ওড়িশায় দুর্ঘটনার কবলে বাংলাদেশি পর্যটকবাহী বাস, নিহত ১ আহত ১৫
Published: 6th, April 2025 GMT
ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ভুবনেশ্বরে একটি বাস ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে একজন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার শিকার ওই বাসে বেশিরভাগই বাংলাদেশি তীর্থযাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে। খবর ওড়িশা টিভি, ওমকম নিউজ ও সম্বাদ ইংলিশের।
খবরে বলা হয়েছে, আজ রোববার সকালে ভুবনেশ্বরের উত্তরচকে পর্যটকবাহী বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়।
ওড়িশার সংবাদমাধ্যম ওমকম নিউজ বলছে, নিহত ওই বাসযাত্রী একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তবে প্রতিবেদনে ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
ওড়িশা টিভি জানিয়েছে, নিহতের পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে দুই সংবাদমাধ্যমেই বলা হয়েছে, ওই বাসে ৭০ জনের মত আরোহী ছিলেন, তাদের বেশিরভাগই ছিলেন বাংলাদেশি তীর্থযাত্রী। পশ্চিমবঙ্গের ইসকন মায়াপুরের মাধ্যমে তারা ভারত সফর করছেন। কাশির বিশ্বনাথ মন্দির দেখে তারা ওই বাসে করে পুরিতে যাচ্ছিলেন।
ওড়িশা টিভির খবরে বলা হচ্ছে, উত্তরচকের কাছে গিয়ে বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এরপর বাসটি উল্টে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব স দ র ঘটন দ র ঘটন র ওই ব স
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমজীবী নারী সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও অবহেলিত
নারী হওয়ার কারণে মজুরি বৈষম্য, কাজের নিরাপত্তাহীনতার সমস্যাসহ বিশেষভাবে যৌন হয়রানির বিষয়টি যুক্ত হয়।
বাংলাদেশে শ্রমজীবী নারীর অনুপাত দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর দুটি বড় কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে– একজন ব্যক্তির আয় দিয়ে একটি পরিবার চলবে– এমন অবস্থা বর্তমান সময়ে নেই। এর ফলে ওই পরিবারের নারী সদস্যকে আয়-রোজগারের পথ খুঁজতে হচ্ছে। খুঁজতে গিয়ে এ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যারা শ্রমজীবী, তাদের যে কাজের সুযোগ থাকে, পোশাক খাত এর মধ্যে অন্যতম।
গার্মেন্টস প্রাতিষ্ঠানিক খাত। এ ছাড়া অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবেও অনেক ধরনের কাজ রয়েছে। এর মধ্যে মুদি দোকান, মাটি কাটা, গৃহকর্মী থেকে শুরু করে নানা ধরনের কাজ হতে পারে। কোনোটাই স্থায়ী নয়। এগুলোর কোনো নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ও নিরাপত্তা নেই। কাজ করতে হয় খুব নাজুক ও অনিশ্চিত অবস্থায়। তবুও জীবিকার তাগিদে এসব কাজ নারীকে করতে হয়। দ্বিতীয় কারণ হলো, অনেক পরিবার ভেঙে যায়। স্বামী কোনো দায়িত্ব গ্রহণ করে না। বিয়ে করে ছেড়ে দেয়; চলে যায় কিংবা স্বামী থাকা সত্ত্বেও কোনো দায়িত্ব নেয় না সংসার ও সন্তানের। তখন নারীকে বাধ্য হয়ে কাজে নামতে হয়। আবার আত্মসম্মানবোধ ও পরিচয়ের তাগিদ থেকেও একজন নারী নিজের একটি কর্মজীবন তৈরি করেন।
এসব কারণে আমাদের দেশে নারী শ্রমিকের সংখ্যা অনেক বেশি; যা সরকারি হিসাবে যথাযথভাবে উঠে আসে না। শ্রমিক হিসেবে তাঁর স্বীকৃতিও এখন পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে আসে না। না আসার ফলে বাংলাদেশে তাদের আয়-রোজগারের নির্দিষ্টতার কোনো বিধিমালা নেই।
ঈদের আগে গার্মেন্ট শ্রমিকরা তাদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের দাবিতে আন্দোলন করেছে। গত কয়েক মাসে বারকয়েক দেখা গেছে, তারা বকেয়া পরিশোধের জন্য রাস্তায় এসেছে। এটি হলো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সব থেকে সংগঠিত শ্রমিকদের অবস্থান। সেখানে নারীরা তাদের মজুরি বাকি, অসম্মানজনক অবস্থাসহ সব দাবি জানাচ্ছে।
সরকারে পরিবর্তন এলেও, এ ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা ও দৃষ্টিভঙ্গির কোনো পরিবর্তন আসেনি। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় সমস্যা। অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার জায়গা আরও বেশি। যেদিন কাজ করবেন, সেদিন তাঁর আয় হবে। যদি তাঁর কোনো অসুখ-বিসুখ হয়, সন্তানের দায়িত্ব নেওয়া ও তাঁর কোনো সমস্যা হলে সেদিন কাজে যেতে পারেন না নারী। কাজ না করলে তাঁর সেদিনের আয়ও নেই। আয় না হলে তাঁর প্রাত্যহিক ও আনুষঙ্গিক ব্যয়ের কোনো পথ থাকে না। ফলে শ্রমজীবী নারীরা আমাদের দেশে সংখ্যার দিক থেকে গরিষ্ঠ হলেও তারা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। তাদের কোনো মতামত ও কর্মকাণ্ডের ফলে কোনো আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না। সরকার পরিবর্তনের পরও তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। নারীরা আরও বেশি বঞ্চিত ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নারী হওয়ার কারণে মজুরি বৈষম্য, কাজের নিরাপত্তাহীনতার সমস্যাসহ বিশেষভাবে যৌন হয়রানির বিষয়টি যুক্ত হয়। গত বছরখানেকের পত্রিকা ঘেঁটে দেখা যাবে, শ্রমজীবী নারী ধর্ষিত, খুন ও নিগৃহীত হওয়ার খবর ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সরকারের কাছেও এর সঠিক কোনো হিসাব নাই। যেসব শ্রমজীবী নারী ধর্ষণ ও খুনের শিকার হয়েছেন, তাদের বেশির ভাগ কর্মক্ষেত্রে যাওয়া-আসার পথে কিংবা নিজ বাড়িতে।
এ পরিস্থিতিগুলো মোকাবিলা করে শ্রমজীবী নারী টিকে আছেন। তাদের টিকে থাকার মধ্য দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের অস্তিত্ব টিকে থাকা নির্ভর করে। এটি নারী জীবনের একটা যুদ্ধ; যার মধ্য দিয়ে নারী তাঁর জীবন অতিবাহিত করেন।