলিপ। ফ্ল্যাটের ভাড়া তার বোন পেতেন।
টিউলিপের প্রতিনিধি দুদকের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক’ বলে দাবি করেছেন।
তার আইনজীবী পল থুয়েট বলেছেন, ‘টিউলিপ পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করেছেন—এমন দাবি অসত্য ও অযৌক্তিক।’
আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ এক ডেভেলপারের কাছ থেকে লন্ডনে ৭ লাখ পাউন্ড দামের একটি ফ্ল্যাট ‘উপহার’ পাওয়ার খবর নিয়ে সমালোচনার মধ্যে গত জানুয়ারিতে সিটি মিনিস্টারের পদ ছাড়েন টিউলিপ। গত আগস্টে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তার ভাগ্নির এই ফ্ল্যাট নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম সরব হয়।